মঙ্গলবার, ২৪ নভেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা

এবার এলসি জালিয়াতির বিরুদ্ধে অভিযান

মোস্তফা কাজল

এবার এলসি জালিয়াতির বিরুদ্ধে অভিযান

মো. সাহাবুদ্দিন চুপ্পু

দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) কমিশনার (তদন্ত) মো. সাহাবুদ্দিন চুপপুু বলেছেন, শিগগিরই এমএলএম ও ব্যাংকের ব্যাক টু ব্যাক এলসি ব্যবসায় জড়িতদের বিরুদ্ধে সাঁড়াশি অভিযান শুরু করা হবে। তিনি গতকাল দুদকের প্রধান কার্যালয়ে আন্তর্জাতিক দুর্নীতি প্রতিরোধ দিবস সামনে রেখে বাংলাদেশ প্রতিদিনের সঙ্গে আলাপচারিতায় এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, দেশে মাল্টি লেভেল মার্কেন্টিং (এমএলএম) ব্যবসার নামে ব্যাঙের ছাতার মতো গজিয়ে উঠেছে অগণিত প্রতিষ্ঠান। এসব প্রতিষ্ঠান সাধারণ মানুষকে লোভ দেখিয়ে প্রতিনিয়ত হাতিয়ে নিচ্ছে কোটি কোটি টাকা। আবার কোনো কোনো প্রতিষ্ঠান সমবায় সমিতির নাম দিয়ে অনৈতিক কারবার করছে। মাঝেমধ্যে দেখা যায়, জেলা শহর ও উপজেলার বিভিন্ন স্থান থেকে সাইনবোর্ড টাঙিয়ে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে উধাও হচ্ছে কিছু ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান। এসব অবৈধ কর্মকাণ্ড দমন ও প্রতিরোধ করতে নামছে দুদক।

কমিশনার চুপপু বলেন, ‘দুর্নীতি দমনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাষণই আমাদের অনুপ্রেরণা। দুর্নীতি দমনে আমরা নিরন্তর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। দুর্নীতি দমন ব্যুরো থেকে দুর্নীতি দমন কমিশন প্রতিষ্ঠা করা হয় দুর্নীতি লাঘবের জন্য। দাতাগোষ্ঠীর চাপে ওই সময় (২০০৪ সালে) কমিশন গঠিত হয়। কিন্তু কমিশন গঠন করা হলেও এটিকে নিষ্ক্রিয় করে রাখা হয়। দৃশ্যমান কোনো কর্মকাণ্ডই সে সময় পরিলক্ষিত হয়নি। পরবর্তী সময়ে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে পরিবর্তন আসে। ওই সময় বিরাজনৈতিকীকরণে দুর্নীতি দমন কমিশনকে ব্যবহার করা হয়। এক-এগারোর সময় এতই আইনগত ত্র“টি ছিল যে সেগুলোর বোঝা এখনো আমাদের টানতে হচ্ছে। আমরা ওই জঞ্জালগুলো দূর করে প্রভাবমুক্ত হয়ে নিরপেক্ষভাবে কাজ করে যাচ্ছি। আমাদের কাছে পরিচয় মুখ্য নয়, অপরাধই মুখ্য।’ তিনি বলেন, ‘বিগত সরকারের আমলে যুবক নিয়ে হাজার হাজার কোটি টাকার দুর্নীতির কোনো অনুসন্ধানই করেনি তৎকালীন কমিশন। যুবকের মাধ্যমে হাজার হাজার মানুষ প্রতারণার শিকার হলেও একটি মামলাও করা হয়নি। এ ছাড়া ওই সময় ওরিয়েন্টাল ব্যাংক লুট হলে তারও মামলা হয়নি। আমরা এসব বিষয়ে অনুসন্ধান ও মামলা করেছি। এ ছাড়া বিভিন্ন ব্যাংক থেকে ব্যাক টু ব্যাক এলসির (লোকাল) নামে আর্থিক অনিয়মের তথ্য আমাদের কাছে রয়েছে। আমরা এসব এলসির উৎস ও মূল হোতাদের খুঁজে বের করব। এ সেক্টর থেকে দুর্নীতি প্রতিরোধ করব। এ ছাড়া সরকারি প্রতিষ্ঠানে অবৈধ নিয়োগ ও টেন্ডার-বাণিজ্যের তথ্য-উপাত্ত দুদকে আসতে শুরু করেছে। আমরা এ বিষয়েও সব ধরনের দুর্নীতি ও আর্থিক অনিয়ম প্রতিরোধ করব।’ মানি লন্ডারিং মামলার তদন্ত পুলিশ ও এনবিআর কতটুকু রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত থেকে করতে পারবে তা নিয়ে অনেকের সংশয় থাকলেও তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেছেন, ভালোর জন্যই এটি করা হয়েছে। অপর এক প্রশ্নের জবাবে দুদক কমিশনার চুপপুু বলেন, মালয়েশিয়ায় সেকেন্ড হোমে বিনিয়োগকারীদের বিষয়ে উলে­খযোগ্য কোনো অগ্রগতি নেই। এ বিষয়ে একটি খসড়া অনুমোদনের জন্য মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পাঠানো হয়েছে। তবে এর কোনো অগ্রগতি নেই। আলোচিত নারায়ণগঞ্জের সাত খুনের মামলার প্রধান আসামি নূর হোসেন সম্পর্কে তিনি বলেন, দুদকের প্রাথমিক অনুসন্ধানে তার বিরুদ্ধে প্রায় আট কোটি টাকার জ্ঞাত আয়বহিভর্‚ত সম্পদ অর্জনের প্রমাণ পাওয়া গেছে। এ কারণে দুদক তার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের বিবরণী দাখিলের নোটিস জারি করেছে। নূর হোসেন দুদকের নোটিসের জবাব দিলেও তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে, না দিলেও করা হবে।

সর্বশেষ খবর