শিরোনাম
রবিবার, ৬ ডিসেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা

বিএনপির পাঁচ প্রার্থী বাতিল

মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই শেষ আজ

নিজস্ব প্রতিবেদক

ঋণখেলাপি, ব্যক্তিগত তথ্য গোপন, মামলা ও স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থীদের সমর্থনসূচক ভোটারের স্বাক্ষর না মেলায় বিভিন্ন পৌরসভায় মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাইয়ে অনেক প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে। গতকাল অনেক পৌরসভায় আংশিক মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই করেছেন সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং অফিসাররা। আজ বাকি মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই করার কথা রয়েছে। এ ছাড়া কয়েকটি পৌরসভায় মেয়র পদে একক প্রার্থী বহাল থাকায় অনেকেই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় মেয়র পদে বিজয়ী হতে পারেন বলে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন।

পৌরসভা নির্বাচনে বিভিন্ন অভিযোগে অনেক মেয়র প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল করেছেন রিটার্নিং কর্মকর্তারা। এর মধ্যে বিএনপি-জামায়াতসহ স্বতন্ত্র একাধিক প্রার্থী রয়েছেন। এ পরিস্থিতিতে কোথাও কোথাও আওয়ামী লীগের প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হতে পারেন। প্রাথমিক তথ্যমতে, গতকাল মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাইয়ে বিএনপি মনোনীত চার মেয়র প্রার্থীসহ বেশ কিছু প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল করেছেন রিটার্নি অফিসার।

ফেনীতে বিএনপির দুই মেয়র প্রার্থীসহ তিনজনের প্রার্থিতা বাতিল হয়েছে। সদর ও পরশুরাম পৌরসভা নির্বাচনে বিএনপি সমর্থিত দুই মেয়র প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল করেছেন রিটার্নিং কর্মকর্তা। প্রার্থিতা বাতিল করা হয়েছে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার বিএনপির মেয়র প্রার্থী নয়ন বাঙালির। পরশুরাম পৌরসভায় আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থীর বিপক্ষে আর কোনো প্রতিদ্ব›দ্বী না থাকায় বর্তমান মেয়র নিজাম উদ্দিন চৌধুরী সাজেল রয়েছেন বিজয়ের পথে। অন্যদিকে দাগনভ‚ঞা পৌরসভায় মেয়র পদে আওয়ামী লীগ প্রার্থী ওমর ফারুক খান ও বিএনপি প্রার্থী কাজী সাইফুর রহমান স্বপনের মনোনয়নপত্র বৈধ বলে জানিয়েছেন রিটার্নিং কর্মকর্তা। চাঁদপুরের মতলব উত্তরের ছেংগারচর পৌরসভায় বিএনপি থেকে মেয়র পদে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছিলেন সারোয়ারুল আবেদীন এবং আওয়ামী লীগ থেকে বর্তমান মেয়র রফিকুল ইসলাম জজ। সারোয়ারুল আবেদীনের সব কাগজপত্র না থাকায় তার মনোনয়নপত্র বাতিল করেন রিটার্নিং কর্মকর্তা। এ কারণে সেখানে এখন শুধু আওয়ামী লীগ থেকে মনোনীত মেয়র প্রার্থী রফিকুল ইসলাম জজ একক প্রার্থী হিসেবে রয়েছেন। তিনিও বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়ার পথে। কুষ্টিয়ার পাঁচ পৌরসভার মধ্যে চারটিতে মেয়র প্রার্থীদের যাচাই-বাছাই শেষে পাঁচজনের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে। কুষ্টিয়া পৌরসভায় সাত মেয়র প্রার্থীর মধ্যে বাতিল হয়েছে জাতীয় পার্টির কে এম জাহিদ, ইসলামী আন্দোলনের দেওয়ান আবদুল খালেক ও বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থী শামীমুল হাসান অপু; মিরপুরে সাত প্রার্থীর মধ্যে বাতিল হয়েছে বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থী সাইফুল হক খান ফারুক চৌধুরী; ভেড়ামারায় ছয় প্রার্থীর মধ্যে বাতিল হয়েছে স্বতন্ত্র আজগর আলীর মনোনয়নপত্র। তবে খোকসা পৌরসভায় মেয়র পদে পাঁচটি মনোনয়নের সব কটিই বৈধ বলে ঘোষণা করা হয়। রাঙামাটিতে মেয়র পদে একজন ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে দুজনের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে। এর মধ্যে স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী যুবলীগ নেতা মুজিবুর রহমান দিপুর সমর্থকসংক্রান্ত অসঙ্গতির কারণে মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়। রাজশাহীর আড়ানী পৌরসভায় তিন মেয়র প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল করেছেন রিটার্নিং কর্মকর্তা। প্রার্থিতা বাতিল হওয়া তিন মেয়র প্রার্থী হলেন- বর্তমান মেয়র ও পৌর বিএনপির আহ্বায়ক নজরুল ইসলাম, আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী ও পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল মতিন এবং জেলা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মাসুদ পারভেজ কলিন্স। চুয়াডাঙ্গার তিন পৌরসভায় মেয়র পদে চারজনের মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে। চুয়াডাঙ্গা সদরে জেলা বিএনপির যুগ্ম-আহ্বায়ক বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থী মজিবুল হক মালিক, আলমডাঙ্গায় মেয়র পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী আলমগীর হোসেন, দামুড়হুদার দর্শনায় মেয়র পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী সাইফুল ইসলাম ও বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থী পৌর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক নাহারুল ইসলামের মনোনয়নপত্র বাতিল হয়। এ ছাড়াও চুয়াডাঙ্গা পৌরসভায় তিনজন ও আলমডাঙ্গার একজন সংরক্ষিত কাউন্সিলর প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে। কুমিল্লার লাকসাম পৌরসভা নির্বাচনের মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই শেষে জাতীয় পার্টির মোখলেছুর রহমান ও স্বতন্ত্র প্রার্থী গোলাম ফারুকের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে। হবিগঞ্জের চুনারুঘাট পৌরসভার দুই স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে। স্বতন্ত্র প্রার্থী ইতেফাখরুল গনি খায়রুর মনোনয়নপত্রের যে পাতায় সমর্থক স্বাক্ষর করেন সে পাতায় প্রার্থী স্বাক্ষর না করায় তার মনোনয়নপত্র বাতিল হয়। এ ছাড়াও স্বতন্ত্র প্রার্থী জামায়াত নেতা মীর সাহেব আলী সমর্থকদের যে তালিকা ও স্বাক্ষর দিয়েছেন তদন্তে কয়েকটি স্বাক্ষর যথাযথ না হওয়ায় তার প্রার্থিতা বাতিল হয়েছে। স্বতন্ত্র দুই প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল হওয়ায় চুনারুঘাট পৌরসভায় শুধু আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী সাইফুল আলম রুবেল ও বিএনপির বর্তমান মেয়র নাজিম উদ্দিন শামছর মধ্যে নির্বাচনী লড়াই হবে। মুন্সীগঞ্জের মীরকাদিম পৌরসভায় ছয় মেয়র প্রার্থীর মধ্যে বিএনপির শামসুর রহমানসহ দুজনের প্রার্থিতা বাতিল করেছেন মীরকাদিম পৌরসভার রিটার্নিং অফিসার। বিএনপির প্রার্থী শামসুর রহমানের প্রার্থিতা বাতিল হয় মীরকাদিম পৌরসভার ৮৪ নম্বর বাড়ির পৌরকর ৩ হাজার ৪৫৭ টাকা বকেয়া থাকার কারণে। এ ছাড়া মামলা ধাকায় আরও একজন স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থীর প্রার্থিতা বাতিল করা হয়েছে। এ প্রসঙ্গে শামসুর রহমান বলেন, ‘ওই বাড়ির মালিক তো আমি না। আমি আপিল করব। সুষ্ঠু নির্বাচন কীভাবে হবে। এখানেই এ অবস্থা।’ অন্যদিকে কিশোরগঞ্জের ভৈরবে বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষের ঘটনায় বিএনপি মনোনীত মেয়র প্রার্থী হাজী মো. শাহীনসহ শতাধিক নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে থানায় মামলা হয়েছে। এ ঘটনায় ছাত্রদল নেতা কাউন্সিলর পদপ্রার্থী আরিফুর রহমান খোকনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

সর্বশেষ খবর