বৃহস্পতিবার, ২৪ ডিসেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা

অনেক দেশের চেয়ে আমরা এখন এগিয়ে : প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, উন্নয়নের বিভিন্ন সূচকে অনেক দেশের চেয়ে আমরা এখন এগিয়ে। মানব উন্নয়নের সব সূচকে পাকিস্তান বাংলাদেশের চেয়ে পেছনে রয়েছে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে আমরা ভারতকে ছাড়িয়ে গেছি। তিনি বলেন, সমুদ্রবন্দর রক্ষা ও দেশকে শত্রুর হাত থেকে মোকাবিলার জন্য নৌবাহিনী প্রতিষ্ঠা করেন বঙ্গবন্ধু। আমাদের সেই নৌবাহিনী একটি ত্রিমাত্রিক বাহিনীতে পরিণত হতে যাচ্ছে। আগামী বছরের মাঝামাঝি দুটি সাবমেরিন যুক্ত হবে বাংলাদেশ নৌবাহিনীতে। গতকাল সকালে চট্টগ্রামের পতেঙ্গায় বাংলাদেশ নেভাল একাডেমিতে শীতকালীন রাষ্ট্রপতি কুচকাওয়াজে বক্তৃতাকালে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন। শেখ হাসিনা বলেন, স্বাধীনতাযুদ্ধেও নৌবাহিনীর গৌরবের ইতিহাস রয়েছে। এ বাহিনীর মর্যাদাপূর্ণ অবস্থানে রয়েছে আমাদের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস। সমুদ্রপথে বাণিজ্য ছাড়াও সামুদ্রিক সম্পদ রক্ষা ও আহরণ নৌবাহিনীর দায়িত্ব উল্লেখ করে তিনি বলেন, আগামী বছরের মাঝামাঝি নাগাদ দুটি সাবমেরিন যুক্ত হওয়ার মাধ্যমে বাংলাদেশ নৌবাহিনী একটি ত্রিমাত্রিক বাহিনীতে পরিণত হবে। প্রধানমন্ত্রী জানান, সাবমেরিন ঘাঁটি স্থাপন এবং সংশ্লিষ্ট অবকাঠামো নির্মাণ কাজ চলছে। পটুয়াখালীর রাবনাবাদে এভিয়েশন সুবিধা সংবলিত দেশের এই বৃহত্তম নৌঘাঁটি স্থাপন করা হচ্ছে। শেখ হাসিনা ব্যক্তিস্বার্থের চেয়ে দেশের স্বার্থকে তুলে ধরে এবং দেশের বাহিনীর ভাবমূর্তি সমুন্নত রাখার জন্য বাংলাদেশ নৌবাহিনীতে নতুন কমিশনপ্রাপ্ত অফিসারদের প্রতি আহ্বান জানান। তিনি বলেন, আপনাদের মতো তরুণ অফিসাররা আমাদের ভবিষ্যত্ উন্নয়নযাত্রার অংশীদার। তাই আপনাদের ব্যক্তিস্বার্থের চেয়ে দেশের স্বার্থকে ঊর্ধ্বে তুলে ধরতে হবে। আপনারা এমন কিছু করবেন না যাতে নৌবাহিনীর এবং দেশের ভাবমূর্তি ও ঐতিহ্য ম্লান হয়। শেখ হাসিনা বলেন, দেশের বিশাল সমুদ্র এলাকায় মাছ, তেল, প্রাকৃতিক গ্যাসের মতো মূল্যবান প্রাকৃতিক সম্পদ রয়েছে। এ সম্পদ রক্ষা করা এবং সমুদ্রসীমার নিরাপত্তা নিশ্চিত করা আপনাদের দায়িত্ব এবং আমি আশা করি আপনারা সফলভাবে এ দায়িত্ব পালন করবেন। জাতির যে কোনো প্রয়োজনে অন্যান্য বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে একত্রে কাজ করার জন্য নতুন কমিশনপ্রাপ্ত অফিসারদের নির্দেশ দেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বিএমএ প্যারেড গ্রাউন্ডে পৌঁছলে নৌবাহিনী প্রধান ভাইস অ্যাডমিরাল এম ফরিদ হাবিব এবং চট্টগ্রাম নেভাল এরিয়া কমান্ডার রিয়ার অ্যাডমিরাল এম আখতার হাবিব তাকে অভ্যর্থনা জানান। মন্ত্রীগণ, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টাবৃন্দ, সেনাবাহিনী প্রধান, বিমানবাহিনী প্রধান, কূটনীতিকবৃন্দ, সিনিয়র সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তা, স্থানীয় রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ এবং কমিশন লাভ করা মিডশিপম্যানদের অভিভাবকরা এ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। প্যারেড অনুষ্ঠানে মিডশিপম্যানদের ব্যাচ ও নৌবাহিনীন বিভিন্ন কন্টিনজেন্ট পাসিং আউটে অংশ নেয়। প্রধানমন্ত্রী কুচকাওয়াজ পরিদর্শন ও সালাম গ্রহণ করেন। একাডেমিতে অসামান্য দক্ষতা প্রদর্শনকারী সেরা মিডশিপম্যানদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করেন তিনি। মিডশিপম্যান ফাহিম উদ্দিন সাকিব সেরা মিডশিপম্যান নির্বাচিত হয়েছেন এবং তিনি ‘সোর্ড অব অনার’ গ্রহণ করেন এবং একাডেমিতে সেরা ফলাফলের জন্য অ্যাক্টিং সাব লেফটেন্যান্ট এম রেহানুজ্জামান লাভ করেন শহীদ মোয়াজ্জেম পদক। পেশাগত ও শিক্ষাগত বিষয়ে সর্বোচ্চ মান উন্নয়নের জন্য মিডশিপম্যান জাহিদ হোসেন কবির বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ রুহুল আমিন স্বর্ণপদক এবং মিডশিপম্যান এম রেজাউল ইসলাম নেভাল চিফ স্বর্ণপদক গ্রহণ করেন।

সর্বশেষ খবর