মঙ্গলবার, ১০ নভেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা

সিরিজ জিতল বাংলাদেশ

আসিফ ইকবাল

সিরিজ জিতল বাংলাদেশ

স্বপ্নটাই সত্যি হলো। এক ম্যাচ হাতে রেখেই ২-০ তে সিরিজ জিতে নিল টাইগাররা। সেই সঙ্গে ফর্মে ফিরলেন কাটার বয় মুস্তাফিজও -রোহেত রাজীব

আইসিসির চেয়ারম্যানের পদ থেকে অপসারিত হয়েছেন শ্রীনিবাসন। শ্রীনির অপসারণ নিয়ে বেশ জমাট আড্ডা যখন মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামের মিডিয়া বক্সে, তখন হঠাৎ বক্সে প্রবেশ বিসিবি ও আইসিসির সাবেক সভাপতি, পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের। তার সঙ্গী বিসিবি পরিচালক ও মিডিয়া কমিটির চেয়ারম্যান জালাল ইউনুস। মাঠে খেলা চলছে বাংলাদেশ-জিম্বাবুয়ে সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডে। ব্যাটিং করছেন নাসির ও মাশরাফি। পরিকল্পনা মন্ত্রী ঢুকতেই থেমে গেল আড্ডা। সবাই ঘিরে ধরলেন আইসিসির সাবেক সভাপতিকে। জানতে চাইলেন শ্রীনির অপসারণে তার সন্তুষ্টির কথা। বিসিবির সাবেক সভাপতি ব্যস্ত মিডিয়াকে নিয়ে, তখন একজন বিসিবি পরিচালকের কাছে জানতে চাইলেন, জিম্বাবুয়েকে সিরিজ খেলতে ডেকে এনে কী লাভ বিসিবির? বিসিবি পরিচালক হাসলেন প্রশ্ন শুনে। বুঝতে পারলেন, বাংলাদেশের ক্রিকেটপ্রেমীরা এখন আর প্রতিপক্ষ হিসেবে জিম্বাবুয়েকে চায় না। তাদের চাওয়া-পাওয়ার তালিকায় জায়গা নিয়েছে ভারত, পাকিস্তান, নিউজিল্যান্ড, দক্ষিণ আফ্রিকা। সত্যিই তো! জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে খেলতে নামা মানেই সহজ জয়। ব্যবধান আকাশসম। প্রথম ওয়ানডেতে ১৪৫ রানে জয়ের পর কাল জিতল ৫৮ রানে। এ জয়ে এক ম্যাচ আগেই নিশ্চিত হলো সিরিজ। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে যা নবম এবং সব মিলিয়ে ২০তম সিরিজ জয়। অধিনায়ক মাশরাফির নেতৃত্বে ঘরের মাটিতে টানা পঞ্চম সিরিজ জয়। আগামীকাল সিরিজের শেষ ম্যাচ।     

প্রথম ওয়ানডে জেতানোর নায়ক সাকিবকে ছাড়া কাল ব্যাটিংয়ে বড্ড নড়বড়ে মনে হয়েছে টাইগারদের। বিশেষ করে মিডল অর্ডার ব্যাটিং লাইন প্রতিপক্ষের বোলারদের চাপ সামাল দিতে পারেনি। চাপ সামলাতে ব্যর্থ বলেই ৫০ ওভারে ২৪১ রানের বেশি করতে পারেনি বাংলাদেশ। অথচ জিম্বাবুয়ে মানেই স্কোর বোর্ডে এখন হরহামেশা আড়াই-তিনশ’ রান! ২৪১ রান করতে কাল ঘাম ছুটে গেছে মাশরাফি বাহিনীর। যদি না ইমরুল কায়েস ৭৬ রানের ইনিংস খেলতেন, তাহলে স্কোর কত হতো, সে নিয়ে নিশ্চয় বাজি ধরা যায়! সুযোগ পেয়েই মেলে ধরে খেলেন ৭৬ রানের প্রত্যয়ী ইনিংস। ইনিসটি খেলার পথে তামিমকে নিয়ে ৫০ বারের মতো জুটি গড়েন। অবশ্য উদ্বোধনী জুটিতে ৪৬ বার ব্যাটিং করেন দুজনে। তাদের চেয়ে এগিয়ে শুধু সাকিব-মুশফিক জুটি। দুজনের ৫৬ জুটিতে রান ২০৪৬। ইমরুল-তামিমের রান ১২৭৯। ইমরুল ছাড়া কাল ৪১ রান করেন নাসির হোসেন।

২৪২ রানের টার্গেট। মিরপুরের ধীরগতির উইকেটে খুব মামুলি নয়। তবে সাকিববিহীন বোলিংয়ের বিপক্ষে খুব কঠিনও নয়। সাকিবকে ছাড়া কাজটি সহজ হবে এমন ভাবনা যখন চিগুম্বুরাদের, তখন কাজটি কঠিন করে দেন মুস্তাফিজুর রহমান, আল-আমিন, নাসিররা। নিয়ন্ত্রিত বোলিং করে একের পর এক ব্যাটসম্যানকে সাজঘরে পাঠিয়ে জিম্বাবুয়েকে গুটিয়ে দেন ১৮৩ রানে। স্কোর বোর্ডে তখনো বাকি ৬.৪ ওভার। ‘বিস্ময় বালক’ মুস্তাফিজ প্রথম ওয়ানডেতে সাফল্য না পেলেও কাল ছিলেন জ্বলজ্বলে। চার স্পেলে ৮ ওভার বোলিং করে ৩৩ রানের খরচে উইকেট নেন ৩টি। বিশ্বকাপ থেকে শৃঙ্খলা ভঙ্গের জন্য দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছিল আল-আমিনকে। এরপর আর সুযোগ পাননি। সুযোগ পেয়ে কাল মেলে ধরেন নিজেকে ২ উইকেট নিয়ে।

আজ টেস্ট ক্রিকেটে ১৫ বছরপূর্তি করবে বাংলাদেশ। তার আগে আরও একটি সিরিজ জয় নিঃসন্দেহে অনেক বেশি উৎসবের রসদ জোগাবে মাশরাফিদের।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর