শিরোনাম
সোমবার, ২১ ডিসেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা
নির্বাচনী আচরণবিধি ভঙ্গ

প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চায় ইসি

নিজস্ব প্রতিবেদক

জনপ্রতিনিধিদের আচরণবিধি অনুসরণে সরকারপ্রধানের হস্তক্ষেপ কামনা করেছে নির্বাচন কমিশন। সেই সঙ্গে বিএনপির নিয়মিত সমালোচনাকে ‘অযথা দোষারোপ’ বলে মনে করছেন একজন নির্বাচন কমিশনার। এ ছাড়া যারা (রিটার্নিং অফিসার) আচরণবিধি লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা  নেবেন না তাদের বিরুেদ্ধে ইসি ব্যবস্থা নেবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার মো. শাহনেওয়াজ। গতকাল ইসি কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন। পৌর ভোট সামনে রেখে দলীয় প্রার্থীদের আচরণবিধি লঙ্ঘনের নিয়মিত চিত্রের মধ্যে মাঠ কর্মকর্তাদেরও ব্যবস্থা  নেওয়ার কঠোর নির্দেশনা দিয়েছে ইসি। সরকারদলীয় মন্ত্রী-এমপিদের আচরণবিধি লঙ্ঘনের বিষয়ে শাহনেওয়াজ বলেন, আমরা বলব, যারা সরকারে আছেন, তারা অন্যদের চেয়ে  বেশি দায়িত্বশীল হবেন এটাই আশা করব। নির্বাচিত সরকারের অধীনে ভোট করতে গিয়ে এভাবে আচরণবিধি লঙ্ঘনের ঘটনায় সরকারের ভাবমূর্তির বিষয়টিও জড়িত বলে জানান তিনি। বর্তমানে যারা সরকারে রয়েছেন, নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি-তাদের অনুরোধ করব, তারা যেন আমাদের সহযোগিতা করেন। যদিও আমরা নির্বাচন কমিশন আলাদা, তারপরও সরকারে থাকা অবস্থায় নির্বাচন করছি, সরকারের ভাবমূর্তির প্রশ্ন উঠবে। সরকারপ্রধানের কাছেও এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হবে বলে উল্লেখ করেন শাহনেওয়াজ। যিনি সরকারপ্রধান আছেন, তাকেও বলব বিষয়টি (আচরণবিধি অনুসরণে সংশ্লিষ্টদের) দেখার জন্য, বলেন তিনি। সরকারি সুবিধাভোগী অতিগুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের প্রার্থীর পক্ষে প্রচারণায় নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি অবহিত করতে ইতিমধ্যে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে চিঠিও দিয়েছে ইসি সচিব। মন্ত্রী-এমপিদের উদ্দেশে শাহনেওয়াজ বলেন, আপনাদের মাধ্যমে বলব, সরকারে যারা আছেন, তারা যেন আমাদের সহযোগিতা করেন। আমাদের যেন অপ্রস্তুত না করেন এবং নিজেরাও যেন অপ্রস্তুত না হন। বিএনপির পক্ষ থেকে শনিবারও অভিযোগ করা হয়েছে- ইসি পক্ষপাতিত্ব করছে,  পৌরভোটে নির্বাচন কমিশন ও সরকার ‘পার্টনারশিপ’ হয়ে কাজ করছে। এমন অভিযোগের বিষয়ে শাহনেওয়াজ বলেন, আমরা নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালন করছি, বিভিন্ন সময় নিরপেক্ষতার জন্য চরম চেষ্টা করে যাচ্ছি। এখনো করছি। এরপরও কোনো দল অভিযোগ করলে তাদের ব্যক্তিগত ব্যাপার। ইসির বিরুদ্ধে অযথা অভিযোগ না করার আহ্বান জানান তিনি। আমাদের দেশে একটা নিয়ম হয়ে গেছে- যারা চাপ সৃষ্টি করতে চায়, তারা অযথা নির্বাচন কমিশনকে  দোষারোপ করার চেষ্টা করে। তারা মনে করে নির্বাচন কমিশন চাপে পড়বে। আমরা বলতে চাই, আমরা কোনো ধরনের চাপ সহ্য করব না। আমরা আমাদের মতোই চলব।

বিধিভঙ্গে ব্যবস্থা না নিলে রিটার্নিং কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা : আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির বিষয়ে শাহনেওয়াজ জানান, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি খারাপ হয়ে গেছে— এমন কোনো কারণ হয়নি। রিটার্নিং কর্মকর্তা যে অনিয়ম দেখেছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে। ইতিমধ্যে কিছু বিধিভঙ্গ ইসির ‘অলক্ষ্যে’ ঘটেছে বলে মনে করেন তিনি। কিছু কিছু লোক আচরণবিধি লঙ্ঘনের চেষ্টা করছে, আগে সেগুলো লক্ষ্য করা হয়নি; এখন অভিজ্ঞতা ও পরিবেশের কারণেই হোক শক্ত ব্যবস্থা নিতে পিছপা হব না। কর্মকর্তাদের সতর্ক করে শাহনেওয়াজ বলেন, যারা আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে না তাদের বিরুেদ্ধে আমরাই ব্যবস্থা  নেব। রিটার্নিং কর্মকর্তাদের পূর্ণ সহায়তা দেওয়ার বিষয়ে আশ্বস্ত করেন তিনি।

সাংবাদিকরা ভোটকেন্দ্রে আগের মতো যাবেন : ভোটকেন্দ্রে সাংবাদিক প্রবেশে কড়াকড়ি আরোপে পুলিশের সুপারিশে দ্বিমত পোষণ করেছে নির্বাচন কমিশন। শনিবারের আইনশৃঙ্খলা বৈঠকের প্রসঙ্গ টেনে শাহনেওয়াজ বলেন, সুবিধা-অসুবিধার কথা বিভিন্ন কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে। তাদের বলেছি, সাংবাদিকরা আগে যেভাবে  যেতেন, সেভাবেই যাবেন। তবে অন্যদের সুযোগ দেবেন।

সর্বশেষ খবর