মঙ্গলবার, ৮ ডিসেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা

ভুল তথ্যের ছড়াছড়ি

নিজস্ব প্রতিবেদক

ভুল তথ্যের ছড়াছড়ি

খুলনার চালনা পৌরসভার মেয়র প্রার্থী অচিন্ত্য কুমার মণ্ডল। শিক্ষাগত যোগ্যতায় নিজেকে পিএইচডি ডিগ্রিধারী দাবি করে পেশায় উল্লেখ করেছেন বেসরকারি শিক্ষকতা, অধ্যক্ষ চালনা বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ, চালনা। তবে বার্ষিক আয়ের উেসর স্থানে পেশা থেকে কোনো আয় না দেখিয়ে তিনি উল্লেখ করেছেন প্রযোজ্য নয়। এমনকি চাকরির ছকেও লিখেছেন প্রযোজ্য নয়। তিনি একটি বেসরকারি কলেজের অধ্যক্ষ হিসেবে দাবি করলেও বার্ষিক আয়ের উত্স বিবরণীতে কোনো টাকার অঙ্ক উল্লেখ করেননি। তবে অস্থাবর সম্পদের মধ্যে ১৩ লাখ টাকা নিজের নামে, স্ত্রীর নামে ৪ লাখ ও ২৫ ভরি সোনা উল্লেখ করা হয়েছে। নিজের ও স্ত্রীর নামে সাড়ে ৯ একর কৃষি জমি উল্লেখ করা হয়েছে। এসব ভুল তথ্য দিয়েই তিনি হলফনামা জমা দিয়েছেন। একইভাবে ঠাকুরগাঁও পৌরসভায় আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী তাহমিনা আখতার মোল্লা। পেশায় উল্লেখ করেছেন ব্যবসা, অধ্যক্ষ, অন্যান্য। তবে তিনি শুধু ব্যবসা থেকে বার্ষিক আয় দেখিয়েছেন। কিন্তু চাকরি ও পেশা খাতের আয়ের ক্ষেত্রে ক্রস চিহ্ন ব্যবহার করেছেন। দায়-দেনায় প্রযোজ্য নয় উল্লেখ করলেও ঋণের পরিমাণের খাতে ৭ লাখ টাকা উল্লেখ করেছেন।এমন অসঙ্গতিতে ভরা পৌর নির্বাচনে অনেক মেয়র প্রার্থীদের হলফনামা। প্রার্থীর পেশার সঙ্গে আয়ের কোনো মিল নেই। কেউ লিখেছেন বর্তমানে তার পেশা নেই।  কেউ আবার পেশার ঘরে লিখেছেন স্ত্রীর ব্যাংকে জমানো টাকার সুদ। একজন প্রার্থী নিজেকে আইনজীবী হিসেবে উল্লেখ করলেও তার আয়ের খাত দেখিয়েছেন বাড়ি ভাড়া। পেশা থেকে তার কোনো আয় নেই। ঠিকাদারির আয় দেখানো হয়েছে সম্মানী হিসেবে। কৃষি খাত থেকে আয় করেন বলে দেখিয়েছেন একাধিক প্রার্থী। অথচ হলফনামার তথ্য অনুসারে তাদের কৃষি জমিই নেই। এমনই সব বিচিত্র তথ্য দিয়ে পূরণ করা হয়েছে পৌর নির্বাচনে মেয়র প্রার্থীদের হলফনামা। নির্বাচন কমিশন থেকে পাওয়া আওয়ামী লীগ ও বিএনপি মনোনীত মেয়র প্রার্থীদের হলফনামায় মিলছে এসব অসঙ্গতিপূর্ণ তথ্য। দেশে এবারই প্রথমবারের মতো পৌরসভার মেয়র পদে সরাসরি রাজনৈতিক দল মনোনীত প্রার্থী দেওয়ার সুযোগ রাখা হয়েছে। হলফনামায় ভুল তথ্য দেওয়া হলে সংশ্লিষ্ট প্রার্থীর প্রার্থিতা বাতিলসহ তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা  নেওয়ার কথা আইনে বলা হয়েছে। তবে গতকাল দেশের ২৩৪ পৌরসভায় মনোনয়ন বাছাইয়ের কাজ শেষ হলেও এসব প্রার্থীর বেশির ভাগকেই বৈধ বলে ঘোষণা করা হয়েছে। ২০০৮ সালের পর থেকে আদালতের নির্দেশে নির্বাচনে অংশ নিতে মনোনয়নপত্রের সঙ্গে সাত ধরনের ব্যক্তিগত তথ্য দেওয়া বাধ্যতামূলক। অনেক প্রার্থীর হলফনামা বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, সবারই কম-বেশি ভুল রয়েছে হলফনামায়। কিন্তু তারপরও প্রার্থিতা বৈধ করেছে ইসি।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর