আজ ৩০ মে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৩৪তম মৃত্যুবার্ষিকী। ১৯৮১ সালের এই দিনে ভোরে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে বিপথগামী কিছু সেনা সদস্যের হাতে নিহত হন তিনি। এর পর থেকে বিএনপি ও এর অঙ্গ সংগঠনগুলো দিনটিকে ‘জিয়াউর রহমানের শাহাদাত’ দিবস হিসেবে পালন করে আসছে। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল মাত্র ৪৫ বছর। দিবসটি পালন উপলক্ষে এবারও নানা কর্মসূচি হাতে নিয়েছে বিএনপি।
মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের পক্ষ থেকে এ বছর পনের দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে। বুধবার মহিলা দলের আলোচনা সভার মধ্য দিয়ে কর্মসূচি শুরু হয়েছে। বৃহস্পতিবার বিএনপি আয়োজিত আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। দিবসটি উপলক্ষে বিভিন্ন সংবাদপত্রে বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশ করা হয়েছে। দলের পক্ষ থেকে বাণীও দেওয়া হয়েছে। আজ দুপুর থেকে আগামী তিন দিন রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে দুস্থদের মধ্যে খাবার বিতরণ করবেন দলটির চেয়ারপারসন। এ কর্মসূচি নির্বিঘ্নে করতে দলের নেতা-কর্মীদের বিভিন্ন নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। গতকাল রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের শীর্ষ নেতাদের উপস্থিতিতে এক যৌথসভায় এসব নির্দেশনা দেওয়া হয়। আজ সকাল ৬টায় নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয়সহ সারা দেশে দলীয় কার্যালয়ে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা হবে। নেতা-কর্মীরা কালো ব্যাজ ধারণ করবেন। কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে নিয়ে বেলা ১১টায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া শেরেবাংলানগরে জিয়ার মাজারে ফাতিহা পাঠ করবেন। মাজার প্রাঙ্গণে ওলামা দলের উদ্যোগে দোয়া মাহফিলে অংশ নেবেন তিনি। তিনি সেখানে ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব) আয়োজিত স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচির উদ্বোধন করবেন। এ ছাড়া সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত ড্যাবের উদ্যোগে নয়াপল্টন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে মেডিকেল ক্যাম্প ও বিনামূল্যে চিকিৎসাসেবা দেওয়া হবে। সকালে জিয়াউর রহমানের মাজারে শ্রদ্ধা শেষে রাজধানীতে তিন দিনব্যাপী দুস্থদের মধ্যে খাবার বিতরণ কর্মসূচি উদ্বোধন করবেন খালেদা জিয়া। মোহাম্মদপুর টাউন হল থেকে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে এ কর্মসূচি শুরু করার কথা। ১৯৭১ সালে মহান স্বাধীনতাযুদ্ধের অন্যতম সেক্টর কমান্ডার হিসেবে জিয়াউর রহমানের ভূমিকা অবিস্মরণীয় হয়ে আছে। ‘জেড ফোর্স’-এর অধিনায়ক হিসেবে রণাঙ্গনে যুদ্ধ করেন তিনি। ’৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সেনাবাহিনীর একাংশের অভ্যুত্থানে নির্মমভাবে নিহত হওয়ার পর জিয়াউর রহমান সেনাপ্রধান নিযুক্ত হন। একই বছর ৭ নভেম্বর ‘সিপাহি-জনতার বিপ্লব’-এর মধ্য দিয়ে তিনি রাষ্ট্রক্ষমতায় আসীন হন। ’৭৮ সালের ১ সেপ্টেম্বর প্রতিষ্ঠা করেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)।
এদিকে জিয়াউর রহমানের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে দলের মুখপাত্র ড. আসাদুজ্জামান রিপন এক বাণীতে জিয়াউর রহমানকে মহান স্বাধীনতার ঘোষক, বহুদলীয় গণতন্ত্রের পুনঃপ্রবর্তনকারী দাবি করে তার স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা ও বিদেহী আত্মার মাগফিরাত করেন। তিনি বলেন, ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকেই দেশি-বিদেশি চক্র জিয়াউর রহমানের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করতে থাকে। এ চক্রান্তকারীরাই ’৮১ সালের ৩০ মে তাকে হত্যা করে। এই মর্মান্তিক ঘটনার মধ্য দিয়ে একজন মহান দেশপ্রেমিককে হারায় দেশবাসী।