বৃহস্পতিবার, ১৯ নভেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা

কবে রায় কার্যকর

নিজস্ব প্রতিবেদক

মানবতাবিরোধী অপরাধী বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন কাদের (সাকা) চৌধুরী ও জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদের রিভিউ আবেদন খারিজ হয়েছে। এখন ফাঁসি কার্যকরের ক্ষেত্রে আর কী বাধা আছে? কবে তাদের ফাঁসি হবে? দুই মানবতাবিরোধী অপরাধীর রিভিউ আবেদন খারিজের পর গতকাল সর্বস্তরের মানুষের মনেই ছিল এই জিজ্ঞাসা। তবে আইনজীবীরা বলছেন, রিভিউ খারিজ করে আপিল বিভাগের দেওয়া লিখিত আদেশ কারাগারে পৌঁছানোর পর কারা কর্তৃপক্ষ সাকা চৌধুরী ও মুজাহিদকে রায় পড়ে শোনাবেন। এরপর তারা রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা না চাইলে সরকার দণ্ড কার্যকর করতে পারবে।

এদিকে আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক বলেছেন, সাকা চৌধুরী ও মুজাহিদের ফাঁসি কার্যকরের জন্য সাত দিন নয়, আরও আগেই সম্ভব। গত রাতে রাজধানীর গুলশানে নিজ বাসভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রী এ কথা বলেন। তিনি বলেন, সাত দিনের আগেই ফাঁসি সম্ভব। আর এর মধ্যেই যথাযথ আইনি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হবে। মানবতাবিরোধী অপরাধের ক্ষেত্রে বিশ্বের কোথাও এমন স্বচ্ছতা রেখে বিচারকার্য সম্পাদন করা হয়নি বলেও মন্তব্য করেন আইনমন্ত্রী। আসামিপক্ষের প্রধান আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, দণ্ড কার্যকরের ক্ষেত্রে রিভিউ খারিজ করে আপিল বিভাগের দেওয়া আদেশের লিখিত অনুলিপি কারা কর্তৃপক্ষের কাছে পৌঁছাতে হবে। এক্ষেত্রে আপিল বিভাগ সংক্ষিপ্ত আদেশও দিতে পারেন আবার আদেশের পূর্ণাঙ্গ কপিও দিতে পারেন। ট্রাইব্যুনালে সাকা চৌধুরীর বিরুদ্ধে মামলা পরিচালনাকারী অন্যতম প্রসিকিউটর তুরিন আফরোজ বলেন, রিভিউ খারিজের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশের পর তা কারাগারে যাবে। এরপর সেখানে তাদের রায় পড়ে শোনানো হবে। রায় শোনার পর আসামিরা যদি রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা চাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন তাহলে তারা সে সুযোগ পাবেন। রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা না চাইলে সরকার যে কোনো সময় মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করতে পারবে। তবে রিভিউ খারিজের পর অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম সাংবাদিকদের বলেন, সাকা চৌধুরী ও মুজাহিদের রায় কার্যকর এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র। এখানে জেল কোড প্রযোজ্য নয়। আমি মনে করি সাকা ও মুজাহিদের রায় কার্যকর করতে আর কোনো সংক্ষিপ্ত আদেশ দেওয়ার প্রয়োজন নেই। কারণ রিভিউ আবেদন করার পরে ফাঁসি স্থগিত ছিল। এখন ফাঁসি কার্যকর করতে আর অর্ডারের দরকার নেই। সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী শ ম রেজাউল করিম বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, রিভিউ খারিজের বিষয়ে রাষ্ট্রপক্ষ থেকে সংক্ষিপ্ত আদেশ চাওয়া হলে গতকাল প্রধান বিচারপতি উম্নুক্ত আদালতে বলেছেন, আমাদের কাছে আর কিছু বিচারাধীন (পেন্ডিং) নেই। সেহেতু আমার মনে হয়, দণ্ড কার্যকরের ক্ষেত্রে পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণে সরকারকে কোনো আইন বাধা দিচ্ছে না। তবে রিভিউয়ের পূর্ণাঙ্গ রায় কারাগারে পৌঁছানো যৌক্তিক। উল্লেখ্য, গত ৬ এপ্রিল জামায়াত নেতা মুহাম্মদ কামারুজ্জামানের রিভিউ আবেদন খারিজ করে দেওয়া আদেশের পর এর পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশিত হয় ৮ এপ্রিল। এরপর তার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়। তবে রিভিউ খারিজ করার দিনই আদালতের সংক্ষিপ্ত আদেশ পেয়ে ২০১২ সালের ১২ ডিসেম্বর কাদের মোল্লার ফাঁসি কার্যকর করা হয়।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর