সোমবার, ৯ নভেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা

বিহারে মহাজোটের মহাজয়, বিজেপির বিপর্যয়

কলকাতা প্রতিনিধি

বিহারে মুখ থুবড়ে পড়ল মোদি ব্রিগেড। শেষ হাসি হাসলেন নীতিশ কুমারই। ভোটের পরই বেশিরভাগ বুথফেরত জরিপেই জনতা দল ইউনাইটেড-রাষ্ট্রীয় জনতা দল-কংগ্রেসের মহাজোটকে এগিয়ে রেখেছিল। হলোও তাই। একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে বিহারের মসনদ দখল করল মহাজোট। ২৪৩ আসন বিশিষ্ট বিহারের ম্যাজিক ফিগারকে (১২২টি আসন) টপকে অনেকটাই এগিয়ে গেছে মহাজোট। বিকাল ৪টা পর্যন্ত গণনা শেষে রাজ্যের ২৪৩টি আসনের মধ্যে মহাজোট পেয়েছে ১২৫টি আসন, এগিয়ে আছে আরও ৩৫টির বেশি আসনে। অন্যদিকে বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ জোট পেয়েছে ৩৬টি আসনে, এগিয়ে রয়েছে আরও ২৫টি আসনে এবং অন্য ৫টি আসন পেয়েছে। গত ১২ অক্টোবর থেকে মোট পাঁচ দফায় চলে ভোট পর্ব। রবিবার ছিল ভোট গণনা। সকাল ৮টা থেকে শুরু হয় ভোট গণনা। প্রথম দুই-তিন ঘণ্টায় এনডিএ জোট এগিয়ে থাকলেও সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গেই সেই ছবি পাল্টাতে থাকে। ক্রমে এগোতে থাকে নীতিশ-লালুর বিজয়রথ। কিছুক্ষণের মধ্যে এনডিএ’র আসন সংখ্যাকে টপকে যায় মহাজোট। এরপরই পরিষ্কার হয়ে যায় বিহারের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ। পাটনায় নীতিশ এবং লালুর বাসার সামনে ভিড় জমাতে শুরু করেন দলের কর্মী-সমর্থকরা। আবির খেলা, বাজি ফাটানোর সঙ্গে সঙ্গে চলে মিষ্টি মুখের পালা। জয়ের পরই নীতিশ কুমার জানিয়েছেন ‘মহাজোট একযোগে কাজ করে এই জয় এনেছে। এই জয়ে বিহারের প্রতিটি নাগরিককে অভিনন্দন জানিয়ে তিনি বলেন বিহারের প্রতিটি  শ্রেণির মানুষই আমাদের সমর্থন জানিয়েছেন। অন্যদিকে নীতিশ কুমারকে টেলিফোন করে তাকে অভিনন্দন জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। পরে টুইট করে মোদি নিজেই সে কথা জানিয়ে বলেন ‘আমি নীতিশ কুমারকে ফোন করে এই জয়ের জন্য অভিনন্দন জানিয়েছি’। মোদির পাশাপাশি দিলি­র মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, জম্মু-কাশ্মীরের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লা, দেশটির সাবেক অর্থমন্ত্রী কংগ্রেস নেতা পি. চিদাম্বরম প্রমুখ। টুইট করে বিজেপির পরাজয়কে ‘সহিষ্ণুতা জয় এবং অসহিষ্ণুতার পরাজয়’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পাশাপাশি এই জয়ে নীতিশ কুমার, লালু প্রসাদসহ পুরো টিম এবং বিহারবাসীকে অভিনন্দন জানিয়েছেন মমতা। এই জয়কে সত্যের জয় বলে উল্লেখ করেছেন কংগ্রেস সহসভাপতি রাহুল গান্ধী। তিনি বলেন বিজেপি এবং আরএসএস যে এই দেশকে ভাগ করতে পারবে না সেই বার্তাই পেলেন মোদি। নরেন্দ্র মোদির অহঙ্কারের জন্যই বিহারে বিজেপির পরাজয় হয়েছে বলেও মন্তব্য করেন রাহুল। সিপিআইএমএর সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি জানান ‘মোদি যে উন্নয়নের মিথ্যে প্রতিশ্র“তি দিয়েছিলেন, বিহারের রায়েই সেটা প্রমাণিত। তাছাড়া সাম্প্রদায়িক রাজনীতি, ধর্মীয় অসহিষ্ণুতা যে মানুষ পছন্দ করেন না তাও পরিষ্কার হয়ে গেল। অন্যদিকে হারের দায় স্বীকার করে নিয়েছে বিজেপি। টুইট করে নীতিশ কুমার এবং লালু প্রসাদ যাদবকে অভিনন্দন জানিয়ে দলের সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ জানান ‘জনগণের রায়কে আমরা শ্রদ্ধা জানাই।

সর্বশেষ খবর