রবিবার, ৮ নভেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা

বিনিয়োগ বাড়াতে আতঙ্ক ও অনিশ্চয়তা কাটাতে হবে

মানিক মুনতাসির

বিনিয়োগ বাড়াতে আতঙ্ক ও অনিশ্চয়তা কাটাতে হবে

ড. মোস্তাফিজুর রহমান

বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ও বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) নির্বাহী পরিচালক ড. মোস্তাফিজুর রহমান বলেছেন, বিনিয়োগ বাড়াতে হলে মানুষের মধ্যে সৃষ্ট আতঙ্ক আর অনিশ্চয়তা দূর করতে হবে। তিনি বলেন, দেশের সামগ্রিক অর্থনৈতিক উন্নয়ন করতে হলে বিনিয়োগের বিকল্প নেই। কেননা বিনিয়োগ ছাড়া কর্মসংস্থান হবে না। আর নতুন নতুন কর্মসংস্থান না হলে দেশে বেকারের বোঝা বাড়বে। যা সার্বিক অর্থনীতিকে এক ধরনের চাপের মধ্যে ঠেলে দেবে। এ অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসতে হলে দেশে বিনিয়োগের উপযুক্ত পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে হবে। গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন। ড. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, সম্প্রতি দেশে যেসব হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে, এগুলোর ঘাতকদের আইনের আওতায় আনতে হবে। যে কোনো মূল্যে তাদের ধরে শাস্তির বিধান নিশ্চিত করতে হবে। তা না হলে বিনিয়োগকারীদের মনে সৃষ্ট অনিশ্চয়তা কাটানো যাবে না। পাশাপাশি দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীদের মধ্যে এক ধরনের আস্থার সংকট দেখা দিয়েছে। তা দূর করতে হবে। আস্থা অর্জন করতে না পারলে বিনিযোগ বাড়বে না। বিদেশি নাগরিক হত্যা কিংবা ব্লগারদের হত্যা করা এগুলো সবই সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড। এসব সন্ত্রাসীকে আইনের আওতায় আনতে হবে। অন্যথায় এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটতেই থাকবে। যা দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য, বিনিয়োগসহ সার্বিক পরিস্থিতিতে নেতিবাচক পর্যায়ে নিয়ে যাবে। তিনি আরও বলেন, আমাদের বার্ষিক লক্ষ্য অনুযায়ী ৭ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে হলে দেশি-বিদেশি উভয় প্রকার বিনিয়োগ বাড়াতে হবে। এ ছাড়া আমাদের প্রত্যাশা এবং সক্ষমতার মধ্যে এক ধরনের ফারাকের সৃষ্টি হয়েছে। সেটা দূর করতে হবে। উচ্চ প্রবৃদ্ধির আকাক্সক্ষা পূরণে সরকারি সংস্থাগুলোর দক্ষতা ও সক্ষমতা বাড়াতে হবে। বাজেট বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে সুশাসন ও গুণগত দিকগুলো মাথায় রাখতে হবে। অর্থাৎ প্রত্যাশা অনুযায়ী বাজেট বাস্তবায়নের সক্ষমতা বাড়াতে হবে। অন্যথায় বাজেটের লক্ষ্য পূরণ করা সম্ভব নয়। ড. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, যে কোনো ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড কোনোভাবেই কাম্য নয়। কেননা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড সার্বিক অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের গতিকে মন্থর করে দেয়। কোনো কোনো ক্ষেত্রে তা থামিয়ে দেয়। ফলে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডকে রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা না করে কার্যকর আইনি পদক্ষেপ নিতে হবে। যার মাধ্যমে এদের শাস্তি নিশ্চিত হবে। তিনি মনে করেন, দেশের বর্তমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতি কিছুটা স্তিমিত হয়ে রয়েছে। এ অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড আরও জোরালো করতে হবে। এ ক্ষেত্রে ব্যবসায়ী ও শিল্প উদ্যোক্তাদের আস্থার সংকট কাটাতে হবে। অন্যথায় বিনিয়োগের চাকা সচল করা সম্ভব নয় বলে মনে করেন এই অর্থনীতিবিদ।

সর্বশেষ খবর