শনিবার, ৭ নভেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা

ষড়যন্ত্রে অগ্রগতি থামবে না

দেশে ফিরেছেন প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক

তিন দিনের সরকারি সফর শেষে গতকাল সন্ধ্যায় নেদারল্যান্ডস থেকে দেশে ফিরেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ৫টা ৪০ মিনিটে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের একটি নিয়মিত ফ্লাইটে শাহজালাল (রহ.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান তিনি। ডাচ প্রধানমন্ত্রী মার্ক রুটের আমন্ত্রণে গত মঙ্গলবার এ সফরে যান প্রধানমন্ত্রী।

সফরের শেষ দিনে দেশের পথে রওনা হওয়ার আগে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় প্রবাসী বাংলাদেশিরা প্রধানমন্ত্রীকে সংবর্ধনা দেন। ওই অনুষ্ঠানে শেখ হাসিনা বলেন, কোনো ষড়যন্ত্র বা ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ড বাংলাদেশের উন্নয়নকে বাধাগ্রস্ত করতে পারবে না। কুরহাউস হোটেলে এ সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি ও সামাজিক উন্নয়ন লাভের কাক্সিক্ষত লক্ষ্য অর্জনের পথ থেকে বাংলাদেশকে বিচ্যুত করা যাবে না। শেখ হাসিনা বলেন, স্বাধীনতা লাভের পর থেকেই মুক্তিযুদ্ধবিরোধী শক্তি বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে চলেছে। এসব সত্ত্বেও বাংলাদেশের জনগণ যখনই সুযোগ পেয়েছে তারা সামনে এগিয়ে যাওয়ার এবং মাথা উঁচু করে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেছে। তিনি বলেন, সব ষড়যন্ত্র কাটিয়ে উঠে বাংলাদেশ ২০২১ সালের মধ্যে একটি মধ্যম আয়ের দেশ এবং ২০৪১ সালের মধ্যে একটি উন্নত দেশে পরিণত হবে। ২০০৭ সালের ১১ জানুয়ারির পর বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতির কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার লন্ডন থেকে তাকে দেশে ফিরে যেতে দিতে চায়নি। তখন প্রবাসী বাংলাদেশিরা তার সমর্থনে এগিয়ে এসেছিলেন এবং তারা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে তার দেশে ফেরার পথে সঙ্গী হয়েছিলেন। বাংলাদেশের উন্নয়নে প্রবাসীদের ভূমিকার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, তারা দেশের সব রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক সাফল্য অর্জনে অবদান রেখেছেন। প্রবাসীরা বর্তমান অর্থনৈতিক উন্নয়নেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছেন। অনুষ্ঠানে পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নজরুল ইসলাম বীরপ্রতীক, অল ইউরোপিয়ান আওয়ামী লীগের সভাপতি অনীল দাশগুপ্ত, যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগ সভাপতি সুলতান শরীফ এবং লেদারল্যান্ডস আওয়ামী লীগ সভাপতি মাহিদ ফারুক প্রমুখ বক্তৃতা করেন। এর আগে বৃহস্পতিবার সকালে ডাচ ব্যবসায়ী নেতাদের নিয়ে এক সেমিনারে বাংলাদেশে বিনিয়োগ ও বাণিজ্যের সম্ভাবনাগুলো তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। নেদারল্যান্ডস সফরে শেখ হাসিনা ডাচ প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেন। এ সময় বাংলাদেশ ও নেদারল্যান্ডস শিক্ষা, কূটনৈতিক, দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধির লক্ষ্যে চারটি চুক্তি স্বাক্ষর করে। প্রধানমন্ত্রী ডাচ মন্ত্রীদের সঙ্গে বাংলাদেশ ডেল্টা প্ল্যান-২১০০ নিয়ে আলোচনা করেন। বাংলাদেশে জনগণের জন্য ব-দ্বীপ এলাকা নিরাপদ ও উৎপাদনশীল করার লক্ষ্যে ‘বাংলাদেশ ডেল্টা প্ল্যান-২১০০’ বাস্তবায়নের জন্য আরও ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করতে সম্মত হয় নেদারল্যান্ডস সরকার। শেখ হাসিনা নেদারল্যান্ডসের রানী ম্যাক্সিমার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। রানী অর্থনীতির ক্ষেত্রে বাংলাদেশের বিস্ময়কর সাফল্যের ভূয়সী প্রশংসা করেন। বুধবার প্রধানমন্ত্রী নেদারল্যান্ডসের ব-দ্বীপ অঞ্চল ও পোতাশ্রয়ও পরিদর্শন করেন। দেশে ফেরার পথে ইতিহাদ এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইটে আবুধাবিতে পৌঁছে পাঁচ ঘণ্টা যাত্রাবিরতি করেন প্রধানমন্ত্রী। পরে বাংলাদেশ বিমানের একটি ফ্লাইটে তিনি দেশে পৌঁছান।

সর্বশেষ খবর