সোমবার, ২৩ নভেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা

সাকা-মুজাহিদের দাফন

সাইদুল ইসলাম, রাউজান (চট্টগ্রাম) থেকে ফিরে ও কামরুজ্জামান সোহেল, ফরিদপুর

সাকা-মুজাহিদের দাফন

কঠোর নিরাপত্তায় সাকার লাশ নেওয়া হয় রাঙ্গুনিয়ার গ্রামের বাড়িতে -বাংলাদেশ প্রতিদিন

মানবতাবিরোধী অপরাধে দণ্ডপ্রাপ্ত বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন কাদের (সাকা) চৌধুরীর মৃত্যুদণ্ডাদেশ কার্যকর করার পর তার লাশ ভাই সাইফুদ্দিন কাদের চৌধুরীর কবর লাগোয়া পশ্চিম পাশে দাফন করা হয়েছে। একটু অদূরেই মসজিদ লাগোয়া কবর আছে তার বাবা সাবেক স্পিকার এ কে এম ফজলুল কাদের চৌধুরীর। ঢাকা থেকে সরাসরি গতকাল সকাল ৯টার দিকে লাশ গহিরায় গ্রামের ‘বক্সে আলী চৌধুরী’ বাড়িতে এসে পৌঁছায়। এ সময় ছেলে হুম্মাম কাদের ও স্ত্রী ফারহাত কাদের চৌধুরী সাকা চৌধুরীকে ফের গোসল করাতে চাইলে পুলিশের হস্তক্ষেপে তা হয়নি। লাশ আসার পর ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের ডেপুটি জেলার মাজহারুল ইসলামের কাছ থেকে ছেলে হুম্মাম তার লাশটি গ্রহণ করেন। নিজ বাড়ি ‘বাইতুল বিলাল’-এর পাশে নতুন পারিবারিক কবরস্থানেই দাফন করা হয় সাকা চৌধুরীকে। জানাজা পড়ান হেফাজতে ইসলামের সিনিয়র নায়েবে আমির মুহিবুল্লাহ বাবুনগরী। লাশ আসার ৩০ মিনিটের মধ্যেই জানাজাসহ আনুষ্ঠানিকতা শেষ করে দাফনও সম্পন্ন করা হয়েছে। তবে লাশ আসার আগেই পরিবারের সদস্য স্ত্রী ফারহাত কাদের চৌধুরী, ছেলে ফাইয়াজ কাদের চৌধুরী, হুম্মাম কাদের চৌধুরী, মেয়ে ফারজিন কাদের চৌধুরীসহ পরিবারের অন্য সদস্যরা এসে হাজির হন। উপস্থিত চট্টগ্রামের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এএসপি) মুস্তাফিজুর রহমান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, সকাল ৯টায় সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর মরদেহ তার গ্রামের বাড়িতে এসে পৌঁছায়। জানাজাসহ আনুষ্ঠানিকতা শেষ করে ভাই সাইফুদ্দিন কাদের চৌধুরীর পাশেই তার লাশ দাফন করা হয়েছে। সকালের দিকে ১০ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়। এর আগেই রাত ৩টা ১০ মিনিটে রাউজান পৌর এলাকার গহিরায় সাকার পারিবারিক নতুন কবরস্থানে কবর খোঁড়া শুরু হয়। তবে নিরাপত্তার বিষয়টি চিন্তা করে বাড়ির মসজিদের পাশেই জানাজার অনুমতি দেওয়া হয়েছে।

বাড়ির জানাজায় নেই দুই সহোদর : জানাজায় উপস্থিত ছিলেন না তার দুই সহোদর বিএনপি নেতা গিয়াসউদ্দিন কাদের চৌধুরী ও জামালউদ্দিন কাদের চৌধুরী। তবে গিয়াস কাদের বিকালে চট্টগ্রাম নগরে গায়েবানা জানাজায় উপস্থিত ছিলেন। একই সঙ্গে চাচাতো ভাই ও আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য এ বি এম ফজলে করিম চৌধুরী চট্টগ্রামেই ছিলেন না। এ নিয়ে উপস্থিত মানুষের মধ্যে বেশ আলোচনার সৃষ্টি হয়েছে। নানা কানাঘুষাও করেছেন জানাজায় আগতরা। এ সময় দুই ছেলে ফাইয়াজ কাদের চৌধুরী, হুম্মাম কাদের চৌধুরীসহ পারিবারিক আÍীয়স্বজন উপস্থিত ছিলেন।

জানাজা পড়ালেন হেফাজতের নায়েবে আমির : সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর জানাজা পড়ালেন হেফাজতে ইসলামের সিনিয়র নায়েবে আমির মুহিবুল্লাহ বাবুনগরী। গতকাল সকাল সাড়ে ৮টার দিকে সাকার বাড়িতে একটি সাদা কার নিয়ে আসেন তিনি। এরপর মরদেহ বহনকারী অ্যাম্বুলেন্স নিজ বাড়িতে পৌঁছায়।

ছিলেন না রাজনৈতিক নেতারা : বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর গ্রামের বাড়িতে জানাজায় দলীয় কোনো নেতা-কর্মী উপস্থিত ছিলেন না। দীর্ঘদিন রাজনীতি করলেও জীবনাবসানের শেষ দিনে কেউ উপস্থিত না থাকায় জানাজায় উপস্থিত অনেকেই এসব মন্তব্য করেন। তবে শুধু পরিবারের সদস্যদের পাশাপাশি কিছু স্বজনের উপস্থিতি দেখা গেছে।

গায়েবানা জানাজা : গ্রামের বাড়িতে সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর দাফনের পর গতকাল বাদ আসর নগরীর প্যারেড মাঠে গায়েবানা জানাজা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরী, ছেলে ফাইয়াজ কাদের চৌধুরী ও হুম্মাম কাদের চৌধুরী এবং বিএনপি নেতা আবু সুফিয়ান, দক্ষিণ জেলা জামায়াতের আমির জাফর সাদেকসহ জামায়াত-শিবির ও বিএনপির বিপুলসংখ্যক নেতা-কর্মী উপস্থিত ছিলেন।

ফরিদপুরে মুজাহিদের দাফন সম্পন্ন : যুদ্ধাপরাদের দায়ে ফাঁসির দণ্ড কার্যকর হওয়া জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদের দাফন গতকাল সকাল ৭টা ২০ মিনিটে সম্পন্ন হয়েছে। ফরিদপুরের পশ্চিম খাবাসপুরের মাওলানা আবদুল আলী সড়কে অবস্থিত ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ক্যাডেট মাদ্রাসা গেট-সংলগ্ন স্থানে এ দাফন সম্পন্ন হয়। ফাঁসির রায় কার্যকরের পর ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে শনিবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে মুজাহিদের লাশবাহী অ্যাম্বুলেন্সটি ফরিদপুরের উদ্দেশে রওনা হয়। র‌্যাব, আর্মড পুলিশ, পুলিশের বেশ কয়েকটি টিম কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে মুজাহিদের কফিনবাহী গাড়িটি ফরিদপুরে নিয়ে আসে। ভোর ৪টার দিকে ছয়টি গাড়িতে করে মুজাহিদের স্ত্রী, ভাই, ছেলে-মেয়ে ও তাদের স্বজনরা ফরিদপুরে আসেন। ফরিদপুর-রাজবাড়ীর সীমান্তবর্তী ‘সাইনবোর্ড’ নামক এলাকা থেকে ভোর ৬টায় ফরিদপুরের জেলা প্রশাসন মুজাহিদের মরদেহ রাজবাড়ী প্রশাসনের কাছ থেকে বুঝে নেয়। ভোর ৬টা ৩৫ মিনিটে মুজাহিদের লাশবাহী গাড়ির বহরটি এসে পৌঁছায় পশ্চিম খাবাসপুরে। এরপর প্রশাসনের কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে সকাল ৭টায় মুজাহিদের জানাজার নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। মুজাহিদের লাশ এলাকায় পৌঁছার অনেক আগ থেকেই বিপুলসংখ্যক মানুষ সেখানে হাজির থাকলেও তাদের কাউকেই জানাজাস্থলে ঢুকতে দেননি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। শনিবার সন্ধ্যার পর থেকে যেসব ব্যক্তি ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ক্যাডেট মাদ্রাসার মসজিদে নামাজ পড়তে গিয়েছিলেন তারা গতকাল সকালে জানাজার পর সেখান থেকে বের হতে পেরেছেন। মসজিদে থাকা মুসল্লি, মাদ্রাসার কয়েকশ ছাত্র, জামায়াতের হাতেগোনা কয়েকজন নেতা এবং মুজাহিদের স্বজনদের জানাজার নামাজে শরিক হতে দেখা গেছে। বাইরের কাউকেই মাদ্রাসার ভিতরে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। জানাজায় ইমামতি করেন মুজাহিদের বড় ভাই আলী আফজাল মোহাম্মদ খালেছ। জানাজা শেষে ৭টা ২০ মিনিটে তার লাশ দাফন করা হয়। মুজাহিদের দাফন ঘিরে প্রশাসনের পক্ষ থেকে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। ইউনাইটেড ক্যাডেট মাদ্রাসায় যাওয়ার সব কটি রাস্তা বন্ধ করে দেয় পুলিশ। রাস্তার প্রতিটি প্রবেশমুখে মোতায়েন রাখা হয় বিপুলসংখ্যক পুলিশ। মুজাহিদের বাড়ি যাওয়ার মূল সড়কটি বন্ধ করে দেওয়ার ফলে গণমাধ্যমের কোনো কর্মী, এমনকি স্থানীয় এলাকাবাসীও ভিতরে ঢুকতে পারেননি। দাফনের শেষ পর‌্যায়ে বেশ কিছু ব্যক্তি মুজাহিদের বাসায় যেতে চাইলে পুলিশ তাদের বাধা দেয়। এ সময় কিছু ব্যক্তি ‘নারায়ে তাকবির, আল্লাহু আকবার’ স্লোগান দিলে পুলিশ তাদের ওপর মৃদু লাঠিচার্জ করে সেখান থেকে সরিয়ে দেয়। এ সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে হিমশিম খেতে দেখা গেছে। সকাল ৮টার দিকে মুজাহিদের বাড়ি ও ইউনাইটেড ক্যাডেট মাদ্রাসা থেকে পুলিশের বেশির ভাগ সদস্য চলে গেলে হাজারো মানুষ ভিড় জমান মুজাহিদের কবর ঘিরে। সকাল ১০টায় ইউনাইটেড ক্যাডেট মাদ্রাসা মাঠে অনুষ্ঠিত হয় ‘গায়েবানা জানাজা’। এতে বিপুলসংখ্যক মানুষ অংশ নেন। আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদের বড় ভাই আলী আফজাল মোহাম্মদ খালেছ সাংবাদিকদের কাছে তার প্রতিক্রিয়ায় বলেছেন, তার ভাইকে রাজনৈতিক কারণে এ দণ্ড দেওয়া হয়েছে। তার ভাই কখনো কোনো অন্যায় করেননি। এদিকে মুজাহিদের ফাঁসির দণ্ড কার্যকর হওয়ায় আনন্দ মিছিল ও মিষ্টি বিতরণ করেছেন জেলা আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা। দণ্ড কার্যকরের সঙ্গে সঙ্গে তারা আনন্দ-উল্লাস করতে করতে রাস্তায় নেমে আসে। গভীর রাতেও অনেক সাধারণ মানুষ নেচে-গেয়ে আনন্দ-উল্লাস করে। আওয়ামী লীগের আনন্দ মিছিলটি থানা রোডে দলীয় কার‌্যালয় থেকে প্রেসক্লাব হয়ে বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে ফের দলীয় কার‌্যালয়ে এসে শেষ হয়। মিছিল শেষে দলীয় নেতা-কর্মীরা দণ্ড কার্যকর হওয়ায় একে অপরকে মিষ্টিমুখ করান। মুজাহিদের দণ্ড কার্যকর হওয়ায় খুশি জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আবুল ফয়েজ শাহনেওয়াজ। তিনি বলেন, ‘মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় যে মুজাহিদ অপকর্ম করেছেন, তার সাজা হওয়ায় আমরা আনন্দিত। এ রায়ের মাধ্যমে ফরিদপুরবাসী কলঙ্কমুক্ত হয়েছে।’ মুজাহিদের মামলার অন্যতম সাক্ষী রণজিৎ নাথ ওরফে বাবুনাথ বলেন, ‘দীর্ঘদিন পর বুকভরে শ্বাস নিতে পারছি। এত দিন মনে হতো মুজাহিদের মৃত্যুদণ্ডের রায় কার্যকর হয়তো দেখে যেতে পারব না। কিন্তু দণ্ড কার্যকর হওয়ায় আমি যেন নতুন জীবন পেলাম।’

সারা দেশে আনন্দ মিছিল, মিষ্টি বিতরণ : দেশের শীর্ষ দুই একাত্তরের ঘাতক যুদ্ধাপরাধী সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী ও আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদের ফাঁসি কার্যকর হওয়ায় সারা দেশে গতকাল মুক্তিযোদ্ধাসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ এবং সংগঠন আনন্দ মিছিল, মিষ্টি বিতরণ করে বিজয়ের উৎসব করেছেন। আমাদের নিজস্ব প্রতিবেদক ও প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর-

চট্টগ্রাম : সাকা চৌধুরী ও আলী আহসান মুজাহিদের ফাঁসি কার্যকর হওয়ায় চট্টগ্রামে বিশাল আনন্দ সমাবেশ ও মিছিল করেছেন মুক্তিযোদ্ধা-পেশাজীবী জনতা। চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব চত্বরে পেশাজীবী সমন্বয় পরিষদ-চট্টগ্রামের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত সমাবেশ থেকে সাকা চৌধুরীর বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার সাক্ষী নুরুল আবসারকে ফুলেল সম্মাননা জানানো হয়। আনন্দ সমাবেশ থেকে যুদ্ধাপরাধীদের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত ও রাজনীতি নিষিদ্ধ, তাদের অতীত মন্ত্রিত্ব এবং সংসদ সদস্যপদ বাতিলের দাবি জানানো হয়। এই বিচার প্রক্রিয়া সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করে সাকা-মুজাহিদের ফাঁসি নিশ্চিত করতে পারায় রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, ট্রাইব্যুনাল, গণমাধ্যমসহ বিচার প্রক্রিয়ায় জড়িত সবাইকে ধন্যবাদ জানানো হয়। আনন্দ সমাবেশ শেষে জাতীয় পতাকা হাতে বিশাল মিছিল চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব চত্বর থেকে শুরু করে চেরাগী পাহাড় চত্বরে গিয়ে শেষ করা হয়। এ ছাড়া গণজাগরণ মঞ্চ চেরাগী পাহাড় মোড় থেকে আরেকটি আনন্দ মিছিল বের করে মোমিন রোড হয়ে শহীদ মিনারে গিয়ে শেষ করে। যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগসহ অন্যান্য সংগঠনের আয়োজনে বহদ্দার হাট মোড়ে আনন্দ মিছিল বের করা হয়। ছাত্রলীগ চট্টগ্রাম মহানগর কমিটিও আনন্দ মিছিল ও মিষ্টি বিতরণ করে।

ফরিদপুর : ফাঁসির রায় কার্যকরের সঙ্গে সঙ্গেই ফরিদপুরে আনন্দ মিছিল বের করেন আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা। রাত ১টার দিকে আওয়ামী লীগের কয়েক হাজার নেতা-কর্মী থানারোডের দলীয় কার‌্যালয় থেকে আনন্দ মিছিল বের করেন। মিছিলটি শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে ফের দলীয় কার‌্যালয়ে এসে শেষ হয়। পরে উপস্থিত নেতা-কর্মীরা মিষ্টি খেয়ে আনন্দ-উল্লাস করেন।

যশোর : ফাঁসির রায় কার্যকর হওয়ায় গতকাল যশোর শহরে ট্রাকে করে মিষ্টি বিতরণ করেছে আওয়ামী লীগ। এ ছাড়া মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে সালাহউদ্দিন ও মুজাহিদের ফাঁসি কার্যকর হওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করে দুপুরে শহরে র‌্যালি বের করেন মুক্তিযোদ্ধারা। পরে শহরের দড়াটানা চত্বরে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তারা যুদ্ধাপরাধের দায়ে দণ্ডিত বাকিদের সাজাও দ্রুত কার্যকর করার দাবি জানান।

দিনাজপুর : মুজাহিদ-সাকার ফাঁসির দণ্ড কার্যকর হওয়ায় দিনাজপুরে বিশাল আনন্দ মিছিল করেছে মুক্তিযোদ্ধা ও স্বেচ্ছাসেবক লীগ। সকালে পৃথকভাবে বের করা এ আনন্দ মিছিল প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে।

খাগড়াছড়ি : আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের উদ্যোগে গতকাল বিকাল সাড়ে ৪টায় খাগড়াছড়ি পৌর শহরে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের রায় কার্যকর করায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানিয়ে বিজয় মিছিল বের করে। মিছিলটি শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে দলীয় কার‌্যালয়ের সামনে সমাবেশে অংশ নেয়।

বরিশাল : মুজাহিদ-সাকার ফাঁসির দণ্ড কার্যকর হওয়ায় বরিশালে আনন্দ মিছিল এবং মুলাদীতে মিষ্টি বিতরণ হয়েছে। রায় কার্যকর হওয়ার পর পরই এ মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি নগরীর প্রধান সড়কগুলো প্রদক্ষিণ করে। একই সময়ে মহানগর ছাত্রলীগও পৃথক একটি আনন্দ মিছিল বের করে। এ ছাড়া গতকাল মুলাদীতে আনন্দ মিছিল ও মিষ্টি বিতরণ করেছে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড। জনসাধারণসহ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার‌্যালয়, পৌর ভবনসহ বিভিন্ন দফতরে এ মিষ্টি বিতরণ করা হয়।

বগুড়া : মুজাহিদ-সাকার ফাঁসির দণ্ড কার্যকর হওয়ার আনন্দে বগুড়ায় মিছিল ও সমাবেশ করেছে জেলা আওয়ামী লীগ। দুপুরে মিছিল শেষে দলীয় কার‌্যালয়ের সামনে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

গোপালগঞ্জ : ফাঁসির রায় কার্যকর হওয়ায় গোপালগঞ্জে জেলা আওয়ামী লীগ, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগ, পৌর আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন সংগঠন আনন্দ মিছিল ও মিষ্টি বিতরণ করেছে। সকাল সোয়া ১০টায় স্থানীয় প্রেসক্লাবের সামনে থেকে জেলা আওয়ামী লীগের আনন্দ মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে চৌরঙ্গী মোড়ে গিয়ে শেষ হয়। পরে নেতা-কর্মীরা একে অপরকে মিষ্টি খাইয়ে আনন্দ-উল্লাস করেন। অন্যান্য উপজেলা সদরেও অনুরূপ কর্মসূচি পালিত হয়েছে।

টাঙ্গাইল : ফাঁসির রায় কার্যকর করায় টাঙ্গাইলে আনন্দ মিছিল ও মিষ্টি বিতরণ করেছে জেলা আওয়ামী লীগ। সকালে নিরালা মোড় থেকে বিশাল আনন্দ মিছিলটি বের হয়ে শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে। মিছিল শেষে জেলা আওয়ামী লীগ কার‌্যালয়ে পথসভার আয়োজন করা হয়।

মাগুরা : ফাঁসির রায় কার্যকর হওয়ায় গতকাল দুপুরে মাগুরায় গণজাগরণ মঞ্চ আনন্দ মিছিল ও সমাবেশ করেছে। সরকারি হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজের সামনে থেকে বের হয়ে মিছিলটি শহর প্রদক্ষিণ শেষে আবার সেখানে এসে সমাবেশে মিলিত হয়।

মাদারীপুর : ফাঁসির রায় কার্যকর করায় মাদারীপুর আনন্দ মিছিল ও সমাবেশ করেছেন স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা। সকালে জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ এ কর্মসূচির আয়োজন করে।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া : ফাঁসির রায় কার্যকর হওয়ায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আনন্দ মিছিল করেছে ‘আমরা মুক্তিযোদ্ধার সন্তান’ ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শাখা। দুপুর ১টায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের পুরনো কাচারি প্রাঙ্গণ থেকে মিছিলটি বের হয়ে প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে প্রেসক্লাবের সামনে গিয়ে সমাবেশে মিলিত হয়। মিছিলে মুক্তিযোদ্ধার সন্তানরা উপস্থিত ছিলেন।

পটুয়াখালী : ফাঁসি কার্যকর হওয়ায় পটুয়াখালীতে আনন্দ মিছিল করেছে মুক্তিযোদ্ধা জেলা ইউনিট কমান্ড। বেলা ১১টায় মুক্তিযোদ্ধা সংসদ চত্বর থেকে মিছিল শুরু হয়ে শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে প্রেসক্লাব চত্বরে সমাবেশে মিলিত হয়। এ ছাড়া কলাপাড়ায় মুক্তিযোদ্ধারা মিষ্টি বিতরণ করেছেন। সকালে সুধী সমাজ, সাংবাদিক, ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষের মাঝে কলাপাড়া মুক্তিযোদ্ধা সংসদের উদ্যোগে এ মিষ্টি বিতরণ করা হয়।

সাঁথিয়া (পাবনা) : ফাঁসির রায় কার্যকর হওয়ায় সাঁথিয়ায় আওয়ামী লীগের উদ্যোগে আনন্দ মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে দলীয় কার‌্যালয়ে এসে শেষ হয়।

বাগেরহাট : ফাঁসির রায় কার্যকর হওয়ায় বাগেরহাট সদরসহ বিভিন্ন উপজেলায় আনন্দ মিছিল করেছে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ও ছাত্রলীগ। রাতে ফাঁসির রায় কার্যকরের পরপরই জেলা ছাত্রলীগের একটি আনন্দ মিছিল শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে গিয়ে পথসভায় মিলিত হয়। এ ছাড়া কচুয়া ও শরণখোলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ গতকাল সকালে আনন্দ মিছিল, সমাবেশ ও মিষ্টি বিতরণ করেছে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর