সোমবার, ১৯ অক্টোবর, ২০১৫ ০০:০০ টা

ফের খাবার অনুপযোগী গম আমদানি

আহসানুল করিম, বাগেরহাট

ফের খাবার অনুপযোগী গম আমদানি

খাদ্য বিভাগে খাবার অনুপযোগী ও নিম্নমানের গম আমদানি অব্যাহত রয়েছে। এবার মংলা বন্দরে আসা খাবার অনুপযোগী ও নিম্নমানের ২১ হাজার টন গম গ্রহণ না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে আমদানি করা গম খালাস তদারকি কমিটি। ফ্রান্স থেকে নিম্নমানের গম নিয়ে আসা সাইপ্রাসের পতাকাবাহী এমভি পিনটেল নামে এক সপ্তাহ ধরে জাহাজ মংলা বন্দরে হারবাড়িয়ায় অবস্থান করছে। জাহাজে থাকা এই গমের মূল্য প্রায় ৪৪ কোটি টাকা। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন আমদানি করা গম খালাস তদারকি কমিটির আহ্বায়ক খুলনার আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক কাজী নূরুল ইসলাম। খাদ্য বিভাগ সূত্র জানায়, ফ্রান্স থেকে আমদানি করা গম নিয়ে সাইপ্রাসের পতাকাবাহী এমভি পিনটেল জাহাজটি  গত ১২ অক্টোবর দুপুরে মংলা বন্দরে আসে। ওই গমের মান পরীক্ষার জন্য ছয় সদস্যের কমিটি ১৩ অক্টোবর জাহাজে গিয়ে গম সরেজমিন পরীক্ষা ও নমুনা সংগ্রহ করে। পরীক্ষার পর নিম্নমান এবং খাবার অনুপযোগী থাকায় ওই গম গ্রহণে অস্বীকৃতি জানায় খাদ্য বিভাগের তদারকি কমিটি। খাবার অনুপযোগী ও নিম্নমানের গমের বিষয়টি জানিয়ে দেওয়া হয় খাদ্য মন্ত্রণালয়সহ আমদানিকারক ঠিকাদারকে। খাদ্য মন্ত্রণালয়ের জন্য এই গম আমদানি করেছে ঢাকার ইমপেক্স কনসালটেন্ট লিমিটেড নামের একটি প্রতিষ্ঠান। এমভি পিনটেল জাহাজের স্থানীয় এজেন্ট লিডমন্ড শিপিংয়ের ম্যানেজার সৈয়দ মুরতজা আলী বাপ্পি জানান, জাহাজটিতে  মোট ৫২ হাজার ৫০০ মেট্রিক টন গম আমদানি করা হয়েছিল। চট্টগ্রাম বন্দরে ৩১ হাজার ৫০০ মেট্রিক টন গম খালাসের পর বাকি ২১ হাজার মেট্রিক টন গম নিয়ে জাহাজটি ১২ অক্টোবর মংলা আসে। তিনি বলেন, এই গমে একটু ডাস্ট বেশি, তবে খাবার অনুপযোগী নয়। আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক কাজী নূরুল ইসলামের নেতৃত্বে ছয় সদস্যের মাননিয়ন্ত্রক কমিটি ১৩ অক্টোবর জাহাজটি পরিদর্শন করে গম সংগ্রহ করে। গম নিম্নমানের বলে রিপোর্ট আসায় গম খালাস করতে বিলম্ব হচ্ছে বলে তারা লিখিতভাবে খাদ্য অধিদফতরকে চিঠি দিয়ে জানিয়েছে। জাহাজ থেকে গম খালাসের জন্য নিয়োগ করা হয়েছে খালিদ ব্রাদার্সকে। প্রতিষ্ঠানটির স্বত্বাধিকারী শেখ জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, তারা জাহাজ থেকে গম খালাসের নিয়োগ পেলেও কাজ শুরু করার কোনো নির্দেশনা পাননি। গম খালাসে খাদ্য বিভাগ সিদ্ধান্ত নিলেই গম খালাস কাজ শুরু হবে বলে তিনি জানান। মংলা বন্দর আমদানি গম খালাস তদারকি কমিটির অন্যতম সদস্য খাদ্য চলাচল ও নিয়ন্ত্রক নকীব সাদ সাইফুল ইসলাম গম ফের পরীক্ষার জন্য নমুনা ঢাকায় পাঠানো হবে বলে জানিয়েছেন। তিনি জানান, খাদ্য বিভাগের মহাপরিচালক এই গম সম্পর্কে ব্রিফিং করে বিস্তারিত জানাবেন। প্রাথমিকভাবে এই গমের মান নিয়ে প্রশ্ন ওঠায় খালাস বন্ধ রাখা হয়েছে। তিনি জানান, লিডমন্ড শিপিং এজেন্টের পরিচালকরাও আমদানিকারকদের পার্টনার। গম খালাসের আগে সেটি পরীক্ষার জন্য একজন বিদেশি বিশেষজ্ঞ চট্টগ্রামে অবস্থান করতেন। তবে দুই বিদেশি হত্যাকাণ্ডের পর তিনিও তার দেশে চলে গেছেন। এই কারণে চট্টগ্রামে এই গম পরীক্ষার নামে কী হয়েছে তা বলা কঠিন। এ গম পোকায় বেশির ভাগ অংশ খেয়ে ফেলেছে। তাদের দেখা  চোখে আমদানি করা গম ভালো না বলে এই কর্মকর্তা দাবি করেন। সে কারণে গম গ্রহণ না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে গম খালাস তদারকি কমিটি।

 

 

সর্বশেষ খবর