শিরোনাম
শনিবার, ২৮ নভেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা

নির্বাচনী উত্তাপে বড় দুই দল

চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছে আওয়ামী লীগ

রফিকুল ইসলাম রনি

দীর্ঘ সাত বছর পর নৌকা-ধানের শীষের লড়াই হচ্ছে আগামী ৩০ ডিসেম্বর। আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি অংশ না নিলেও পৌরসভা নির্বাচনে সরকারি দলকে ফাঁকা মাঠে গোল দিতে নারাজ। এবারই দলীয় প্রতীকে স্থানীয় সরকার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। ৩০ ডিসেম্বর দেশের ২৩৪টি পৌরসভায় অনুষ্ঠেয় ভোটে বিএনপি অংশ নেওয়ায় নির্বাচনকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে দলীয় প্রার্থীকে বিজয়ী করতে নেওয়া হয়েছে মহাপরিকল্পনা। এর অংশ হিসেবে সৎ, যোগ্য, মেধাবী, দলের জন্য নিবেদিত ও বঙ্গবন্ধুর আদর্শে বিশ্বাসী ক্লিন ইমেজের প্রার্থীকে মনোনয়ন দেওয়ার জন্য তৃণমূলের ওপর দায়িত্ব ছেড়ে দিয়েছেন দলের হাইকমান্ড। গত বৃহস্পতিবার রাতে আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদ ও সংসদীয় বোর্ডের সভায় প্রতিটি পৌরসভায় একক প্রার্থী চূড়ান্ত করতে সংশ্লিষ্ট জেলা-উপজেলা ও পৌরসভার সভাপতি-সম্পাদক এবং স্থানীয় দলীয় এমপির সমন্বয়ে একক মেয়র প্রার্থী চূড়ান্ত করে আগামী ৩০ নভেম্বরের মধ্যে দলীয় কার্যালয়ে জমা দিতে বলা হয়েছে। যে এলাকায় সর্বসম্মত একক প্রার্থী মনোনয়নে ব্যর্থ হবে সেখানে দলীয় সব প্রার্থীর নাম অন্তর্ভুক্ত করে কেন্দ্রে জমা দিতে বলা হয়েছে। স্থানীয় নির্বাচনে দলের প্রার্থী মনোনয়নে দলের গঠনতন্ত্রে সুনির্দিষ্ট নিদের্শনা না থাকায় সংসদীয় বোর্ডের আদলে ‘মনোনয়ন সিলেকশন বোর্ড’ গঠিত হয়েছে। এ কমিটিতে আওয়ামী লীগের সংসদীয় বোর্ডের ১২ সদস্যের সঙ্গে আরও ৫ জনের অন্তর্ভুক্ত হবেন। তৃণমূল থেকে আসা নামগুলো আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় তিন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদকরা বাছাই করে মনোনয়ন সিলেকশন বোর্ডে জমা দেবেন। ওই সিলেকশন বোর্ড একক প্রার্থী চূড়ান্ত করে দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনার স্বাক্ষরিত মনোনয়নপত্র সংবলিত চিঠি ইস্যু করবেন। দলীয় সূত্র মতে, পৌরসভা নির্বাচনে বিএনপিকে নিয়ে মাঠে লড়াই করতে চায় আওয়ামী লীগ। এতে আওয়ামী লীগ যেমন সত্যিকারের সাংগঠনিক শক্তি যাচাইয়ের সুযোগ পাবে, তেমনি সরকারের গ্রহণযোগ্যতাও যাচাই করা হবে। গত বৃহস্পতিবার আওয়ামী লীগ কার্যনির্বাহী সংসদের সভায় দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সব রাজনৈতিক দল নির্বাচনে অংশগ্রহণ করুক। এতে গণতন্ত্রের ভিত্তি মজবুত হয়। স্থানীয় সরকার নির্বাচনের মাধ্যমে সে সুযোগ সৃষ্টি হবে। এদিকে পৌরসভা নির্বাচনে অংশগ্রহণ তৃণমূলে সংগঠনকে শক্তিশালী করবে বলে মনে করছে আওয়ামী লীগ। সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের প্রচারণা সারা দেশে নিজেদের জনপ্রিয়তা বাড়াবে বলে মনে করছে দলটি। এ জন্য প্রথমবারের মতো দলীয়ভাবে স্থানীয় সরকারের এ নির্বাচনে দলটির কেন্দ্রীয় ও জাতীয় নেতারা ব্যাপকভাবে মাঠে নামবেন। মাঠে নামবেন এমপিরাও। নির্বাচন কমিশনের বিধিতে বর্তমানে এমপি-মন্ত্রীদের নিষেধাজ্ঞা থাকলেও এমপিরা মাঠে নামতে চান। বৃহস্পতিবারের বৈঠকে এমন সিদ্ধান্ত নেন সরকার দলীয় এমপিরা। এ জন্য কাল রবিবার নির্বাচন কমিশনে ৮ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল বর্তমান বিধিমালা সংশোধনের জন্য অনুরোধ জানাবেন। দলের একাধিক নেতা জানান, পৌরসভা নির্বাচনের মধ্য দিয়ে তৃণমূলে নিজেদের জনপ্রিয়তা আর সাংগঠনিক শক্তিও ঝালাই করে নিতে চায় আওয়ামী লীগ। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে তৃণমূলে নেতা-কর্মীরা সক্রিয় হবে। এর মধ্য দিয়ে সংগঠনে গতি বাড়বে ও দল শক্তিশালী হবে। আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ বলেন, ৫ জানুয়ারি জাতীয় নির্বাচনে না এসে বিএনপি যে ভুল করেছিল, পৌর নির্বাচনে সে ভুল করবে না। বিএনপি নির্বাচনে অংশ নিলে মাঠে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে। এ জন্য আমরা সারা দেশে একক মেয়র প্রার্থী নিশ্চিত করতে নির্দেশনা দিয়েছি। আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী জাফর উল্লাহ বলেন, বিএনপি নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করায় সরকারের জনপ্রিয়তার যাচাইয়ের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। মাঠে শক্তিশালী প্রতিপক্ষ না থাকলে একতরফা কোনো কাজই ভালো হয় না। তাই নির্বাচনকে আমরা চ্যালেঞ্জ হিসেবেই নিয়েছি।

সর্বশেষ খবর