মঙ্গলবার, ১ ডিসেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা

আ জ ম নাছিরের চ্যালেঞ্জ

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম

আ জ ম নাছিরের চ্যালেঞ্জ

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন দায়িত্ব গ্রহণের ১০০ দিনের মূল্যায়ন অনুষ্ঠানে নিজের অবস্থান পরিষ্কার করতে গিয়ে বলেছেন, ‘চ্যালেঞ্জ করে বলছি, দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে একচুল পরিমাণও ত্র“টি করিনি। অনিয়মকে প্রশ্রয় দিইনি, চালিয়েছি শুদ্ধি অভিযান, বন্ধ করেছি বিভিন্ন বিভাগের অনিয়ম-দুর্নীতি। শক্ত হাতে মনিটরিং করা হচ্ছে সবকিছু। গতকাল দুপুরে চসিকের কে বি আবদুস সাত্তার মিলনায়তনে ‘দায়িত্ব গ্রহণ-পরবর্তী ১০০ দিবসে গৃহীত উন্নয়ন ও সেবা কার্যক্রম অবহিতকরণ নিমিত্ত’ সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা কাজী মোহাম্মদ শফিউল আলম, সচিব রশিদ আহমদ। লিখিত বক্তব্য শেষে মেয়র সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন। বছরজুড়ে থাকা যানজট প্রসঙ্গে মেয়র বলেন, যানজট নিরসনে ট্রাফিক বিভাগ ব্যর্থ। কয়েকটি সড়ক আছে, যেখানে যানজট হওয়ার কথা নয়। কিন্তু ঘণ্টার পর ঘণ্টা সেসব মোড় ও সড়কে যানজট লেগেই থাকে। এটি নিরসনে আমি খুব শিগগিরই চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি) কমিশনার ও ট্রাফিক বিভাগকে নিয়ে সভা করব।

ফুটপাথ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বিষয়টি আমাদের খুব ভাবায়। এটি নিয়ে আমরা পরিপূর্ণ একটি পরিকল্পনা করেছি। নির্দিষ্ট ফ্রেমের মধ্যেই চলে আসবে হকাররা। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিতে আগামীকাল হকার সংগঠনগুলোর সঙ্গে বৈঠকে বসব। আমার বক্তব্য স্পষ্ট- ফুটপাথ পথচারীদের জন্য। এটি তাদের জন্য ছেড়ে দিতে হবে। তবে এ ক্ষেত্রে হকারদের পুনর্বাসনের বিষয়টিও বিবেচনায় রয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত দাবি করে চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের এই সাধারণ সম্পাদক বলেন, সম্প্রতি আমি সিএমপি কমিশনার, গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর চট্টগ্রাম বিভাগীয় প্রধানদের নিয়ে সভা করেছি। সেখানে আমার অবস্থান পরিষ্কার করে বলেছি, আইন স্বাভাবিক গতিতে চলবে। যতক্ষণ এই চেয়ারে আছি ততক্ষণ আমি কাউকে চিনি না। যে দলেরই হোক, অনিয়ম করলে ছাড় নয়। আবর্জনা নিরসনে নতুন নিয়ম প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ২২ আগস্ট থেকে পত্রিকায় বিজ্ঞাপন প্রকাশ, ২০টি গাড়ির মাধ্যমে মাইকিং, ইতিমধ্যে ২০ লাখ লিফলেট বিতরণসহ নানাভাবে প্রচার চালানো হচ্ছে। তবে নগরবাসীর কাছ থেকে আশানুরূপ সহযোগিতা পাচ্ছি না। তবু হতাশ নই, ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত এক কোটি লিফলেট বিতরণ করা হবে। আগামী ১ জানুয়ারি থেকে নিয়ম না মানলে স্পট জরিমানা, মামলা ও আটক পর্যন্ত করা হবে। দায়িত্ব গ্রহণের পর নিজের উদ্যোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বিভিন্ন বিভাগ ও শাখায় কাজে অবহেলা, অনিয়ম, উদাসীনতার কারণে ৩১ কর্মচারীকে চাকরিচ্যুত, শাখাপ্রধান নিয়োগে মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব, রাতে আবর্জনা অপসারণ কাজ তদারককারীদের মোটরসাইকেল প্রদান, দুটি পে-লোডার ভাড়া করা, ২৫টি এসএস কনটেইনার কেনা, পরিচ্ছন্নতা বিভাগের সবাইকে রেইনকোট ও সেবকদের রেডিয়েন্ট জ্যাকেট দিয়েছি।

এ ছাড়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ৪৪০ জনকে সিলেকশন গ্রেড ও টাইমস্কেলের ব্যবস্থা নেওয়া এবং স্বাস্থ্য কেন্দ্রের চিকিৎসা ফি ৩০ থেকে কমিয়ে ১০ টাকা করা হয়েছে। তিনি বলেন, দায়িত্ব গ্রহণ করে চসিকের বন্ধ রং ফ্যাক্টরি চালু করা, নগর ভবনে ফাইবার অপটিকের মাধ্যমে লোকাল এরিয়া নেটওয়ার্ক (এলএএন) স্থাপন, জ্বালানি অপচয় রোধে ৪০টি গাড়িতে ভেহিক্যাল ট্র্যাকিং সিস্টেম চালু, আদালত ভবন ওয়াইফাই জোনে রূপান্তর, ১ লাখ ৪২ হাজার হোল্ডিংয়ের ডাটাবেজ হালনাগাদ, ১১ হাজার হোল্ডিংয়ের নতুন ডাটা এন্ট্রির কাজ শুরু, আগামী ছয় মাসের মধ্যে ১৬টি মোড় এবং চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালকে ওয়াইফাইয়ের আওতায় আনার পরিকল্পনা আছে। এই সময়ে চসিকের আয় প্রসঙ্গে নাছির বলেন, পৌরকর আদায় হয়েছে প্রায় ৫৫ কোটি ৮ লাখ, ট্রেড লাইসেন্স খাতে ১১ কোটি ৭৮ লাখ ও ভ‚মি খাতে ৫ কোটি ৯৭ লাখ টাকা। আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ৪৮ কোটি ৭০ লাখ ১৮ হাজার ৭১০ টাকা বেশি রাজস্ব এসেছে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর