রাজধানীর হাজারীবাগ থানা ছাত্রলীগ সভাপতি আরজু হত্যার অভিযোগে র্যাব-২-এর সিওসহ চারজনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা হয়েছে। ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে বাদী হয়ে গতকাল মামলাটি করেন আরজুর ভাই মাসুদ রানা। মামলার আসামিরা হলেন র্যাব-২-এর সিও কর্নেল মাসুদ রানা, ডিএডি শাহিদুর রহমান, ইন্সপেক্টর ওয়াহিদ ও সোর্স রতন। এ ছাড়া অজ্ঞাতনামা আরও কয়েকজনকে মামলায় আসামি করা হয়েছে। এ বিষয়ে বাদীর আইনজীবী আজিম উদ্দিন শিমুল সাংবাদিকদের জানান, ঢাকা মহানগর হাকিম শাহরিয়ার মাহমুদ আদনান বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করেছেন। তবে মামলার নথিপত্র পর্যালোচনা করে আগামী ২৫ আগস্ট আদেশের জন্য দিন ধার্য করেছেন আদালত। মামলায় বাদী অভিযোগ করেন, আরজুর আচার-ব্যবহার, চালচলন, রাজনৈতিক কার্যক্রম ও এলাকায় তার সৎ গুণাবলির কারণে কতিপয় দুষ্কৃতকারী ও ষড়যন্ত্রকারী ঈর্ষান্বিত হয়ে সোর্স রতনের সহযোগিতায় আসামিরা তার ভাইকে হাজারীবাগ পার্কের সামনের রাস্তার ওপর থেকে জোরপূর্বক অপহরণ করে নিয়ে যায়। এরপর বাদী হাজারীবাগ থানায় গিয়ে খোঁজ নেওয়ার চেষ্টা করেন। তবে কোনো সন্ধান বের করতে পারেননি। দীর্ঘ সময় পর থানা পুলিশ জানায়, আরজু র্যাব-২ হেফাজতে আছে। পরদিন বাদী লোকমুখে শুনতে পান, হাজারীবাগ থানাধীন শিকদার মেডিকেল কলেজের পেছনে তার ভাইয়ের গুলিবিদ্ধ লাশ পড়ে আছে। বাদী ওই স্থানে গিয়ে জানতে পারেন, লাশ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। পরে বাদী ঢাকা মেডিকেলে গিয়ে তার ভাইকে শনাক্ত করেন। মামলায় আরও উল্লেখ করা হয়েছে, পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড ঘটিয়ে র্যাব কথিত ক্রসফায়ারে আরজুর নিহত হওয়ার ঘটনা সাজিয়েছে। এ জন্য তিনি হাজারীবাগ থানায় মামলা করতে গেলে থানা কর্তৃপক্ষ মামলা নেয়নি। তাই আদালতে মামলা করেছেন। মামলায় বাদী অভিযোগ করেন, তার ভাইয়ের বিরুদ্ধে কোনো মামলা ছিল না। তিনি তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী নন। তার বিরুদ্ধে কিশোর রাজা মিয়া হত্যায় জড়িত থাকার অভিযোগ সত্য নয়। তাই বাদী র্যাবের হাতে তার ভাইয়ের হত্যাকাণ্ডকে তথাকথিত বন্দুকযুদ্ধ হিসেবে উল্লেখ করে এ ঘটনাকে বেআইনি, মানবতাবিরোধী ও পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড বলে দাবি করেন। বাদী তার অভিযোগটি সিআইডি পুলিশকে দিয়ে তদন্ত করিয়ে আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির আবেদন করেন। এর আগে মোবাইল ও ল্যাপটপ চুরির অভিযোগ এনে সোমবার হাজারীবাগের গণকটুলীর বাসিন্দা রাজাকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। রাজার পরিবারের অভিযোগ, মোবাইল ও ল্যাপটপ চুরির অভিযোগে রাজাকে পিটিয়ে মুমূর্ষু অবস্থায় বাসার সামনে ফেলে যান আরজু। পরে হাসপাতালে নেওয়ার পর বিকালে তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় প্রধান আসামি মো. আরজুকে আটক করে ১৭ আগস্ট রাতে র্যাব-২-এর একটি টহল দল অভিযানে নামে। ওই দিন দিবাগত রাত সাড়ে ৩টার দিকে কথিত ‘বন্দুকযুদ্ধে’ আরজু নিহত হন।