শিরোনাম
মঙ্গলবার, ২৪ নভেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা

খোঁজ জামায়াতি প্রতিষ্ঠানের

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের চিঠি অর্থ মন্ত্রণালয়ে, আর্থিক সেবা ও শিক্ষামূলক সংগঠনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা

রুকনুজ্জামান অঞ্জন

খোঁজ জামায়াতি প্রতিষ্ঠানের

সারা দেশে জামায়াত-শিবির নিয়ন্ত্রিত বিভিন্ন ব্যাংক, বীমা ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান, সেবামূলক ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং যে কোনো ধরনের সংস্থা থেকে জামায়াত ও শিবির সমর্থকদের চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। একই সঙ্গে যেসব প্রতিষ্ঠান জামায়াত-শিবিরের মাধ্যমে পরিচালিত হওয়ার প্রমাণ মিলবে সেগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ারও নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুপারিশ অনুযায়ী এ ধরনের নির্দেশনা দিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংককে চিঠি লিখেছে অর্থ মন্ত্রণালয়ের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ। গত শনিবার রাতে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ এবং বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের পরদিন রবিবার এ চিঠি পাঠানো হয়। বিষয়টি স্বীকার করে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব ড. এম আসলাম আলম বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ব্যাংক-বীমাসহ যেসব সেবামূলক ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে জামায়াত ও শিবিরের কর্তৃত্ব রয়েছে তাদের বিরুদ্ধেই ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে চিহ্নিত প্রতিষ্ঠানগুলোতে কারও বিরুদ্ধে জামায়াত-শিবিরের সংশ্লেষ প্রমাণ হলে তার বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে যে সুপারিশ পাঠানো হয়েছে, তার সঙ্গে জামায়াত ও শিবির সংশ্লেষ রয়েছে সন্দেহজনক এমন প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তি সম্পর্কে একটি বিশদ প্রতিবেদনে তথ্য দেওয়া হয়েছে। গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর মাধ্যমে তৈরি করা ২১৬ পৃষ্ঠার ওই প্রতিবেদনটির ছায়ালিপিও কেন্দ্রীয় ব্যাংকে পাঠানো হয়েছে। এর সঙ্গে ২ পৃষ্ঠার একটি সারসংক্ষেপ যুক্ত রয়েছে। চিঠির সঙ্গে পাঠানো ওই প্রতিবেদনে উলি­খিত প্রতিষ্ঠান বা জামায়াত-শিবির সমর্থক ব্যক্তিবর্গের নাম বা তালিকা সম্পর্কে কোনো  তথ্য জানাননি ব্যাংকিং সচিব। বিষয়টি অত্যন্ত ‘স্পর্শকাতর’ বলে এ ব্যাপারে তিনি কোনো মন্তব্য করতে অপারগতা জানান। তবে তিনি জানান, মানি লন্ডারিং ও জঙ্গি অর্থায়নে জড়িত এমন সন্দেজনক প্রতিষ্ঠানগুলোকে চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন যুগ্ম সচিবকে প্রধান করে বিভিন্ন সংস্থার সমন্বয়ে একটি কমিটি করা হয়েছে। ওই কমিটি সংশ্লিষ্ট বিষয়টি নিয়ে কাজ করছে।

চিঠির প্রাসঙ্গিকতায় আরও জানা গেছে, ব্যাংক-বীমা আর্থিক প্রতিষ্ঠান ছাড়াও সারা দেশে গড়ে ওঠা চিকিৎসালয়, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, এমনকি যে কোনো ধরনের সেবামূলক প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে জামায়াত-শিবিরের সংশ্লেষ পাওয়া গেলে একই ধরনের ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সরকারের ধারণা, ওইসব প্রতিষ্ঠান একদিকে যেমন জামায়াত ও শিবিরকে অর্থ সহায়তা দিয়ে পৃষ্ঠপোষকতা করছে, তেমনি সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানে কর্মরত জামায়াত-শিবির সমর্থক বা কর্মীদের একটি বড় অংশ সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্নকরার কাজে সক্রিয় রয়েছে। পাশাপাশি এসব কর্মকর্তা জঙ্গি অর্থায়নসহ সরকারবিরোধী বা দেশকে অস্থিতিশীল করতে পারে এমন কর্মকাণ্ডে পৃষ্ঠপোষকতা করতে পারে বলেও মনে করছে সরকার। এ ক্ষেত্রে জামায়াত-শিবিরসংশ্লিষ্ট পরিচালক, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নাম, ঠিকানা ও তাদের কর্মকাণ্ডের বিস্তারিত তথ্য অনুসন্ধান করে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। তবে এ ধরনের প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে এককভাবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক কীভাবে ব্যবস্থা নেবে সে ব্যাপারে নির্দেশনাদাতাদেরও সন্দেহ রয়েছে।

প্রশ্ন করলে ব্যাংকিং সচিব জানান, শিক্ষা ও সেবামূলক প্রতিষ্ঠানে কারা জামায়াত-শিবিরের সঙ্গে জড়িত তা এককভাবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পক্ষে চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হবে না। এটি পুলিশের এজেন্সিগুলোর কাজ। তাদের মাধ্যমেই এটি করতে হবে।

সর্বশেষ খবর