ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আনিসুল হক বলেছেন, তেজগাঁও ট্রাকস্ট্যান্ড ঘিরে একটি প্রভাবশালী চক্র গড়ে উঠেছে। তারা সেখানে অবৈধ দোকানপাট তুলে মাদক ব্যবসা করছে। এই প্রভাবশালী নেতা ও কালো টাকার ব্যবসায়ীদের উচ্ছেদ করতেই সেখানে অভিযান চালানো হয়েছিল। আর এতে তাদের টাকা তোলা বন্ধ হয়ে যাবে বলেই ঢিল মেরেছে। তারাই শ্রমিকদের উসকে দিয়েছে।
মেয়র বলেন, যারা হামলা ও ভাঙচুর চালিয়েছে তাদের খবর হয়ে যাবে। জড়িতের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। জনদুর্ভোগে ছাড় দেওয়া হবে না। গতকাল দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারের একটি রেস্তোরাঁয় অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। মেয়র বলেন, রবিবারের উচ্ছেদ অভিযান ছিল জায়গাটি পরিষ্কার করার জন্য। কিন্তু ঝামেলা হয়েছে যে, ওখানে অনেক প্রভাবশালী নেতা আছেন যাদের অবৈধ টাকা তোলা বন্ধ হয়ে যাবে। খবর আছে, ওখানে মাদক ব্যবসা হয়। আর এখনো ৭-৮টা দোকান আছে রেলওয়ের। ওই দোকানগুলোর ব্যাপারে রেলওয়ের ডকুমেন্ট তৈরি করে আমার কাছে নিয়ে আসছেন কয়েকজন নেতা। এমন স্বার্থান্বেষী আরও কিছু নেতা সেদিন বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছেন। যারা হামলা করেছেন তাদের ধরার জন্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও পুলিশকে অনুরোধ করেছি। কেউ ছাড় পাবে না। যারা এখন শক্তি দেখানোর চেষ্টা করছেন, তাদের শক্তি মাদকের, চাঁদাবাজির টাকার। এ শক্তি থাকবে না। তেজগাঁওয়ের রাস্তা ফাঁকা হয়ে গেছে, সেখানে আর কখনো ট্রাক থাকবে না। আনিসুল হক বলেন, মহানগরীর উন্নয়নে কাউন্সিলরদের নিয়ে আমরা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। নগরীর রাস্তা ফুটপাথ জবর দখল হতে দেব না, রাস্তার ওপর শত শত গাড়ি দাঁড় করিয়ে রাখতে দেব না। কারণ সরকার চায় ঢাকা শহর সুন্দর ও পরিচ্ছন্ন হোক। আর সেই জায়গায় আমরা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হয়ে কাজ করে যাব। মেয়র বলেন, অবৈধ পার্কিং ও দোকানপাট সরিয়ে নিতে গত তিন মাস ধরে আলোচনা করছি। এ জন্য আমি এ এলাকায় আটবার এসেছি। রেলমন্ত্রী, নৌমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এসেছেন। আমরা পরিবহন মালিকদের সঙ্গে কমপক্ষে ১০ বার মিটিং করেছি। এখানে পরিবহন মালিকরাই বলেছেন, দখলদারদের জায়গা পরিষ্কার করে একটি ভালো ট্রাক টার্মিনাল তৈরি করা হোক, আমরা রাস্তায় গাড়ি রাখব না। আমরা সেটিই করতে চেয়েছি। তেজগাঁও মডার্ন ট্রাকস্ট্যান্ড তৈরি হবে উল্লেখ করে মেয়র আনিস বলেন, কিছু দিনের মধ্যেই ঢাকা শহরকে সিঙ্গাপুরের মতো মনে হবে। কারওয়ান বাজার সরানোর জন্য ৩৩১ কোটি টাকা ব্যয়ে তিনটি মডার্ন বাজার তৈরি করা হয়েছে। ডিএনসিসির ৩২ কিলোমিটার এলাকাকে ইউলুপের আওতায় আনার চেষ্টা করা হচ্ছে। আগামী জুন মাসের মধ্যে গুলশান, বারিধারা, বনানী ও নিকেতন থেকে মেইন রোড ধরে টঙ্গী পর্যন্ত এক হাজার সিসি ক্যামেরা বসানো হবে। এর কারণে এলাকায় সুই পড়লেও ধরে ফেলতে পারব আমরা। এটা হবে অনেক নিরাপদ।