মঙ্গলবার, ১ ডিসেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা
বাংলাদেশের হাইকমিশনারকে তলব

গণহত্যায় সম্পৃক্ততা অস্বীকার পাকিস্তানের

কূটনৈতিক প্রতিবেদক

যুদ্ধাপরাধী সাকা চৌধুরী ও আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদের ফাঁসির আদেশ কার্যকরের পর প্রতিক্রিয়া দেখানো পাকিস্তান এবার একাত্তরে গণহত্যায় সম্পৃক্ততা অস্বীকার করেছে। ঢাকার পাকিস্তানি হাইকমিশনারকে তলবের পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে ইসলামাবাদে বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনারকে গতকাল তলব করে এ দাবি করেছে পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

ইসলামাবাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে এক বিবৃতিতে মুখপাত্র সৈয়দ কাজী খলিলুল্লাহ জানিয়েছেন, ‘বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনারকে মন্ত্রণালয়ের দক্ষিণ এশিয়া ও সার্ক অনুবিভাগের মহাপরিচালক সোমবার তলব করেছিলেন। ২৩ নভেম্বর পাকিস্তানের হাইকশিনারকে তলব করে বাংলাদেশের দেওয়া নোট ভারবালের বক্তব্যকে অসার ও বাস্তবতাবিবর্জিত উল্লেখ করে পাকিস্তান সরকার প্রত্যাখ্যান করেছে। সেই সঙ্গে যুদ্ধকালের নৃশংসতা, গণহত্যা বা অপরাধের সঙ্গে পাকিস্তানকে কৌশলে জড়ানোর অভিযোগও প্রত্যাখ্যান করেছে। এর কিছুই সত্য নয়’ বলে দাবি করে পাকিস্তান। ইসলামাবাদের মুখপাত্র আরও দাবি করেন, ‘বাংলাদেশের সঙ্গে পাকিস্তানের ভ্রাতৃত্বপূর্ণ সম্পর্ক প্রতিষ্ঠায় আমাদের আকুল আবেদনের পরও পাকিস্তানের কুৎসা রটাতে বাংলাদেশ সরকারের পদক্ষেপ নিন্দনীয়। পাকিস্তান বিশ্বাস করে, দুই দেশের জনগণ শুধু সম্পর্ক রক্ষাই নয়, বন্ধুত্ব ও ভ্রাতৃত্বপূর্ণ সম্পর্ক আরও বৃদ্ধির আশা করে। কিন্তু বাংলাদেশ সরকার দুঃখজনকভাবে এ প্রত্যাশাকে সম্মান জানাতে ব্যর্থ হয়েছে’, দাবি করে পাকিস্তান। মুখপাত্র সৈয়দ কাজী খলিলুল্লাহ আরও দাবি করেন, ‘বাংলাদেশ ১৯৭৪ সালের ত্রিদেশীয় চুক্তির ভুল ব্যাখ্যা করেছে। চুক্তির অংশ হিসেবে বাংলাদেশ ক্ষমাপ্রদর্শন করে বিচার প্রক্রিয়া এগিয়ে নেবে না বলে সম্মত হয়েছিল।’ সেই সঙ্গে ‘দুই দেশের জনগণের স্বার্থে বাংলাদেশ ও পাকিস্তান অতীত ভুলে শুভ কামনা, বন্ধুত্ব ও সম্প্রীতির পথে চলবে বলে পাকিস্তান আশা করে’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে পাকিস্তানের বিবৃতিতে। জানা যায়, সাকা চৌধুরী ও মুজাহিদের ফাঁসির রায় কার্যকরের পর এক বিবৃতিতে এ ঘটনায় গভীর উদ্বেগ ও ক্ষোভ প্রকাশ করে পাকিস্তান সরকার। তখন পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলা হয়, ‘আমরা গভীর উদ্বেগ ও ক্ষোভের সঙ্গে সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী ও আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদের দুর্ভাগ্যজনক মৃত্যুদণ্ডের ঘটনা লক্ষ্য করেছি। এ ঘটনায় আমরা গভীরভাবে অসন্তুষ্ট।’ এতে বলা হয়, ‘বাংলাদেশে ১৯৭১-এর ঘটনাবলি (মহান মুক্তিযুদ্ধ) নিয়ে ত্র“টিপূর্ণ বিচার প্রসঙ্গে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের যে প্রতিক্রিয়া আমরা লক্ষ্য করছি, তা আগের মতো আবার গুরুত্ব দিচ্ছি।’ এ বিবৃতির পর বাংলাদেশে নিযুক্ত পাকিস্তানের হাইকমিশনার সুজা আলমকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তলব করে তার কাছে কড়া প্রতিবাদপত্র তুলে দেন বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্র সচিব মিজানুর রহমান। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে বলা হয়, ‘এটি বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়। এ বিচার নিয়ে মন্তব্য করা নাক গলানোর শামিল। এটা দুঃখজনক’।

সর্বশেষ খবর