শিরোনাম
সোমবার, ২ নভেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা

বাবার লাশ রেখেই পরীক্ষা কেন্দ্রে রিদাদ

নিজস্ব প্রতিবেদক

বাবার লাশ রেখেই পরীক্ষা কেন্দ্রে রিদাদ

প্রিয় বাবার হাত ধরে তার দোয়া সঙ্গে নিয়েই পরীক্ষার হলে যাওয়ার কথা ছিল ছোট্ট রিদাদের। কিন্তু সেই সুযোগ আর হয়নি। বাবার নিথর দেহকে হাসপাতালের মর্গে রেখেই গতকাল সকালে পরীক্ষার হলে ছুটে যেতে হয়েছে রিদাদকে।

জাগৃতি প্রকাশনীর প্রকাশক ফয়সাল আরেফিন দীপনের বড় ছেলে রিদাদ। গতকাল থেকে তার জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট পরীক্ষা (জেএসসি) শুরু হয়েছে। তার ঠিক একদিন আগেই শনিবার বিকালে রাজধানীর আজিজ সুপার মার্কেটে নিজ প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানে  দুর্বৃত্তদের ধারালো অস্ত্রের উপর্যুপরি আঘাতে ক্ষতবিক্ষত হয়ে জীবনের ইতি টানতে হয়েছে দীপনকে। গতকাল সকালে দীপনের লাশ যখন ঢাকা মেডিকেলের মর্গে, সে সময় বাবার ভালোবাসা না নিয়েই রাজধানীর উদয়ন উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে পরীক্ষার হলে ছুটতে হয়েছে রিদাদকে। জীবনের এমন এক গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে বাবাকে হারিয়ে অনেকটা নিঃসঙ্গভাবেই পরীক্ষা দিতে যেতে হয়েছে রিদাদকে। জানা গেছে, গতকাল সকালে খালা সাজিয়া রহমানের সঙ্গে পরীক্ষা দিতে যায় রিদাদ। তার মন খুবই খারাপ। চোখ থেকে পানি ঝরছিল অবিরাম। তার খালা সাংবাদিকদের বলেন, রিদাদ ওর বাবার মৃত্যুর খবর শুনে কান্নায় ভেঙে পড়ে। পরীক্ষা দিতে চায়নি। সবাই ওকে বুঝিয়ে পরীক্ষা দিতে পাঠিয়েছে। পরীক্ষার হল থেকে বের হয়ে সোজা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে বাবার জানাজায় অংশ নিতে ছুটে যায় রিদাদ। এ সময় উপস্থিত সবার উদ্দেশ্যে রিদাদ বলে, সবাই আমার বাবার জন্য দোয়া করবেন। আমার বাবা জান্নাতবাসী হবেন। পারিবারিক সূত্র জানিয়েছে, নিয়ম রক্ষার জন্যই পরীক্ষার হলে গেছে রিদাদ। তার জীবনের সবচেয়ে ভয়াবহতম দিন এটি। দীপনকে হারিয়ে যখন গোটা পরিবার শোকে স্তব্ধ, ঠিক এ পরিস্থিতিতে বাবার লাশ রেখে পরীক্ষা কেন্দ্রে যাওয়া কতটা কঠিন সেটা রিদাদ ছাড়া আর কেউ বুঝবে না।

সর্বশেষ খবর