সোমবার, ৩০ নভেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা

ভোটের লাস্ট চান্স ৩০ ডিসেম্বর

সিইসি

নিজস্ব প্রতিবেদক

ঘোষিত পৌর তফসিলে নির্বাচন করার আইনি বাধ্যবাধকতা তুলে ধরে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ জানিয়েছেন ৩০ ডিসেম্বর ভোটের ‘লাস্ট চান্স’। তবে আজ পুরো কমিশনের সঙ্গে আলোচনা করেই আনুষ্ঠানিক সিদ্ধান্ত জানাবে নির্বাচন আয়োজনকারী সাংবিধানিক সংস্থাটি। গতকাল ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ, বিরোধী দল জাতীয় পার্টি ও বিএনপির কয়েকটি দাবি নিয়ে বৈঠকের পর এ কথা বলেন সিইসি। কাজী রকিবউদ্দীন বলেন, যথেষ্ট সময় রেখেছি, যথেষ্ট সময় দেওয়া হয়েছে। ৩০ ডিসেম্বর ভোট করার লাস্ট চান্স। বিএনপি পৌর ভোট ১৫ দিন পেছানোর দাবি জানিয়েছে। এক্ষেত্রে আইন সংশোধনেরও পরামর্শ দেয় দলটি। সেই সঙ্গে নেতা-কর্মীদের মুক্তি ও এমপিদের প্রচারণার সুযোগ না দেওয়ার জন্যে বলেছে ইসিকে। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ দলীয় পৌর নির্বাচনী সংসদ সদস্যদের প্রচারণার সুযোগ দিতে দাবি জানায়। বিরোধী দল জাতীয় পার্টি মনোনয়ন দাখিলের সময় অন্তত ১০ দিন বাড়ানো ও এমপিদের প্রচারণার সুযোগ দিতে বলেছে। প্রধান তিন দলের প্রতিনিধির সঙ্গে সিইসি কাজী রকিবউদ্দীন ও ইসি সচিব মো. সিরাজুল ইসলাম বৈঠক করলেও অন্য চার নির্বাচন কমিশনার এ সময় রাখা হয়নি। বিকালে শেরেবাংলা নগরের ইসি কার্যালয় ছাড়ার সময় সাংবাদিকদের কাছে সার্বিক বিষয়ে কথা বলেন সিইসি কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ। তিনি বলেন, আমরা সবার কথা শুনেছি। নিবন্ধিত দলগুলো যেসব দাবি করেন তা গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা হয়। অন্য নির্বাচন কমিশনারদের নিয়ে আজ আলোচনা করে সিদ্ধান্ত জানানো হবে। ভোট পেছাতে বিএনপির দাবির বিষয়ে কাজী রকিবউদ্দীন জানান, জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারিতে হালনাগাদ তালিকা প্রকাশ, বিশ্ব ইজতেমা ও পরীক্ষার কারণে ডিসেম্বরে ভোট করার বাধ্যবাধকতার বিষয়টি সবার কাছে জানা। তবুও তফসিলে যথেষ্ট সময় রাখা হয়েছে। যদি ৩০ ডিসেম্বর ভোট করতে পারি তা হবে লাস্ট চান্স। তা না হলে আইন ভঙ্গ হয়ে যাবে। ভোট যদি পেছাতে না পারি তার কারণ কী জানিয়ে দেব আমরা। আইনের প্রতি প্রদ্ধা রেখেই ডিসেম্বরের মধ্যে ভোট করা হচ্ছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।

বিএনপির দলীয় নেতা-কর্মীদের মুক্তির বিষয়ে সিইসি জানান, তা আইনি বিষয়। আদালত রয়েছে এ সংক্রান্ত বিষয় দেখতে। আদালত যা নির্দেশনা দেবে তা মানতে হবে। কাউকে অযথা যেন কেউ হয়রানি না করে, কেউ যদি হয়রানির শিকার হয়-তা না করার আহ্বান থাকবে সংশ্লিষ্টদের কাছে। এমপিদের প্রচারণার সুযোগ দিতে আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির দাবির বিষয়ে কাজী রকিব বলেন, সার্বিক বিষয়ে কমিশনের সঙ্গে আলোচনা করতে হবে। তারপর কমিশন সভায় সিদ্ধান্ত নিয়ে জানানো হবে।

আরও ছয় দল ইসিতে, এখন ১৮ দল : খেলাফত মজলিস, বাংলাদেশ তরিক ফেডারেশন, এলডিপি, বাসদ ও বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি গতকাল পৌর মেয়র পদে মনোনীত ব্যক্তির তালিকা জমা দিয়েছে। এ নিয়ে ১৮টি দল নির্বাচনে অংশ নেওয়ার কথা জানিয়েছে। এখন মনোনয়নপত্র দাখিলের অপেক্ষা। বর্তমানে ৪০টি নিবন্ধিত দল রয়েছে। ৩ ডিসেম্বর কটি দল অংশ নেবে তা চূড়ান্ত হবে। ইতিমধ্যে অন্তত দেড় ডজন দল তাদের অংশগ্রহণের সুযোগ নিশ্চিত করেছে। ২৪ নভেম্বর পৌরসভা নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরই দলগুলোকে একক প্রার্থী মনোনয়ন দেওয়ার বিধান উল্লেখ করে চিঠি দেয় ইসি। নতুন বিধি অনুযায়ী, দলের সভাপতি/সাধারণ সম্পাদক/সমপদাধিকারী/ক্ষমতাপ্রাপ্ত ব্যক্তির প্রত্যয়নে দলকে প্রার্থী মনোনয়ন দিতে হবে। ক্ষমতাপ্রাপ্ত ব্যক্তির ক্ষেত্রে গত ২৮ ডিসেম্বরের মধ্যে রিটার্নিং কর্মকর্তা ও ইসিকে দলের চিঠি দেওয়ার কথা বলা হয়েছিল। ইসি কর্মকর্তারা জানান, এখন পর্যন্ত কোনো দল কেন্দ্রের বাইরে ক্ষমতাপ্রাপ্ত ব্যক্তি নির্ধারণ করেনি। সেক্ষেত্র সভাপতি বা সাধারণ সম্পাদকের মনোনয়নে ৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় রয়েছে দলগুলোর। প্রথমবারের মতো দলভিত্তিক পৌর নির্বাচনে মেয়র পদে দল মনোনীত প্রার্থী দলীয় প্রত্যয়নের পাশাপাশি ১০০ ভোটারের সমর্থন তালিকা দিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার সুযোগ রয়েছে। মেয়র পদে দলভিত্তিক হলেও সাধারণ ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে নির্দলীয় ভোট হবে।

সর্বশেষ খবর