রবিবার, ১৩ ডিসেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা

মুক্তিপণ না পেয়ে মালয়েশিয়ায় জবাই দুই বাংলাদেশিকে

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল

মালয়েশিয়ায় ৫০ লাখ টাকা মুক্তিপণ না পেয়ে দুই বাংলাদেশি যুবককে জবাই করে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। ২৮ নভেম্বর ওই দুই যুবককে মালয়েশিয়ায় অপহরণের পর ৫০ লাখ টাকা মুক্তিপণ চাওয়া হয়েছিল। গত বৃহস্পতিবার রাতে স্থানীয় একটি পাহাড় থেকে তাদের গলা কাটা লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। তারা হলেন মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলার নতুন চরদৌলতখান গ্রামের চুন্নু খানের ছেলে রাসেল খান ও রমজানপুরের শাহজাহান খানের ছেলে বিজয় খান। গৌরনদী মডেল থানার ওসি আলাউদ্দিন জানান, প্রায় আট বছর আগে রাসেল খান মালয়েশিয়া যান। তিনি সেখানে নির্মাণশ্রমিকদের ঠিকাদার হিসেবে কাজ করছিলেন। রাসেলের পরিবারের সদস্যরা তাকে (ওসি) জানিয়েছেন, ২৮ নভেম্বর মোটরসাইকেলযোগে কাজে যাওয়ার সময় পথিমধ্যে রাসেল ও বিজয়কে অপহরণ করে দুর্বৃত্তরা। পরে মালয়েশিয়া থেকে তারা রাসেলের পরিবারের কাছে ফোনে ৫০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। ইসলামী ব্যাংক টেকনাফ শাখার আনসার উল্লাহ নামে এক ব্যক্তির ২১৩৩৮ হিসাব নম্বর দেওয়া হয়। রাসেলের পরিবার মুক্তিপণ বাবদ পাশের গৌরনদী উপজেলার টরকী বন্দর শাখা থেকে ৫ লাখ টাকা পাঠায় ওই হিসাব নম্বরে। কিন্তু অপহরণকারীরা ২৯ নভেম্বর থেকে রাসেলের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। রাসেলের পরিবার বিষয়টি কালকিনি থানা পুলিশকে জানায়। তারা (কালকিনি পুলিশ) মুক্তিপণের টাকা টরকী বন্দর শাখা থেকে পাঠানোর অজুহাত দেখিয়ে গৌরনদী পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেন। রাসেলের ভাই শিহাব এ ঘটনায় বরিশাল আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গৌরনদী থানার এসআই নজরুল ইসলাম জানান, গত বুধবার টেকনাফ থেকে মুক্তিপণের ৫ লাখ টাকা পাঠানো হিসাব নম্বরের মালিক আনসার উল্লাহকে গ্রেফতার করা হয়। রহস্য উদ্ঘাটনের জন্য তাকে আদালতে হাজির করে বৃহস্পতিবার রিমান্ড চাওয়া হয়। এরই মধ্যে বৃহস্পতিবার রাতে মামলার বাদী শিহাব তাকে জানান, মালয়েশিয়ার একটি পাহাড় থেকে তার ভাই রাসেল ও বিজয়ের গলা কাটা লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। শিহাব আরও জানিয়েছেন, রাসেলের মালয়েশিয়া-প্রবাসী প্রতিবেশীরা সেখানকার পুলিশকে অপহরণের ঘটনা জানিয়েছেন। মালয়েশিয়া পুলিশ ইউনুস ও শাকেরসহ তিন বাংলাদেশিকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তারা ঘটনা স্বীকার করেন এবং তাদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী পাহাড় থেকে লাশ উদ্ধার করা হয়। ইউনুস ও শাকেরসহ আটক তিনজনের বাড়ি টেকনাফ উপজেলায়। এদিকে নিহত রাসেলের ভাই শিহাব জানান, আট বছর আগে তার ভাই মালয়েশিয়ায় যান। জিম্মি অবস্থায় ২৯ নভেম্বর দুপুরে তার ভাই রাসেলের সঙ্গে শেষ কথা হয়। বৃহস্পতিবার মালয়েশিয়ায় থাকা তার চাচা সোহরাব খান ফোনে রাসেল ও বিজয়ের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন। ঘাতকরা রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী ও মানব পাচারের সঙ্গে জড়িত। রাসেল ও বিজয়ের লাশ দেশে ফিরিয়ে আনতে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছেন শিহাব।

সর্বশেষ খবর