রাজধানীর ক‚টনৈতিপাড়া গুলশান ও বনানীতে কঠোর নিরাপত্তা বলয় গড়ে তোলা হয়েছে। মোড়ে মোড়ে ব্যারিকেড দিয়ে তল্লাশি চালানো হচ্ছে। গোয়েন্দা কর্মকর্তারা বলছেন, নাগরিকদের অসুবিধা হলেও নিরাপত্তার স্বার্থে তাদের কিছুটা ত্যাগ স্বীকার করতেই হবে। কারণ এর সঙ্গে দেশের ভাবমূর্তি জড়িত।
গুলশানে ইতালীয় নাগরিক খুনের পর থেকেই ক‚টনৈতিকপাড়ার নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। মূলত ওই ঘটনার পর থেকেই নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করা হয়। জানা গেছে, দেশের সার্বিক নিরাপত্তা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একাধিক সংস্থা ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে। এরই অংশ হিসেবে রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশে বিদেশি নাগরিকদের নিরাপত্তায় বিশেষ ব্যবস্থা নিয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। সাধারণ মানুষের মন থেকে আতঙ্ক দূর করতে পুলিশের পক্ষ থেকে বিভিন্ন কার্যক্রম চলছে। গুলশানের ক‚টনৈতিকপাড়াসহ উত্তরায় মাঝেমধ্যেই মহড়া দিচ্ছে পুলিশের স্পেশাল ওয়েপন অ্যান্ড ট্যাক্টিস-সোয়াত টিম। সার্বক্ষণিকভাবে প্রস্তুত রাখা হয়েছে সোয়াতকে। নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা নিশ্চিতে কাজ করছে থানা-পুলিশ, এপিবিএন, এসপিবিএনের ৬৪টি পেট্রল। এ ছাড়া ৪৬টি দূতাবাসের সিসিটিভি পুলিশের সার্ভারের সঙ্গে সংযুক্ত করা হয়েছে। পুলিশের সার্ভারে নেই এমন বিভিন্ন ভবনের ধারণকৃত সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে নিয়মিতভাবে বিশ্লেষণ করা হচ্ছে। গতকাল গুলশান, বনানী ও বারিধারায় ঘুরে দেখা গেছে, হাতিরঝিল, গুলশান-১, মহাখালী সড়ক, বনানীর কামাল আতাতুর্ক এভিনিউ ও গুলশান-বাড্ডা লিঙ্ক রোডে চেকপোস্টগুলোয় মেটাল ডিটেক্টর দিয়ে তল্লাশি করছে পুলিশ। রাস্তার মোড়ে মোড়ে দেখা গেছে পুলিশের পাহারা। সন্দেহভাজন মোটরসাইকেল, সিএনজি অটোরিকশা, প্রাইভেট কার তল্লাশি করা হচ্ছে। গুলশানের ক‚টনৈতিকপাড়ার আশপাশে র্যাব-পুলিশসহ বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের উপস্থিতি রীতিমতো চোখে পড়ার মতো। পোশাকে এবং সাদা পোশাকে সার্বক্ষণিকভাবে টহল দিচ্ছেন আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যরা। ডিএমপি সদর দফতর সূত্রে জানা গেছে, ক‚টনৈতিকপাড়ায় আগের নিরাপত্তাব্যবস্থার বাইরে বর্তমানে পোশাকধারী ১৫টি চেকপোস্ট, ৯টি ফুট পেট্রল, ১০টি মোবাইল পেট্রল, ১৬ মোটরবাইক পেট্রল, ৮টি পিকেট পেট্রল, ৪টি স্কুল প্রটেকশন পেট্রল নিরাপত্তা নিশ্চিতের জন্য সার্বক্ষণিকভাবে কাজ করছে। এর বাইরে কাজ করছে আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন-এপিবিএনের ১৩টি মোটরবাইক পেট্রল ও স্পেশাল সিকিউরিটি ব্যাটালিয়নের (এসপিবিএনের) পেট্রল। এ ছাড়াও ক‚টনৈতিকপাড়া ও ক‚টনীতিকদের নিরাপত্তায় চেন্সারি পুলিশের ৭৫০ জনবল ২৪ ঘণ্টা কাজ করছেন। বিদেশিরা অবস্থান করেন এমন প্রতিটি ফাইভ স্টার হোটেলসহ উন্নতমানের আবাসিক হোটেলগুলোর চারদিকে মোবাইল পেট্রল রাখা হয়েছে। প্রতিটি চেকপোস্টে একজন কর্মকর্তার তত্ত্বাবধানে পাঁচজন করে পুলিশ সদস্য দায়িত্ব পালন করছেন।