সোমবার, ২৮ ডিসেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা

প্রেসক্লাবের বেইমানদের জায়গা আমার কাছে হবে না : খালেদা জিয়া

নিজস্ব প্রতিবেদক

জাতীয় প্রেসক্লাব ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইউজে) কার্যালয় দখলকারীদের উদ্দেশ্যে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া বলেছেন, ‘যারা বেইমানি করেছেন আপনারা তাদের চিহ্নিত করেছেন। বেইমান, দালাল, মীরজাফর এরা কিন্তু বেশিদিন টিকে না। তাদের পরিণতি অত্যন্ত খারাপ ও ভয়াবহ হয়। তাদের মানুষ সবসময় ঘৃণার চোখে দেখে। বেইমানি করে কোনো লাভ হবে না। সত্য ও গণতন্ত্রের পথে থাকুন। আমি কোনো সময়ে বেইমানদের সঙ্গে হাত মিলাইনি। ভবিষ্যতেও  বেইমানদের জায়গা আমার কাছে হবে না।’ পৌর নির্বাচনে জরিপের নামে ক্ষমতাসীনরা অপপ্রচার চালাচ্ছে অভিযোগ করে খালেদা জিয়া বলেন, ‘সত্যিকারের জরিপে তাদের ভরাডুবির কথা লেখা আছে। মানুষ ধানের শীষে ভোট দেওয়ার জন্য বসে আছে। যতই জরিপ করুক, ওই মিথ্যা জরিপ দিয়ে কিছু হবে না। সত্যিকারে কী জরিপ হয়েছে আমি নিজে সেটা জানি। সেখানে তাদের (ক্ষমতাসীন দল) ভরাডুবির কথাই লেখা আছে।’ ৩০ ডিসেম্বর ভোটারদের ভোট কেন্দ্রে গিয়ে  ভোট  দেওয়ার আহ্বানও জানান তিনি।

গতকাল দুপুরে ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) একাংশের দ্বি-বার্ষিক কাউন্সিল অধিবেশনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিএনপি প্রধান এ মন্তব্য করেন। সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশন মিলনায়তনে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এতে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন-ডিইউজেসহ চট্টগ্রাম, বগুড়া, যশোর, রাজশাহী, খুলনা, কক্সবাজার, কুমিল্লা, কুষ্টিয়া দিনাজপুরসহ সংশ্লিষ্ট জেলাগুলোর সাংবাদিক ইউনিয়নের তিন শতাধিক প্রতিনিধি অংশ নেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পর বিএফইউজের নতুন নেতৃত্ব নির্বাচনে পুরানা পল্টনে ফটো জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের মিলনায়তনে দুপুর ২টা  থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ চলে। সর্বশেষ ২০১৪ সালের ৩০ মার্চ বিএফইউজের নির্বাচন হয়। ওই নির্বাচনে শওকত মাহমুদ সভাপতি ও এমএ আজিজ মহাসচিব নির্বাচিত হন। শওকত মাহমুদ বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন। সম্মেলনে শওকত মাহমুদ, আমার দেশ পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমান ও একুশে টিভির মালিক আবদুস সালামের মুক্তির দাবি করেন বেগম জিয়া। চ্যানেল ওয়ান, আমার দেশ, দিগন্ত টিভি, ইসলামিক টিভিসহ বন্ধ মিডিয়াগুলো খুলে  দেওয়ার দাবিও জানান বিএনপি চেয়ারপারসন। সংগঠনটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এম আবদুল্লাহর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে নিউজ টুডের সম্পাদক রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ, বিএফইউজের সাবেক সভাপতি রুহুল আমিন গাজী, বর্তমান মহাসচিব এম এ আজিজ, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন, সম্পাদক ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন  খোকন, জাতীয় প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক  সৈয়দ আবদাল আহমেদ বক্তব্য রাখেন। বিএফইউজের অঙ্গ ইউনিয়নসমূহের মধ্যে ডিইউজে একাংশের আবদুল হাই শিকদার, জাহাঙ্গীর আলম প্রধান, চট্টগ্রামের শামসুল হক হায়দারী, যশোরের নুরুল ইসলাম, খুলনার এম আনিসুজ্জামান, বগুড়ার সৈয়দ ফজলে রাব্বী  ডোনার, কক্সবাজারের এম নুরুল ইসলাম, কুমিল্লার শাহ আলম শফি, কুষ্টিয়ার নজরুল ইসলাম মুকুল, দিনাজপুরের জি এম হিরু বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন বিএফইউজের সহকারী মহাসচিব মুহাম্মদ শাহনেওয়াজ ও মোদাব্বের হোসেন। অনুষ্ঠানে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমদ, জমির উদ্দিন সরকার, চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফ, শাহজাহান ওমর, আবদুল মান্নান, এজে মোহাম্মদ আলী, হায়দার আলী, বিএফইউজের কারাবন্দী সভাপতি শওকত মাহমুদের সহধর্মিণী  ফেরদৌসী মাহমুদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। আসন্ন পৌরসভা নির্বাচনে ভোটারদের উদ্দেশ্যে খালেদা জিয়া বলেন, সব ভোটারকে ভোট কেন্দ্রে যেতে হবে। নিজ নিজ ভোট প্রয়োগ করতে হবে। আমি জানি দেশের মানুষ অপেক্ষায় আছে ধানের শীষে ভোট দিতে। সত্যিকারভাবে নির্বাচন অবাধ-সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ যদি হয় তাহলে বিএনপির ধানের শীষ ৮০ ভাগ ভোট পেয়ে বিজয়ী হবেই হবে ইনশাল্লাহ। গণমাধ্যমের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘ভোট  কেন্দ্রের  ভিতরে কী হচ্ছে সঠিক তথ্য তুলে ধরবেন। এ সরকারের অধীনে যে সুষ্ঠু নির্বাচন হতে পারে না সেটা প্রমাণ করে দিন। রকিবের (সিইসি) নির্বাচন কমিশনের অধীনে যে সুষ্ঠু নির্বাচন হতে পারে না তাও প্রমাণ করে দিতে হবে।’ প্রশাসনের উদ্দেশে বিএনপি প্রধান বলেন, ‘আপনারা নির্ভয়ে নির্দ্বিধায় নিরপেক্ষ থাকুন। আপনাদের সঙ্গে আমাদের কোনো বিরোধ ও বিভেদ নেই। বিএনপি ক্ষমতায় আসলে প্রশাসনের লোকজনের চাকরি যাবে—এটা আওয়ামী অপপ্রচার।’ এ ব্যাপারে কাউকে বিভ্রান্ত না হওয়ার আহ্বান জানান খালেদা জিয়া।

সর্বশেষ খবর