শনিবার, ১৪ নভেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা

ছক্কা মেরে জয়

বাংলাদেশ-জিম্বাবুয়ে প্রথম টি২০

আসিফ ইকবাল

জিততে দরকার মাত্র ২ রান। এমন সমীকরণ যখন ম্যাচের, তখন সব ফিল্ডারকে ৩০ গজের সার্কেলে নিয়ে এলেন জিম্বাবুয়ে অধিনায়ক এল্টন চিগুম্বুরা। প্রতিপক্ষের ব্যাটসম্যানদের ওপর মানসিক চাপ প্রয়োগ করতে ছাতার মতো ফিল্ডিং সাজালেন। ক্লোজ ফিল্ডিং সাজিয়ে প্রতিপক্ষ ব্যাটসম্যানের ওপর মানসিক চাপ প্রয়োগ করাই উদ্দেশ্য। অথচ আত্নবিশ্বাসী টাইগার অধিনায়ক মাশরাফি প্রতিপক্ষের স্ট্র্যাটেজিকে ভুল প্রমাণিত করেন ঠাণ্ডা মাথায়। কোনোরকম জড়তা না রেখে আÍবিশ্বাসী ভঙ্গিতে জঙ্গ–র ওভার পিচ বলকে সোজা ব্যাটে সীমানার ওপারে আছড়ে ফেলেন টাইগার অধিনায়ক। তখন ইনিংসের ওভার ১৭.৪। মাশরাফির লম্বা শটের ঠিকানা ছক্কা! ওই ছক্কায় ১৪ বল হাতে রেখে ৪ উইকেটের সহজ জয় তুলে নেয় বাংলাদেশ। দুই ম্যাচ টি-২০ সিরিজে এগিয়ে যায়। আগামীকাল শেষ ম্যাচ জিতলেই ওয়ানডের পাশাপাশি টি-২০ সিরিজও জিতবে বাংলাদেশ। কাল নিজেদের ইতিহাসের ৪৫ এবং জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ৪ নম্বর ম্যাচ খেলতে নামে টাইগাররা। বছরের চতুর্থ ম্যাচও ছিল এটি। বছরের প্রথম ম্যাচে পাকিস্তানকে হারায় টাইগাররা। এরপর দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে হেরে যায় দুই ম্যাচ। তখন মনে হয়েছিল ওই হারেই শেষ হবে বাংলাদেশের টি-২০ ফরম্যাট। কিন্তু জিম্বাবুয়ে আসাতে জয় দিয়ে বছর শেষ করার সুযোগ আসে বাংলাদেশের। কাল সেই জয়টিই তুলে নিল। তবে কালকের লো স্কোরিং ম্যাচে জয় পেতে ঘাম না ঝরলেও লড়াই করতে হয়েছে। যদিও কাগজে কলমে এটি সহজ জয়ই। ধীর গতির উইকেটের সুবিধা এবং কুয়াশায় বোলিং করতে অনীহায় টস জিতে ফিল্ডিংয়ে নামে মাশরাফি বাহিনী। মাশরাফি, মুস্তাফিজের ক্যারিয়ার সেরা বোলিং, জুবায়ের হোসেন লিখনের অভিষেক ম্যাচের বোলিং-সব মিলিয়ে নিয়ন্ত্রিত বোলিং ও ফিল্ডিংয়ে জিম্বাবুয়েকে ১৯.৩ ওভারে ১৩১ রানে বেঁধে ফেলে। এই রানও করতে পারত না আফ্রিকান প্রতিনিধিরা, যদি না ম্যালকম ওয়ালার ৩১ বলে ৬৮ রানের টর্নেডো ইনিংস খেলতেন। ইনিংসটি খেলার পথে বাংলাদেশের বিপক্ষে দ্রুততম ২০ বলে হাফ সেঞ্চুরির রেকর্ড গড়েছেন ওয়ালার। টার্গেট ১৩২ রান। পাকিস্তান, ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারানো টাইগারদের কাছে মামুলি টার্গেটই বলা যায়। কিন্তু অনিশ্চয়তার খেলা বলেই ছেড়ে দিলেন না চিগুম্বুরারা। লড়াই করলেন শুরু থেকেই। টানা দুই ওয়ানডেতে হাফ সেঞ্চুরির ইনিংস খেলা ইমরুল কায়েসকে কাল বিশ্রাম দিয়ে নামানো হয় এনামুল হক বিজয়কে। সুযোগটিকে কাজে লাগাতে ব্যর্থ হন বিজয় রান আউট হয়ে। এনামুলের বিদায়ের পর বড় কোনো ইনিংস খেলতে পারেননি টাইগার ব্যাটসম্যানরা। ক্রেমার ও চিসোরোর ঘূর্ণিতে বিপাকে পড়ে ৮০ রানে খুঁইয়ে বসে ৫ উইকেট। তখন মনে হয়েছিল জমে উঠবে ম্যাচ। কিন্তু ষষ্ঠ উইকেট জুটিতে মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ ও লিটন দাস ২৬ বলে ৩৮ রান যোগ করে সহজ করে দেন জয়। লিটন ১৭ রানে সাজঘরে ফিরলেও ২২ রানে অপরাজিত থাকেন মাহমুদুল্লাহ। লিটনের বিদায়ের পর অধিনায়ক মাশরাফি নেমেই দ্রুতলয়ে খেলা শেষ করেন। ম্যাচ জয়ের রানটি আসে অধিনায়কের ব্যাটে ছক্কায়। ২০১৬ সালের মার্চ-এপ্রিলে টি-২০ বিশ্বকাপ। তার প্রস্তুতি শুরু হলো কালকের ম্যাচ দিয়ে। শুরু হল জয় দিয়ে। কালকের জয়টি আবার জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে চতুর্থ এবং নিজেদের ইতিহাসে ১৩ নম্বর জয়। আগামীকাল বছরের শেষ ম্যাচ। জয় দিয়েই বছর শেষ করতে চাইছেন টাইগার অধিনায়ক মাশরাফি।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর