সোমবার, ১৯ অক্টোবর, ২০১৫ ০০:০০ টা

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক স্বস্তিদায়ক নয়

নিজস্ব প্রতিবেদক

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক স্বস্তিদায়ক নয়

সম্প্রতি দুই বিদেশি নাগরিক হত্যাকাণ্ডকে কেন্দ্র করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উদ্বেগের বিষয়ে অর্থমন্ত্রী বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রে প্রতিদিন কতজন বিদেশি-বাংলাদেশি মারা যায় তার হিসাব কে রাখে? গত ছয়-সাত বছর ধরে বাংলাদেশ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের পলিসি খুব একটা সুবিধাজনক পর্যায়ে ছিল না। এখনো তাদের এই নীতির পরিবর্তন হয়নি। ফলে দেশটির সঙ্গে আমাদের সম্পর্কটাও স্বস্তিদায়ক নয়। বাংলাদেশ ও রাশিয়া এই দুটি দেশের ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র একই পলিসি নিয়েছে তাই দুই বিদেশি নাগরিকের হত্যা নিয়ে খুব বেশি হৈচৈ করার কিছু নেই। জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশন ও বিশ্বব্যাংকের বার্ষিক সভায় যোগ দিয়ে প্রায় এক মাস যুক্তরাষ্ট্র ও পেরু সফর শেষে দেশে ফিরে গতকাল সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে অর্থমন্ত্রী এ মন্তব্য করেন। অর্থমন্ত্রী বলেন, মানুষ হত্যা, বিশেষ করে সিটিগুলোতে হত্যার রেকর্ড-হোল্ডার হলো যুক্তরাষ্ট্র। তাদের সব জায়গায় এমন ঘটনা ঘটছে। বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা অত্যন্ত চমৎকার। এখন দেশে কোনো হরতাল নেই। দেশের অর্থনীতির স্বার্থে জনগণ এখন এ ধরনের কর্মসূচি মেনে নেবে না। এটা আমাদের সবচেয়ে বড় অর্জন। দুষ্ট পলিটিক্স যারা করেন তাদের জন্য এটা বড় একটি সতর্ক বার্তা। তিনি বলেন, বিশ্বব্যাংক-আইএমএফ-এর বৈঠকে বিদ্যুৎ, অবকাঠামো ও কানেকটিভিটি খাতে আইডিএ ঋণ বাড়ানোর ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। এ ছাড়া বিশ্বব্যাংকের কাছে বাজেট সহায়তা বাবদ যে ৫০ কোটি ডলার চাওয়া হয়েছে সেটা একটা চলমান প্রক্রিয়া। স্বাধীন টাকা বন্ড আগামী ছয় মাসের মধ্যে ছাড়া হবে বলে জানিয়ে তিনি বলেন, পদ্মা সেতুতে এই অর্থ ব্যয় করা হবে।

প্রসঙ্গ জিডিপি প্রবৃদ্ধি : অর্থমন্ত্রী বলেন, আগামী অর্থবছরে ৬ দশমিক ৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করা সম্ভব হবে বলে আভাস দিয়েছে আইএমএফ। তবে আমাদের লক্ষ্য ৭ শতাংশ জিডিপি। অর্থমন্ত্রী বলেন, গত ছয়-সাত বছরে রাজনৈতিক অস্থিরতা ও কোন্দল সত্ত্বেও আমাদের জিডিপি প্রবৃদ্ধি বাধাগ্রস্ত হয়নি। আমরা তা ধরে রাখতে পেরেছি। এরমধ্য দিয়ে প্রমাণ হয়, বাংলাদেশ থেকে দুষ্ট রাজনীতি বিসর্জিত হয়েছে। কোনো ধরনের অস্থিরতা বা কোন্দল বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রাকে ব্যাহত করতে পারবে না। তিনি বলেন, জাতিসংঘে আমাদের প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য প্রশংসিত হয়েছে। আমরা বিশ্বব্যাংকের বার্ষিক সাধারণ সভায় বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অর্জনের বিস্তারিত তুলে ধরেছি, যা অন্যান্য দেশের কাছেও সমাদৃত হয়েছে। এ ছাড়া চলতি অর্থবছরে জলবায়ু পরিবর্তনজনিত হুমকি মোকাবিলায় বাজেটে ৭০০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে বলেও জাতিসংঘে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। এখন এমডিজি পূরণ করে এসটিজি অর্জনের জন্য পরামর্শ ও কর্মকৌশল নির্ধারণ করা হয়েছে। এ বিষয়ে ১৭টি পয়েন্ট জাতিসংঘে তুলে ধরা হয়। যার মধ্যে ১১টি জাতিসংঘে গৃহীত হয়েছে। এটি একটি বিশাল অর্জন।

প্রসঙ্গ পে-স্কেল : মন্ত্রিসভায় অনুমোদিত সরকারি চাকুরেদের নতুন পে-স্কেল সম্পর্কে তিনি বলেন, খুব শিগগিরই এ বিষয়ে গেজেট হবে। নভেম্বর থেকেই কর্মকর্তা-কর্মচারীরা নতুন পে-স্কেল অনুযায়ী বেতন পাবেন। বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের আন্দোলন প্রসঙ্গে অর্থমন্ত্রী বলেন, শিক্ষামন্ত্রী এ নিয়ে কথাবর্তা বলেছেন। শিক্ষকরা একটা বিশেষ অবস্থানে পৌঁছেছেন, যা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। তিনি বলেন, টাইম স্কেল ও সিলেকশন গ্রেড বাতিল করে সরকার বছরের একই দিন একই সঙ্গে সব সরকারি চাকুরের চক্রবৃদ্ধিহারে বেতন বাড়ানোর যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে তা অনেকেই বুঝতে পারছেন না। টাইমস্কেল ও সিলেকশন গ্রেড বাতিল করে যে ব্যবস্থা করা হয়েছে একটা নির্দিষ্ট স্তরে পৌঁছার পরে পরবর্তী স্কেলে ঢুকে যাবে। এটাই বাস্তবায়ন হবে। এ সময় অর্থমন্ত্রীর সফরসঙ্গী হিসেবে থাকা অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান, অর্থ বিভাগের সিনিয়র সচিব মাহবুব আহমেদ ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব মিজবাহ উদ্দিন আহমেদও সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।

 

 

 

সর্বশেষ খবর