বুধবার, ৯ ডিসেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা
আদালতে স্বীকারোক্তি

কোনিওকে গুলি করে জেএমবির মাসুদ

নিজস্ব প্রতিবেদক, রংপুর

খাদেম হত্যা মামলায় গ্রেফতার নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন জেএমবির পীরগাছা-কাউনিয়া অঞ্চলের কমান্ডার মাসুদ রানা (৩৮) জাপানি নাগরিক হোশি কোনিও হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ। মাসুদই কোনিওকে লক্ষ্য করে পর পর তিনটি গুলি ছোড়েন। এ ছাড়া তিনি খাদেম হত্যা ও বাহাই সম্প্রদায়ের নেতা হত্যাচেষ্টার সঙ্গে জড়িত থাকার দায়ও স্বীকার করেছেন। গতকাল দুপুরে পুলিশের রংপুর রেঞ্জের ভারপ্রাপ্ত ডিআইজি হুমায়ুন কবীর তার অফিসে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান। রংপুরের পীরগাছা উপজেলার কল্যাণী ইউনিয়নের পশুয়া টাঙ্গাইলপাড়ার নিজ বাড়ি থেকে ৩ ডিসেম্বর মাসুদ রানাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। রানার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী তার বাড়ির পুকুর থেকে প্লাস্টিকের বস্তায় হাতবোমা তৈরির ৫৪টি লোহার কৌটা ও তিনটি ধারালো বড় ছোরা উদ্ধার করে পুলিশ। সোমবার জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম শফিউল আলমের আদালতে জবানবন্দি দেন মাসুন রানা। ডিআইজি হুমায়ুন কবীর জানান, ৩ অক্টোবর সকালে কাউনিয়া উপজেলার সারাই ইউনিয়নের আলুটারি গ্রামে জাপানি নাগরিক হোশি কোনিওকে লক্ষ্য করে তিনটি গুলি করেন মাসুদ রানা। মুন্সিপাড়ায় ভাড়া বাসা থেকে রিকশায় করে আলুটারি গ্রামে নিজের ঘাসের খামারে যাওয়ার পথে দুর্বৃত্তদের গুলিতে নিহত হন ৬৬ বছরের কোনিও। এদিকে, কাউনিয়ায় মাজার শরিফের খাদেম রহমত আলীকে (৬৬) কুপিয়ে ও গলা কেটে হত্যার ঘটনায়ও জড়িত ছিলেন মাসুদ রানা। তার বাড়ির পুকুর থেকে যে তিনটি ছোরা উদ্ধার করা হয় সে ছোরা দিয়ে রানাসহ তিনজন খাদেম রহমতকে গলা কেটে হত্যা করেন। ১০ নভেম্বর মধুপুর ইউনিয়নের চৈতাল মোড়ে খুন হন খাদেম রহমত আলী। এদিকে, ৮ নভেম্বর নগরীর আর কে রোডে নিজ বাড়ির সামনে বাহাই সম্প্রদায়ের নেতা ও রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পরিচালকের ব্যক্তিগত সহকারী (পিএস) রুহুল আমিনকে গুলি করে মোটরসাইকেলে করে পালিয়ে যায় তিন দুর্বৃত্ত। মাসুদ রানা এ ঘটনায়ও জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন বলে জানান ডিআইজি। কোনিও হত্যাকাণ্ডে কাউনিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বাদী হয়ে অজ্ঞাত পরিচয় তিনজনকে আসামি করে হত্যা মামলা করেন। পরে কোনিওর ব্যবসায়ী সহযোগী হুমায়ুন কবীর হীরা, মহানগর বিএনপির সদস্য রাশেদ উন নবী খান বিপ্লবকে আটকের পর এ মামলায় আসামি দেখিয়ে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। এ ছাড়া মহানগর যুবদল নেতা রাজীব হাসান সুমন ওরফে মেরিল সুমন, নওশাদ হোসেন রুবেল ওরফে ব্ল্যাক রুবেল এবং যুবলীগ নেতা কাজল চন্দ্র বর্মণ ওরফে ভরসা কাজলকেও আটকের পর মামলায় আসামি দেখানো হয়। খাদেম রহমত আলী হত্যার ঘটনায় তার ছেলে অ্যাডভোকেট শফিকুল ইসলাম বাদী হয়ে অজ্ঞাত পরিচয় ৪-৫ জনকে  আসামি করে মামলা করেন। এ মামলায় জেএমবি নেতা মাসুদ রানাকে আসামি দেখানো হয়। বাহাই নেতা রুহুল আমীন হত্যা চেষ্টার ঘটনায় তার স্ত্রী সাইফুন নাহার বাদী হয়ে মামলা করেন।

সর্বশেষ খবর