রবিবার, ৮ নভেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা

মুশফিক-সাকিবেই জয়

মেজবাহ্-উল-হক

মুশফিক-সাকিবেই জয়

জিম্বাবুয়েকে বাস্তবতা বুঝিয়ে দিল বাংলাদেশ। প্রস্তুতি ম্যাচে জয়ের পর দুই দলের মধ্যে সাম্প্র্রতিক শক্তিমত্তার বিষয়টা ভুলতে বসেছিল সফরকারীরা। কিছুটা যেন স্বপ্নকাতুর হয়ে পড়েছিল জিম্বাবুয়ে। কিন্তু কাল মিরপুরের শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে চিগুম্বুরাদের উড়িয়ে দিয়ে পার্থক্যটাও বুঝিয়ে দিলেন মাশরাফিরা। আফগানিস্তান থেকে বিধ্বস্ত হয়ে আসার পর প্রস্তুতি ম্যাচ জিতে জিম্বাবুইয়ান  ক্রিকেটারদের মধ্যে যে আত্মবিশ্বাসের দ্যুতি দেখা গিয়েছিল গতকাল ১৪৫ রানের বিশাল ব্যবধানে পরাজয়ের পর তা উধাও হয়ে যায়। ম্যাচে প্রতিদ্বন্দ্বিতাও করতে না পারার কষ্টে যেন নীল হয়ে মাঠ ছাড়ে চিগুম্বুরাবাহিনী।  আগের দিন সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকরা যখন মাশরাফিকে সামনে পেয়ে প্রস্তুতি ম্যাচে হারের ব্যবচ্ছেদ করছিলেন, তখন টাইগার দলপতি হাসি মুখে বলেছিলেন, ‘বিসিবি একাদশ আর জাতীয় দল এক নয়।’ ম্যাশ যে কেন বলেছিলেন, সে উত্তরটা সবার জানা হয়ে গেছে ইতিমধ্যে।  যে কোনো জয়েই আনন্দ থাকে, থাকে উচ্ছ্বাস! কিন্তু কাল ম্যাচ শেষে টাইগাররা ছিলেন নির্বিকার। সাকিব-মুশফিকদের শরীরী ভাষার অনুবাদটা ছিল এমন, ‘আমাদের প্রাপ্তিটাই তো পেলাম, এতে আবার আনন্দ কী!’ সত্যিই তো তাই। পাকিস্তান, ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকার মতো ক্রিকেট পরাশক্তির বিরুদ্ধে টানা সিরিজ জয়ের পর জিম্বাবুয়ের বিরুদ্ধে এক জয়ে কী আর উল্লাস করা মানায়! ক্রিকেটারদের মতো শেষ দিকে দর্শকরাও ছিলেন নির্বিকার। ম্যাড়ম্যাড়ে ম্যাচ দেখতে চাননি বলেই কিনা অনেকে খেলা শেষ হওয়ার আগেই মাঠ ছাড়েন। কালকের ম্যাচটি ছিল মুশফিকুর রহিম ও সাকিব আল হাসানের। আর বাকি ক্রিকেটাররা কেবলমাত্র সহায়কের ভূমিকা পালন করেছেন। ব্যাটিংয়ে দলের বিপর্যয়ের মুখে এক প্রান্ত আগলে রেখে ১০৭ রানের অনবদ্য ইনিংস খেলেন মুশফিক। আর বোলিংয়ে ক্যারিয়ারের প্রথমবারের মতো ওয়ানডেতে ৫ উইকেট শিকার করেন সাকিব আল হাসান। ম্যাচ সেরার পুরস্কার উঠেছে মুশফিকের হাতেই। কেননা ম্যাচের গুরুত্ব বিবেচনায় সাকিবের ৫ উইকেটের চেয়েও এগিয়ে ছিল তার সেঞ্চুরি। মিরপুরের তিন নম্বর পিচে রান করা কঠিন। আর এই উইকেটেই সেঞ্চুরি হাঁকালেন মুশফিক। জয়ের ভিত্তিটা তৈরি হয়েছিল মূলত বাংলাদেশের ব্যাটিংয়ের সময়ই। পাঁচ উইকেট নিয়ে জয়টা আরও সহজ করে দেন সাকিব। টসে হার দিয়ে শুরু হয়েছিল বাংলাদেশের। তারপর ব্যাটিংয়ের শুরুতেই উইকেট হারিয়ে বিপর্যয়ের মুখে পড়তে হয়েছিল। ৩০ রানের মধ্যে লিটন দাস ও মাহমুদুল্লাহর উইকেট পতনের পর মুশফিক ব্যাট হাতে ২২ গজে গিয়ে হাল ধরেন। তামিমের সঙ্গে ৭০ রানের জুটি গড়ে প্রথম ধাক্কা থেকে দলকে রক্ষা করেন। কিন্তু ২৩ রানের মধ্যে তামিম ও সাকিবের বিদায়ে আবারও বিপদে পড়ে বাংলাদেশ। এবার সাব্বিবের সঙ্গে ১১৯ রানের জুটি গড়ে বাংলাদেশকে ২৭৩ রানের শক্ত ভীতের ওপর দাঁড় করিয়ে দেন। আর বাংলাদেশের বোলিংয়ের সময় তো পাত্তাই পায়নি জিম্বাবুয়ে। সাকিব আল হাসান ক্যারিয়ার সেরা বোলিং করে সফরকারীদের ম্যাচ থেকে ছিটকে দেন। সাকিব ৪৭ রানে নেন ৫ উইকেট। আর জিম্বাবুয়ে অলআউট হয়ে যায় মাত্র ১২৮ রানে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর