বৃহস্পতিবার, ২৪ ডিসেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা

বেতন কাঠামো পরিবর্তন হবে না

নিজস্ব প্রতিবেদক

বেতন কাঠামো পরিবর্তন হবে না

অনলাইনে নিজের আয়কর রিটার্ন জমা দিয়ে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেছেন, এটা খুব সহজ প্রক্রিয়া। এর মাধ্যমে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন আরেক ধাপ এগিয়ে গেল। তিনি আরও বলেন, সরকারি চাকুরেদের জন্য যে নতুন বেতন কাঠামো দেওয়া হয়েছে তা এখন আর পরিবর্তনের কোনো সুযোগ নেই। যারা এই বেতন কাঠামোর বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে আন্দোলন করছেন সেটা অযৌক্তিক বলেও তিনি মন্তব্য করেন। গতকাল সচিবালয়ে নিজ দফতরে কর অঞ্চল-৮ এর আওতায় তিনি আয়কর রিটার্ন কমা দেন। এ সময় তিনি আরও বলেন, চলতি অর্থবছর শেষে বাজেট ঘাটতি ৫ শতাংশের মধ্যেই থাকবে।

৫৫ হাজার ৮৭০ টাকা আয়কর দিলেন অর্থমন্ত্রী : চলতি অর্থবছরের জন্য ৫৫ হাজার ৮৭০ টাকা আয়কর দিলেন অর্থমন্ত্রী। কর অঞ্চল-৮ এর কমিশনার জিয়াউদ্দিন মাহমুদসহ অন্য কর্মকর্তার উপস্থিতিতে তিনি রিটার্ন জমা দেন। অর্থমন্ত্রী কর অঞ্চল-৮ এর করদাতা। অর্থমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, বিভিন্ন দাফতরিক ব্যস্ততার কারণে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে রিটার্ন দাখিল করতে পারিনি। এ জন্য ৩০ নভেম্বর আমি এক মাসের সময় চেয়ে আবেদন করেছিলাম। তারা (এনবিআর) সময় দিয়েছিল। আজ আমি রিটার্ন সাবমিট করলাম। তিনি বলেন, বহুদিন পর এবার আয় বেড়েছে। ৪ লাখ টাকার কিছু বেশি। এর বিপরীতে মোট ১ লাখ ১৭ হাজার ৫৩৩ টাকা কর এসেছে। যার মধ্যে রিফান্ড পাওয়া গেছে ৬১ হাজার ৬৬৩ টাকা। কারণ তার প্রকৃত কর এসেছে ৫৫ হাজার ৮৭০ টাকা। ১ কোটি ৭৪ লাখ টাকার সম্পদ থাকার কথা জানিয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, গত বছর এটি ছিল এক কোটি ৭০ লাখ টাকার মতো। এর মধ্যে এ বছরের আয় ২৭ লাখ ৯৪ হাজার ৯৬৭ টাকা। কর যোগ্য আয় ১০ লাখ ১৩ হাজার ৭২২ টাকা, যা গত বছর ছিল ৭ লাখ টাকার মতো।

বাজেট ঘাটতি ৫ শতাংশের মধ্যেই থাকবে : বিভিন্ন কারণে সরকারের ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় এবার বাজেট ঘাটতি বাড়বে কি না— সাংবাদিকদের এমন এক প্রশ্নে অর্থমন্ত্রী বলেন, অর্থবছর শেষে ঘাটতি ৫ শতাংশের মধ্যেই থাকবে। কারণ সেটা তো আগে থেকেই ঠিক করা আছে। তবে রাজস্ব আদায়ে অক্টোবর পর্যন্ত একটু ধীরগতি ছিল। কিন্তু নভেম্বরে অনেক ভালো হয়েছে। এরপরও যদি কিছু ঘাটতি থাকে, তাহলে হয়তো বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে কিছু কাটছাঁট হবে। কারণ গত বছর ৬৩ হাজার কোটি টাকার এডিপি ছিল, এবার সেটা বেড়ে প্রায় ১ লাখ কোটি টাকা হয়েছে। সেখান থেকে একটু কমতে পারে। তবে সেটা এখনই বলা যাচ্ছে না। ফেব্রুয়ারিতে সংশোধিত বাজেটের সময় বোঝা যাবে।

শিক্ষকদের দাবি অজ্ঞাতপ্রসূত : নতুন বেতন কাঠামোতে পরিবর্তন আনতে বিশ্ববিদ্যালয় ও এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের আন্দোলনকে অজ্ঞাতপ্রসূত বলে আখ্যা দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী। তিনি বলেন, সরকার ঘোষিত নতুন বেতন কাঠামো পরিবর্তনের কোনো সুযোগ নেই। বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তাদের বেতন বৈষম্যের অভিযোগকে ‘খামাখা’ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের দাবিকে ‘অজ্ঞতাপ্রসূত’ বলে মন্তব্য করেন মুহিত।

অর্থমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তাদের দাবি-দাওয়ার মধ্যে যৌক্তিক কিছু দেখছি না। অযৌক্তিক দাবিতে তারা এসব করছেন। ননসেন্স। আটারলি ননসেন্স। তিনি আরও বলেন, ‘আমি অবশ্য প্রমিজ করেছিলাম, তাদের (বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তাদের) স্বতন্ত্র বেতন স্কেল দেব। কিন্তু যে বেতন স্কেল দেওয়া হয়েছে, এতে বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তাদের স্বতন্ত্র বেতন স্কেলের প্রয়োজন আছে বলে আমি মনে করি না। আর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের দাবি একেবারেই অজ্ঞতাপ্রসূত। কেননা আমিই তাদের সঙ্গে বসে আলোচনা করে সবকিছু ঠিক করেছি। জাতীয় অধ্যাপক বলে কিছু নেই। তাদের কোনো স্কেলও নেই। এটা একটা সম্মান। এ জন্য আগেও ৪০ হাজার টাকা সম্মানী দেওয়া হতো, এখনো এটা আগের মতোই আছে। এটা আলাদা করার কিছু নেই।

এমপিওভুক্তি অত্যন্ত বাজে ব্যবস্থা : নতুন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও শিক্ষকদের এমপিওভুক্তকরণের বিরোধিতা করে অর্থমন্ত্রী বলেন, এমপিওভুক্তি অত্যন্ত বাজে ব্যবস্থা। এটা স্কুলের স্বার্থ দেখে না। এমনকি ছাত্রদের স্বার্থও দেখে না। শুধু (নিজেদের) শিক্ষকদের স্বার্থ দেখে। এ জন্য একটি কমিটি করে দেওয়া হয়েছে। কমিটি যে সুপারিশ করবে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সর্বশেষ খবর