শুক্রবার, ১৮ ডিসেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা

একাত্তরের পরাজিত শক্তির অস্তিত্ব থাকবে না : প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রধানমন্ত্রী  ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, একাত্তরের পরাজিত শক্তির অস্তিত্ব বাংলাদেশে থাকবে না। জিয়াউর রহমান ও খালেদা জিয়া যে যুদ্ধাপরাধীদের রাষ্ট্রীয়ভাবে পুনর্বাসন ও মন্ত্রী বানিয়ে সম্মান দিয়েছেন আজ সেই যু্দ্ধাপরাধী অনেকের বিচার হয়ে ফাঁসি কার্যকর হয়েছে। যুদ্ধাপরাধীদের পুনর্বাসনের দায়দায়িত্ব খালেদা জিয়াকে নিতে হবে। বাংলার মাটিতে এর বিচারও হবে। রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশনে বিজয় দিবস উপলক্ষে গতকাল বিকালে আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ মন্তব্য করেন তিনি। শেখ হাসিনা বলেন, লাখো শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতা কখনো ব্যর্থ হতে পারে না। তা ব্যর্থ হতে দেওয়া হবে না। প্রসঙ্গক্রমে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দুঃখ হয়, যখন দেখি কিছু স্বাধীনতাবিরোধী ও তাদের দোসররা থাকে বাংলাদেশে আর স্বপ্ন দেখে পাকিস্তানের। তাদের পেয়ারে পাকিস্তানের কথা কখনো ভুলতেই পারে না। পেয়ারে পাকিস্তানের কথাও তাদের ভুলিয়ে ছাড়তে হবে। তিনি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, ওই পরাজিত শক্তির দালালি করলে চলবে না। পরাজিত শক্তির অস্তিত্ব এই বাংলাদেশে থাকবে না। বাংলাদেশকে নিয়ে বহু খেলা হয়েছে। আর কেউ যেন বাংলাদেশের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে না পারে সেভাবে কাজ করতে হবে আমাদের।  আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সংসদ উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন প্রবীণ নেতা সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত, কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া,  মাহবুব-উল আলম হানিফ, ডা. দীপু মনি ও এ কে এম এনামুল হক শামীমসহ কেন্দ্রীয় নেতারা। সভা পরিচালনা করেন ড. হাছান মাহমুদ ও অসীম কুমার উকিল।

বিএনপি নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মামলা-মামলা করে চিল্লালে হবে না। মামলা হয়েছে মানুষ হত্যা করার জন্য, আগুন দিয়ে বাস, রেলসহ জাতীয় সম্পদ ধ্বংস করার জন্য। যারা মানুষ হত্যাকারী, যারা হুকুমদাতা, অর্থদাতা তাদের সবারই বিচার বাংলার মাটিতে হবে। যারা ক্ষমতায় থেকে গ্রেনেড হামলা চালিয়ে জজ মিয়ার নাটক করেছে, বিদেশে টাকা পাচার করেছে তাদের বিচার হবেই। কেউ রক্ষা করতে পারবে না। তিনি  বলেন, আজকে দুঃখ লাগে কাদের মুখে গণতন্ত্রের কথা শুনতে হয়? যে দলটির জন্মই অবৈধভাবে। আগে ক্ষমতা দখল পরে দল গঠন। সেই দলের নেতারা আমাদের গণতন্ত্রের সংজ্ঞা শিখান। তারা গণতন্ত্র সঠিকভাবে বানান করতে পারবে কিনা সেটাই সন্দেহ। আওয়ামী লীগ সভানেত্রী বলেন, ২১ বছর বাংলাদেশকে উল্টোদিকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। ’৯৬ সালে আমরা ক্ষমতায় আসার পর দেশের উন্নয়ন শুরু হয়। জাতির পিতার হত্যার বিচার শুরু করি। ২০০৮ সালে ক্ষমতায় আসার পর কার্যকর করি, যুদ্ধাপরাধীর বিচার শুরু করি। দেশকে অভিশাপমুক্ত করার চেষ্টা করি। বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। লাখো শহীদের আত্মত্যাগ ব্যর্থ হতে দেব না। এটা আমাদের জীবনপণ। যারা আওয়ামী লীগ ও জাতির পিতার আদর্শে বিশ্বাস করেন তাদের এই প্রতিজ্ঞা করতে হবে। আর একটি দিনও সময় নষ্ট করতে চাই না। সেভাবে চিন্তা করেই সংগঠন করতে হবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধে ভারত, ভারতের জনগণ ও রাজনৈতিক দল, তত্কালীন সোভিয়েত ইউনিয়ন, এমনকি আমেরিকার জনগণ সমর্থন দিয়েছিল। আমাদের মুক্তিযুদ্ধের সময় যারা সহযোগিতা করেছিল তাদের সম্মান জানিয়েছি। পৃথিবীর অন্য কোনো দেশ এমন সম্মান জানায়নি। বাঙালি অসাধ্য সাধন করতে পারে মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আগামী ২০৪১ সালে বাংলাদেশ উন্নত দেশ হবে। বাঙালি সব রকম অসাধ্যই সাধন করতে পারে। স্বাধীনতার চেতনায় এই দেশ সারা বিশ্বে যে মর্যাদা পেয়েছে, আরও উন্নত মর্যাদা যেন পায় সেভাবে আমাদের আত্মবিশ্বাস ও আত্মমর্যাদা নিয়ে কাজ করতে হবে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই দেশকে নিয়ে অতীতে অনেক খেলা হয়েছে। এই দেশ আমরা স্বাধীন করেছি। স্বাধীনতা যেন কোনোভাবে ব্যর্থ না হয়?। ২১ বছর সময় নষ্ট হয়ে গেছে। আর একটা দিনও, একটা ঘণ্টাও সময় নষ্ট করতে চাই না। বাংলাদেশের উন্নয়ন লক্ষ্যযাত্রাকে অব্যাহত রাখতে রাখতে হবে।

সর্বশেষ খবর