বৃহস্পতিবার, ২৬ নভেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা

দহগ্রাম আঙ্গরপোতায় থ্রি-জি সেবা উদ্বোধন প্রধানমন্ত্রীর

নিজস্ব প্রতিবেদক

লালমনিরহাটের বিলুপ্ত ছিটমহল দহগ্রাম-আঙ্গরপোতায় থ্রিজি সেবা উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গতকাল দুপুরে গণভবনে প্রধানমন্ত্রী ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এ সেবার উদ্বোধন করেন। এ সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সব সময়ই প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষের উন্নয়নের জন্য কাজ করে। একসময় মোবাইল ফোন ব্যয়বহুল বলে শুধু শহরেই ব্যবহৃত হতো। ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় এসে বাংলাদেশে প্রথম ডিজিটাল টেলিফোন সহজলভ্য করেছি আমরা। আমরাই প্রথম মোবাইল সেবাকে প্রাইভেট সেক্টরে নিয়ে আসি। প্রথমে গ্রামীণফোন, অ্যাকটেল ও সেবাকে প্রাইভেটে ব্যবসা করার সুযোগ দিই। আজ আমরা থ্রি-জিতে চলে গেছি।’ এ সময় আঙ্গরপোতা-দহগ্রামের মতো এমন একটি প্রত্যন্ত এলাকায় এ সুযোগ তৈরি করে দেওয়ার জন্য গ্রামীণফোনকে ধন্যবাদ জানান প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপির আমলে মোবাইল ফোনের দাম ছিল ১ লাখ ২০ হাজার। কলরেট ছিল ১০ টাকা মিনিট। বিএনপির এক মন্ত্রী এটি চালাতেন। সেটিও আবার চট্টগ্রাম আর ঢাকায় কিছুটা সহজলভ্য ছিল। প্রধানমন্ত্রী বলেন, মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বেড়েছে এবং তাদের জীবনযাত্রার মানও উন্নত হয়েছে। এ জন্য তারা তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির সুবিধা ব্যবহার করে ভালোভাবে জীবন যাপন করতে চায়। সরকারও জনগণের এ প্রত্যাশা পূরণ করতে চায়। দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নে আইসিটি ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে এবং ক্রমান্বয়ে এর চাহিদাও বাড়ছে। এই প্রেক্ষাপটে ইন্টারনেট ও অন্যান্য ডিজিটাল সেবার গতি বৃদ্ধি করা প্রয়োজন। তিনি বলেন, সরকার ‘বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট’ স্থাপনে ইতিমধ্যে চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। ব্যান্ডউইথের গতি বৃদ্ধি এবং আইসিটির ব্যবহার বাড়াতে অন্যান্য প্রযুক্তিগত বিষয়েও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। ভিডিও কনফারেন্সে দহগ্রামবাসীর আমন্ত্রণ গ্রহণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘লালমনিরহাটে অনেক গিয়েছি, এ বছর কুড়িগ্রাম সফর করেছি। ভবিষ্যতে লালমনিরহাটের দহগ্রামে আসব। অবশ্যই আসব।’ দহগ্রাম-আঙ্গরপোতার উন্নয়ন সম্পর্কে শেখ হাসিনা বলেন, ‘সেখানে আমরা সুপেয় পানির ব্যবস্থ? করেছি। স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের (স্বাচিপ) পক্ষ থেকে প্রতি মাসে বিনা পয়সায় চিকিৎসা দিতে নামকরা ডাক্তাররা সেখানে যান। সারা দিন থাকেন। লালমনিরহাটের সঙ্গে যোগাযোগ সহজ করার জন্য তিস্তার ওপর ব্রিজ করেছি। এখন ওখানকার আশপাশের সঙ্গে যোগাযোগ সহজ হয়েছে। একসময় ব্রিজের ওপর দিয়ে রেল গেলে গাড়িকে দাঁড়িয়ে থাকতে হতো।’ কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাটের মঙ্গা সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘এ অঞ্চলের মঙ্গা দূর করেছে আওয়ামী লীগ সরকার। এখন আর কেউ একে মঙ্গাপীড়িত এলাকা বলে না। লালমনিরহাটের রেল জংশনটা মৃতপ্রায় ছিল। সেটি আমরা আবার নতুন করে দিচ্ছি। এটি কুড়িগ্রামেও যাবে। সহজ হবে যোগাযোগ।’ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে গণভবনে এ সময় প্রধানমন্ত্রী ছাড়াও ছিলেন গ্রামীণফোনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) রাজীব শেঠিসহ অন্য কর্মকর্তারা। অন্যদিকে দহগ্রাম থেকে ভিডিও কনফারেন্সে গণভবনের সঙ্গে সংযুক্ত ছিলেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট তারানা হালিম, মোতাহার হোসেন এমপি, অ্যাডভোকেট সফুরা বেগম রুমী এমপি, লালমনিরহাট পুলিশ সুপার টি এম মোজাহেদুল ইসলাম, পাটগ্রাম উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান রুহুল আমীন বাবুল, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নূর কুতুবুল আলমসহ গ্রামীণফোনের কর্মকর্তারা। এর মধ্য দিয়ে ডিজিটাল বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্ত হতে পারবেন ৬৮ বছরের বঞ্চনার শিকার এসব অধিবাসী।

‘স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা পেলেই সামাজিক মাধ্যম চালু’ : লালমনিরহাট প্রতিনিধি জানান, অনুষ্ঠান শেষে ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট তারানা হালিম সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে জানিয়েছেন, ফেসবুক, ভাইবারসহ অন্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলো বন্ধ রাখায় অপরাধ কর্মকাণ্ড কমে এসেছে। এসব সামাজিক মাধ্যম মানুষের জন্য উপকারী হলেও কিছু অপরাধীর কারণে ভালো মানুষগুলো আজ দুর্ভোগে পড়েছে। এ ভোগান্তি বেশি দিন নয়। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা পেলেই বন্ধ সব সামাজিক মাধ্যম খুলে দেওয়া হবে।

সর্বশেষ খবর