শনিবার, ২১ নভেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা

মালিতে জঙ্গি হানা, রক্তাক্ত অভিযান, নিহত ২৭

প্রতিদিন ডেস্ক

মালিতে জঙ্গি হানা, রক্তাক্ত অভিযান, নিহত ২৭

মালিতে হোটেল রেডিসন থেকে জিম্মি উদ্ধারে কমান্ডো তৎপরতা - মেইলঅনলাইন

পশ্চিম আফ্রিকার দেশ মালির রাজধানী বামাকোতে একটি অভিজাত হোটেলে গতকাল বন্দুকধারী জঙ্গিরা ১৭০ জনকে জিম্মি করে। পরে দেশটির নিরাপত্তা বাহিনীর বিশেষ অভিযানে সেই জিম্মি সংকটের অবসান হয়েছে। অভিযানে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী এবং মার্কিন ও ফরাসি বাহিনী সহায়তা করে। তবে এই রক্তাক্ত অভিযানে অন্তত ২৭ জনের মৃত্যু হয়। গত রাতে দেশটির সরকার ঘোষণা  করে, ওই হোটেলে আর কোনো জিম্মি নেই। তবে নিহতদের মধ্যে কতজন জঙ্গি তা তাৎক্ষণিকভাবে জানাতে পারেনি দেশটির কর্তৃপক্ষ।

আল-কায়েদার সঙ্গে জড়িত একটি আফ্রিকান জিহাদি  গোষ্ঠী হামলার দায় স্বীকার করেছে। মালির উত্তরাঞ্চলের আল-মৌরাবিতউন নামের ওই গোষ্ঠী এক টুইটে ওই হামলার দায় স্বীকার করেছে বলে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম জানিয়েছে। 

গতকাল স্থানীয় সময় সকাল ৭টায় হোটেলে কয়েকজন বন্দুকধারী ঢুকে। ঢুকেই ১৪০ জন অতিথি ও ৩০ জন কর্মীকে জিম্মি করে বন্দুকধারীরা। প্যারিসে জঙ্গি হামলায় ১২৯ জন নিহতের ঘটনার রেশ না কাটতেই মালির র‌্যাডিসন ব্লু নামের হোটেলে এ হামলা হলো। সরকারি বিভিন্ন মন্ত্রণালয় এবং কূটনৈতিক অফিসগুলোর কাছে শহরের কেন্দ্রস্থলের পশ্চিমে হোটেলটি অবস্থিত।

মালির নিরাপত্তা সূত্রের বরাত দিয়ে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম জানায়, দুজন বন্দুকধারী হোটেলে ঢুকে গুলি ছোড়া শুরু করে। কোনো কোনো জিম্মিকে অবশ্য বন্দুকধারীরাই  ছেড়ে দিয়েছে। অভিযান শেষে সেখানে ২৭ জনের মৃতদেহ পাওয়া গেছে বলে শান্তিরক্ষীদের বরাত দিয়ে জানিয়েছে রয়টার্স।

দেশটির কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে বিবিসি জানিয়েছে, মার্কিন মালিকানাধীন ওই হোটেলে আর কোনো জিম্মি  নেই। স্থানীয় এক নিরাপত্তা কর্মকর্তা জানিয়েছেন, অন্তত ১০ জন বন্দুকধারী ‘আল্লাহু আকবর’ ধ্বনি দিয়ে গুলি চালাতে চালাতে হোটেল ভবনে ঢোকে। তবে হোটেল পরিচালনাকারী কোম্পানি বলেছে, হামলাকারী ছিল দুজন। এক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, জঙ্গিরা কূটনৈতিক নম্বরপ্লেটধারী কয়েকটি গাড়িতে করে আসে। তারা হোটেলের বাইরে থাকা প্রতিবন্ধক ভেঙে ভিতরে ঢোকে। হোটেলের প্রবেশপথে নিরাপত্তারক্ষীরা তাদের থামানো মাত্র  গোলাগুলি শুরু হয়। পরে জিম্মিদের উদ্ধারে অভিযান শুরু করে মালির নিরাপত্তা বাহিনীর বিশেষ দল। ওই দেশটিতে সফররত বিদেশি, বিশেষত ব্যবসায়ী ও এয়ারলাইনসের কর্মীদের কাছে বেশ জনপ্রিয় হোটেলটি। দেশটিতে মাঝে-মধ্যেই জঙ্গি হামলার ঘটনা ঘটে। একাধিক জঙ্গি সংগঠনও আছে দেশটিতে। যেসব দেশে জাতিসংঘের শান্তি মিশন চলছে তার মধ্যে মালিই বিপজ্জনক। গত আগস্টে দেশটিতে সন্দেহভাজন ইসলামী বন্দুকধারীদের গুলিতে জাতিসংঘের দুজন কর্মীসহ অন্তত ১৩ জন নিহত হন। কট্টরপন্থিদের উত্থান ঠেকাতে ফ্রান্স তার সাবেক উপনিবেশ মালিতে ২০১৩ সালে আল-কায়েদা ইন ইসলামিক মাগরেবের বিরুদ্ধে অভিযান চালায়।

এদিকে ফ্রান্স কর্তৃপক্ষ জানায়, জিম্মিদের মধ্যে তাদের দেশের ১২ জন বিমান ক্রু ছিলেন। তাদের উদ্ধার করা হয়েছে। হোটেলে অবস্থানরত অন্যদের মধ্যে ছিল তুরস্ক এয়ারলাইনসের ছয় কর্মী, ২০ ভারতীয় এবং ১০ চীনা নাগরিক। রাতে অভিযান শেষ হওয়ার পর নিরাপত্তা বাহিনী পুরো হোটেল ঘিরে রেখেছে। এএফপি, বিবিসি, রয়টার্স

সর্বশেষ খবর