একের পর এক বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের কারণে মন্ত্রিসভা থেকে বাদ দেওয়া হবে কিনা সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা না হলেও দলীয়ভাবে শুধুই সতর্ক করা হলো যুব ও ক্রীড়া উপমন্ত্রী আরিফ খান জয়কে। গত বুধবার রাতে ধানমন্ডি আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয়ে তিন কেন্দ্রীয় নেতা তাকে কড়া ভাষায় সতর্ক করেন।
গত রবিবার নেত্রকোনার কালিয়ারা গাবরাগাতী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সম্মেলনে পছন্দের প্রার্থীর বিরোধিতা করায় যুব ও ক্রীড়া উপমন্ত্রী আরিফ খান জয় ও তার বড় ভাই নুর খান মিঠু স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আমজাদ হোসেনকে মারধর করেন। এতে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে সম্মেলন পণ্ড হয়ে যায়। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত বুধবার রাতে জয়সহ কয়েকজন জেলা নেতাকে তলব করা হয় ঢাকায়। রাত ৯টা থেকে প্রায় ১২টা পর্যন্ত তাদের সঙ্গে বৈঠক চলে। বৈঠকে আরিফ খান জয়কে সতর্ক করা হয় এবং গাবরাগাতীর ঘটনা মিটিয়ে সুষ্ঠু পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে জয়কেই দায়িত্ব দেওয়া হয়। এ ছাড়া ওই ইউপি চেয়ারম্যানের নামে করা মামলা তুলে নিতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। বৈঠকে উপস্থিত একাধিক নেতা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। বৈঠকে আওয়ামী লীগের বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, বস্ত্র ও পাট প্রতিমন্ত্রী মীর্জা আজম, উপ-প্রচার সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মতিয়র রহমান খান, সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক এমপি আশরাফ আলী খান খসরু, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি এস এম বজলুল কাদের শাহজাহান, সাধারণ সম্পাদক ও পিপি অ্যাডভোকেট গোলাম মোহাম্মদ খান পাঠান বিমল উপস্থিত ছিলেন। বৈঠক সূত্র জানায়, বৈঠকে আরিফ খান জয়কে সতর্ক করে বস্ত্র ও পাট প্রতিমন্ত্রী মীর্জা আজম বলেন, এমপি ও মন্ত্রী পদটা বিরাট সম্মানের। এ সম্মান সবাই পায় না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আপনাকে এমপি ও উপমন্ত্রী বানিয়েছেন। নিজের সম্মান যেমন রক্ষা করে চলতে হবে, তেমনি অন্যকেও সম্মান দিতে হবে। যখন তখন যাকে তাকে মারধর করা যাবে না। যা খুশি করা যাবে না। এতে দল ও সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হয়। পরে জয়ের মুরব্বি হিসেবে গোলাম মোহাম্মদ খান পাঠান বিমলের হাত ধরে ক্ষমা চান আরিফ খান জয়। তাকে নেত্রকোনায় গিয়ে স্থানীয় নেতাদের সঙ্গে কথা বলে ফের সম্মেলনের পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে নির্দেশনা দেওয়া হয়। এর আগে অনুষ্ঠানের ব্যানারে নিজের নাম না দেখায় ১ নভেম্বর মন্ত্রণালয়ের এক যুগ্ম-সচিবের কক্ষে ভাঙচুর ও আরেক সিনিয়র সহকারী সচিবের কক্ষে তালা দেন আরিফ খান জয়। তারও আগে আদম পাচারের অভিযোগ ওঠে যুব ও ক্রীড়া উপমন্ত্রী আরিফ খান জয়ের বিরুদ্ধে। মে মাসে সুইজারল্যান্ডের জুরিখে ফিফা কংগ্রেসে যোগ দেয় সভাপতি কাজী সালাহউদ্দিনের নেতৃত্বে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) একটি প্রতিনিধিদল। এতে উপমন্ত্রী আরিফ খান জয়ও ছিলেন। এ প্রতিনিধিদলের ডেলিগেট সমন্বয়কারী মো. সেলিম উদ্দিন সুইজারল্যান্ড থেকে আর দেশে ফিরে আসেননি। এ নিয়ে সুইজারল্যান্ড সরকারের কড়া অবস্থানে নড়েচড়ে বসেছে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। কিন্তু কোনো ভ্রƒক্ষেপ নেই যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় কিংবা বাফুফের।