শনিবার, ২৪ অক্টোবর, ২০১৫ ০০:০০ টা

খুনিরা পেশাদার গ্রেফতার ৩

আলী আজম

এএসআই ইব্রাহিম মোল্লার খুনিরা পেশাদার বলে পুলিশ নিশ্চিত হয়েছে। তাদের আস্তানায় অভিযান চালিয়ে পুলিশ বিপুল পরিমাণ গোলাবারুদ উদ্ধার করেছে। গত বৃহস্পতিবার ঘটনাস্থল থেকে গ্রেফতার হওয়া মাসুদের তথ্য মতে পুলিশ রাজধানীর কামরাঙ্গীরচর এলাকায় তাদের আস্তানায় হানা দেয়। এ সময় তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়। পুলিশ জানায়, ইব্রাহীম খুনের  ঘটনায় জড়িত পুরো চক্রকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। তবে গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত এ ব্যাপারে থানায় কোনো মামলা হয়নি। গতকাল ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের মর্গে ইব্রাহীম মোল্লার ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়। ফরেনসিক বিভাগের প্রভাষক ডা. প্রদীপ বিশ্বাস জানান, নিহতের বুকে একটি এবং পেটের ডান ও বাম পাশে তিনটি ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। অস্ত্রের আকৃতি বড় ছিল। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে তার মৃত্যু হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার রাত পৌনে ৯টার দিকে রাজধানীর গাবতলী পর্বত সিনেমা হলের সামনে দারুস সালাম থানার সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) ইব্রাহীম মোল্লা দুর্বৃত্তের ছুরিকাঘাতে নিহত হন। ঘটনার সময় ইব্রাহীম চেকপোস্টে দায়িত্ব পালন করছিলেন। ময়নাতদন্ত শেষে গতকাল এএসআই ইব্রাহীম মোল্লার মরদেহ নেওয়া হয় রাজারবাগ পুলিশ লাইন কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে। জুমার নামাজ শেষে তার জানাজা সম্পন্ন হয়। জানাজা শেষে পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) এ কে এম শহীদুল হক বলেন, এএসআই ইব্রাহীম মোল্লা হত্যাকাণ্ডে থানা পুলিশ ও গোয়েন্দা পুলিশ যৌথভাবে তদন্ত করছে। মূল অপরাধী পলাতক রয়েছে। তবে তার সহযোগী মাসুদ রানাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে বেশ কিছু তথ্য পাওয়া গেছে। মাসুদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে কামরাঙ্গীরচরে অভিযান চালিয়ে তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গোয়েন্দা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে বগুড়া থেকে আসা একটি বাস থেকে গাবতলীর পর্বত সিনেমা হলের সামনে নামে দুজন। এএসআই ইব্রাহীম তাদের দুজনকে থামতে বলেন। তিনি তাদের সঙ্গে থাকা ব্যাগ দেখতে চান। তল্লাশির কথা শুনেই মাসুদ রানা নামে একজন দৌড় দেন। এ সময় অন্য পুলিশ সদস্যরা তাকে ধরতে ধাওয়া করেন। এরই ফাঁকে অপরজনের ছুরিকাঘাতের শিকার হন এএসআই ইব্রাহীম। প্রত্যক্ষদর্শী এক পুলিশ কনস্টেবল যিনি টহল টিমের পিকআপ ভ্যানের চালকের আসনে বসা ছিলেন। তিনি দূর থেকে সবকিছু দেখছিলেন। নিজের নাম-পরিচয় গোপন রাখার শর্তে তিনি জানান, এএসআই ইব্রাহীম নিচু হয়ে ওই দুই দুর্বৃত্তের সঙ্গে থাকা ব্যাগের চেইন খোলার চেষ্টা করছিলেন। এ সময় একজনকে দৌড় দিতে দেখা যায়। অন্য পুলিশ সদস্যদের কয়েকজন তাকে ধরার জন্য পেছনে ধাওয়া করে। এরই মধ্যে অপর দুর্বৃত্ত ইব্রাহীমের পেটে ও বুকে এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়। এ সময় ইব্রাহীম নিজেও দৌড়ে রক্ষা পাওয়া চেষ্টা করেন। কিন্তু কিছু দূর না যেতেই তিনি মাটিতে পড়ে যান। পরে স্থানীয়দের সহযোগিতায় পুলিশ সদস্যরা তাকে সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে নিয়ে যান। দারুস সালাম থানার ওসি সেলিমুজ্জামান বলেন, এএসআই ইব্রাহীমকে গুরুতর অবস্থায় উদ্ধার করে সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে নেওয়ার পথে তিনি মারা যান। হাসপাতালে কর্তব্যরত চিকিৎসক নাজমা আকতার জানিয়েছেন, প্রফেশনাল কিলারের হাতেই তিনি খুন হয়েছেন।

সর্বশেষ খবর