বৃহস্পতিবার, ১২ নভেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা

জঙ্গি নিয়ে টম অ্যান্ড জেরি খেলা বন্ধ করতে হবে

মানিক মুনতাসির

জঙ্গি নিয়ে টম অ্যান্ড জেরি খেলা বন্ধ করতে হবে

শাহরিয়ার কবির

একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শাহরিয়ার কবির বলেছেন, ব্লগার, লেখক, প্রকাশক, বিদেশি নাগরিক ও পুলিশ হত্যায় জঙ্গিগোষ্ঠীর সংশ্লিষ্টতা নিয়ে বিখ্যাত কার্টুন টম অ্যান্ড জেরির খেলায় মেতেছে সরকার। এটি বন্ধ করতে হবে।

একের পর এক ব্লগার, পুলিশ সদস্য খুনের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে তিনি বলেন, স্বাধীনতাবিরোধীরা বহুমাত্রিক যুদ্ধে লিপ্ত রয়েছে। যুদ্ধাপরাধীদের বাঁচাতে তারা একের পর হত্যাকাণ্ড ঘটাচ্ছে। এটি তাদের মরণকামড়। আর সরকার চুনোপুঁটি জঙ্গিদের ধরছে  আবার ছেড়ে দিচ্ছে। এতে এমন অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে, যেন সরকার বিখ্যাত কার্টুন ‘টম অ্যান্ড জেরি’র খেলায় মেতেছে। এ খেলা বন্ধ করতে হবে। আসল হোতাদের ধরতে হবে। গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন। শাহরিয়ার কবির বলেন, জামায়াত-শিবির হচ্ছে সন্ত্রাসের মদদদাতা। এরা একাত্তরের পরাজয় এখনো মেনে নিতে পারছে না। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বানচাল করতে এবং দেশকে আন্তর্জাতিক মহলে প্রশ্নবিদ্ধ করতে তারা এ ধরনের হত্যাকাণ্ড ঘটাচ্ছে। এর সঙ্গে আন্তর্জাতিক জঙ্গিগোষ্ঠীর যোগসাজশ রয়েছে। ফলে একদিকে তারা দেশকে অস্থিতিশীল করছে, অন্যদিকে মুক্তমনা লেখকদের হত্যা করছে, যেন আন্তর্জাতিকভাবে দেশ ঝুঁকির মুখে পড়ে। এভাবেই তারা বহুমাত্রিক যুদ্ধে লিপ্ত হয়েছে বলে মনে করেন তিনি। শাহরিয়ার কবির বলেন, জামায়াত-শিবিরকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করতে হবে। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার দ্রুত শেষ করতে হবে। এ জন্য বিলুপ্ত-ঘোষিত মানবতাবিরোধী আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালটি পুনরুজ্জীবিত করতে হবে। লেখক, ব্লগার, প্রকাশক, পুলিশ হত্যাকাণ্ডে সরাসরি জামায়াতের লোকেরাই জড়িত বলে তিনি অভিযোগ করেন। এতে পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআইর যোগসূত্রও রয়েছে। বিশেষ করে ডিজিএফআইর সদর দফতরের সামনে মিলিটারি পুলিশকে কোপানোর বিষয়কে কোনোক্রমেই হালকাভাবে নেওয়া যাবে না। এতে বড় ধরনের দেশবিরোধী ষড়যন্ত্র রয়েছে। সেনাবাহিনীকে মানসিকভাবে দুর্বল করতে এ ঘটনা ঘটানো হতে পারে। সরকারের উচিত হবে জড়িতদের দ্রুত খুঁজে বের করা। শুধু দু-একজন চুনোপুঁটি জঙ্গিকে না ধরে এর মূল হোতাদের ধরতে হবে। কেননা একাত্তরের গণহত্যা আর ২০১৫ সারের ব্লগার হত্যা এই সূত্রে গাঁথা। সরকারের দৃষ্টিভঙ্গি বদলাতে হবে। এখানে কারা অপরাধী, এটি সবাই জানে। কিন্তু সরকার তাদের না ধরে চুনোপুঁটিদের ধরছে। আবার তারা জামিনে বেরিয়ে পড়ছে। সরকারকে আরও কঠোর অবস্থানে যেতে হবে। আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোকে আরও কার্যকর করতে হবে। তাদের স্বাধীনভাবে কাজ করার সুযোগ দিতে হবে। সরকার লেখক, ব্লগার, বুদ্ধিজীবীদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছে কি না-এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘আমি সেটি মনে করি না। কিন্তু সরকারকে আরও কঠোরভাবে আইন প্রয়োগ করতে হবে। জামায়াত-শিবিরকে হালকাভাবে নেওয়া যাবে না। পাকিস্তানের প্রেতাত্মাদের দেশ থেকে বিতাড়িত করতে হবে। এখানে সরকারকে আরও আন্তরিক হয়ে কাজ করতে হবে। সন্ত্রাসীদের সঙ্গে কোনো আপস বা আলোচনা নয়। তাদের আইনের আওতায় আনতে হবে। কঠোর শাস্তির বিধান নিশ্চিত করতে হবে।

 

সর্বশেষ খবর