শনিবার, ২১ নভেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা

সাকার বাড়িতে কড়া নিরাপত্তা

সাইদুল ইসলাম, চট্টগ্রাম

আপিল বিভাগে মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলায় ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত সালাউদ্দিন কাদের (সাকা) চৌধুরীর রায় বহাল থাকার পর থেকে তার জম্নভূমি রাউজানকে নিরাপত্তা বলয়ে নিয়েছে সরকার। সিসি ক্যামেরার আওতায় আনা হয়েছে কুণ্ডেশ্বরী ভবন। সাকার গ্রামের বাড়ি রাউজান ও রাঙ্গুনিয়ার কাদেরনগরসহ এলাকায় টহলে রয়েছে পুলিশ। কোনো ধরনের সহিংসতা ও নাশকতা এড়াতে প্রশাসনের বিশেষ নজরদারির পাশাপাশি মোতায়েন করা হয়েছে বিজিবি ও অতিরিক্ত পুলিশ।

জানা গেছে, বৃহস্পতিবার ভোর থেকে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) টহল দিচ্ছে। তিন দিন ধরে বিভিন্ন পয়েন্টে রয়েছে আরও দুই শতাধিক স্পেশাল পুলিশ। কোনো ধরনের নাশকতা ও হামলা প্রতিরোধে উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ও ১৯৭১ সালে সাকা চৌধুরীর নির্যাতনের শিকার শহীদ পরিবারকে পুলিশ পাহারায় রাখা হয়েছে। এদিকে, উপজেলা আওয়ামী লীগসহ অঙ্গসংগঠনের পক্ষ থেকে সাকা চৌধুরীর লাশ রাউজানের মাটিতে আনা যাবে না বলে ঘোষণা দিয়েছেন উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক মেয়র শফিকুল ইসলাম চৌধুরী বেবী। তিনি বলেন, কুখ্যাত রাজাকার সাকা চৌধুরীর রায় কার্যকর না হওয়া পর্যন্ত প্রতিটি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগসহ অঙ্গসংগঠনের নেতারা মাঠে থাকবেন। রাউজান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা প্রদীপকুমার দাশ বলেন, পুলিশ সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়ে উপজেলাজুড়ে অবস্থানে রয়েছে। তবে পুলিশের পাশাপাশি বিজিবির টিমও রয়েছে। মোতায়েন করা হয়েছে অতিরিক্ত পুলিশ।

রাউজান প্রতিনিধি প্রদীপ শীল জানান, ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরায় রয়েছে নূতন চন্দ্র সিংহের কুণ্ডেশ্বরী ভবন। রয়েছে সার্বক্ষণিক পুলিশ। গ্রামের লোকজন ছাড়া বাইরের কারও প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। ১৯৭১ সালের ১৩ এপ্রিল মুক্তিযুদ্ধের সময় কুণ্ডেশ্বরী ভবনের বাসিন্দা অধ্যক্ষ নূতন চন্দ্র সিংহকে নির্মমভাবে খুন করেন সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী ও মুসলিম লীগের কর্মীরা। নূতন চন্দ্র সিংহকে হত্যার দায়ে সাকা চৌধুরীর মৃত্যুদণ্ড হয়েছে। কুণ্ডেশ্বরীর আশপাশ ঘিরেই আছে নূতন সিংহের প্রতিষ্ঠিত স্কুল-কলেজ, ছাত্রীদের আবাসিক হল, আয়ুর্বেদিক ওষুধসহ তাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। এগুলোসহ বিভিন্ন স্থাপনা সাকার অনুসারী সন্ত্রাসীদের টার্গেটে পরিণত হওয়ার আশঙ্কার কারণেই এসব প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। প্রফুল­ রঞ্জন সিংহ জানান, পায়ে এবং কোমরে ব্যথার কারণে তিনি শয্যাশায়ী। তবে নিরাপত্তাব্যবস্থা নিয়ে সন্তুষ্ট তিনি। কুণ্ডেশ্বরী ভবনের কর্মচারীরা বলেন, ভবনের সীমানাজুড়ে ১৬টি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে। ভবন, ছাত্রী হোস্টেল, স্কুল-কলেজ, কারখানাসহ সব স্থাপনা, ?মূল ফটক, সীমানা দেয়ালের আশপাশ ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরায় মনিটরিং করা হয়। ঊনসত্তরপাড়ায়ও অনেক বাঙালি ?সাকার বাহিনীর হাতে খুনের শিকার হয়েছেন। স্বজনদের অনেকেই সাক্ষ্য দিয়েছেন। জগৎমল­পাড়া এবং ঊনসত্তরপাড়ায়ও পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

সর্বশেষ খবর