সশস্ত্র অবস্থায় চেকপোস্টে তল্লাশি চালানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে পুলিশকে। রাজধানীর গাবতলীর চেকপোস্টে দুর্বৃত্তদের হামলায় একজন পুলিশ সদস্য খুন হওয়ার পর এমন নির্দেশনা জারি করা হয়। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, কোনোভাবেই একা তল্লাশি চালানো যাবে না। তল্লাশির সময় অবশ্যই কাউকে অস্ত্র তাক করে রাখতে হবে। এমন নির্দেশনার পর চেকপোস্টগুলোতে পুলিশের তল্লাশিতে পরিবর্তন এসেছে।
জানা গেছে, রাজধানীতে নিয়মিত চেকপোস্টের পাশাপাশি বিশেষ প্রয়োজনে অতিরিক্ত চেকপোস্ট বসানো হয়। পুলিশ সদস্যরা এসব চেকপোস্টে সন্দেহভাজনদের দেহ-ব্যাগে তল্লাশি চালায়। এমনই এক তল্লাশি চলাকালে গাবতলীতে দুর্বৃত্তদের ছুরিকাঘাতে নিহত হন দারুস সালাম থানার এএসআই ইব্রাহিম মোল্লা। এ ছাড়া গত দুই বছরে রাজধানীতেই এমন হামলার ঘটনা আরও বেশ কয়েকটি ঘটেছে। চেকপোস্টগুলোতে ঢিলেঢালাভাবে তল্লাশি চালানোর কারণেই এসব হামলার ঘটনা ঘটে বলে তদন্তে বেরিয়ে এসেছে। পুলিশের সূত্রগুলো জানায়, নির্ধারিত কিছু স্থানে নিয়মিত চেকপোস্ট বসে। এসব চেকপোস্টে ৩-৪ জন পুলিশ সদস্য থাকে। এদের অধিকাংশই নিয়মনীতি না মেনেই তল্লাশি চালায়। কখনো কখনো অস্ত্র হাতে না রেখেই তল্লাশি চলে। এতে করে পুলিশ নিজেই নিরাপত্তা ঝুঁকিতে পড়ে। এ ছাড়া প্রয়োজনীয় সরঞ্জামাদি ছাড়াই চলে আসছিল পুলিশের চেকপোস্ট। পুলিশের এক কর্মকর্তা জানান, পুলিশ সদস্যদের প্রশিক্ষণের সময়ই চেকপোস্ট পাহারার কৌশল শেখানো হয়। নিয়মানুযায়ী যখন কাউকে তল্লাশির জন্য থামানো হয়, তখন তল্লাশিকারীর সামনে-পেছনে অন্য সদস্যদের পাহারা থাকতে হয়। তাদের এই সতর্ক অবস্থান সম্ভাব্য অপরাধীদের ওপর মানসিক চাপ তৈরি করে। ওই কর্মকর্তা বলেন, যারা তল্লাশিতে নিয়োজিত থাকবেন, তাদের নিজেদের নিরাপত্তার বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ। কেউ যেন তাদের ওপর শক্তি প্রয়োগ করে চলে যেতে না পারে, সেই ব্যবস্থা থাকতে হবে। তিনি বলেন, বিচ্ছিন্নতাবাদ বা সন্ত্রাসবাদ উপদ্রুত এলাকায় তল্লাশির ক্ষেত্রে যিনি তল্লাশি করবেন, তাকে অন্যরা নিরাপত্তা (কাভার) দেবেন।ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) সূত্র জানায়, মহানগরের ৪৯টি থানায় প্রতিদিন গড়ে প্রায় ২০০ চেকপোস্ট বসানো হয়। বিশেষ রাজনৈতিক পরিস্থিতি বা বাড়তি নিরাপত্তার প্রস্তুতিতে এ সংখ্যা আরও বাড়ানো হয়। গুলশান-বনানী ও বারিধারার কূটনৈতিক এলাকায় কিছু স্থায়ী চেকপোস্ট রয়েছে। বাকি ক্ষেত্রে রাস্তার ওপর প্লাস্টিকের কোণ, সাইনবোর্ড বা ব্যারিকেড বসিয়েই তল্লাশি কার্যক্রম চালানো হয়। বিশেষ কোনো উপকরণ থাকে না। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে হাত তুলে সংকেত দিয়ে যানবাহন থামানো হয়। এক সময় ‘ই-চেকপোস্ট’ নামে চেকপোস্টে ব্যবহারের জন্য কিছু যন্ত্রপাতি দেওয়া হয়েছিল। খুব দ্রুতই সেগুলো নষ্ট হয়ে গেছে বলে পুলিশ সূত্র জানিয়েছে।