মঙ্গলবার, ২৯ ডিসেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা

জঙ্গি অর্থায়নে উত্কণ্ঠা

ব্যাংকগুলোকে আরও বেশি সতর্ক থাকার নির্দেশ, নজরদারিতে কুরিয়ার সার্ভিস

রুকনুজ্জামান অঞ্জন

দেশে জঙ্গি অর্থায়ন ঠেকাতে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে আরও বেশি সতর্ক থাকতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বিশেষ করে মোবাইল ব্যাংকিং সেবার সঙ্গে জড়িত প্রতিষ্ঠানগুলোকে বলা হয়েছে, তারা যেন এ ধরনের সেবা দেওয়ার ক্ষেত্রে গ্রাহকের কেওয়াইসি (নো ইউর কাস্টমার) সঠিকভাবে সম্পন্ন করে। গত রবিবার কেন্দ্রীয় ব্যাংকে অনুষ্ঠিত ‘অবৈধ হুন্ডি তত্পরতা, বিদেশে অর্থ পাচার এবং মানি লন্ডারিং প্রতিরোধে গঠিত কেন্দ্রীয় টাস্কফোর্সের’ সভায় এসব নির্দেশনা দেওয়া হয়।

বৈঠকে উপস্থিত সূত্রগুলো জানায়, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান ছাড়াও বর্তমানে পণ্য ও আর্থিক লেনদেনে জড়িত কুরিয়ার সার্ভিসগুলোর ওপরও নজরদারি বাড়ানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। দেশে ব্যবসারত কোনো কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে যাতে জঙ্গিরা কোনো ধরনের অবৈধ কর্মকাণ্ড করতে না পারে সে ব্যাপারেও উদ্যোগ নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে সভায়। সূত্রগুলো আরও জানায়, যেসব অঞ্চলে জঙ্গি কার্যক্রম বেশি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে সেই অঞ্চলগুলোর জনগণকে মানি লন্ডারিং ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন প্রতিরোধে সচেতন করার জন্যও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। বিষয়টি স্বীকার করে বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর আবু হেনা মোহাম্মদ রাজি হাসান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, জঙ্গি অর্থায়ন ও অবৈধ অর্থ পাচারে জড়িত সব ধরনের প্রতিষ্ঠানকেই নজরদারির মধ্যে রাখা হয়েছে। মানি লন্ডারিং ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন প্রতিরোধে ব্যাংকগুলোকে আরও বেশি সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। মোবাইল ব্যাংকিংয়ের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট গ্রাহকের তথ্য সঠিকভাবে ফরমে পূরণ করতে হবে। এ ছাড়া যে কোনো ধরনের লেনদেন সন্দেহজনক বিবেচিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট ইউনিটকে অবহিত করতে বলা হয়েছে। কর্মকর্তারা জানান, জঙ্গি অর্থায়ন প্রতিরোধে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে জনগণকে সচেতন করার বিষয়টিও গুরুত্ব পাচ্ছে এ সংক্রান্ত কেন্দ্রীয় টাস্কফোর্সের কাছে। এরই মধ্যে চট্টগ্রাম, বগুড়াসহ কয়েকটি অঞ্চলে সচেতনতামূলক কার্যক্রম গ্রহণে ব্যাংকগুলোকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। চট্টগ্রাম আঞ্চলিক টাস্কফোর্সের ৮০তম সভায় ব্যাংক কর্তৃক আয়োজিত প্রতিটি ওয়ার্কশপ বা প্রশিক্ষণে দুর্নীতি দমন কমিশন, সমবায় অধিদফতর ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তাদের অংশগ্রহণকারী হিসেবে সম্পৃক্ত করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। বগুড়া অঞ্চলে জঙ্গি অর্থায়ন প্রতিরোধে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে মানুষের কাছে সহজবোধ্য ভাষায় সচেতনতামূলক তথ্য সংবলিত লিফলেট বিলির প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া মানি লন্ডারিং ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন প্রতিরোধ ও দমন কার্যক্রম সম্পর্কে জনগণকে সচেতন করার জন্য ব্যাংকের জমা স্লিপে জঙ্গি অর্থায়ন প্রতিরোধে বিভিন্ন সচেতনতামূলক স্লোগান ছাপার বিষয়টি বিবেচনা করা হচ্ছে। মোবাইল ব্যাংকিং পরিচালনাকারী এজেন্টদের জন্য মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে সন্ত্রাসে অর্থায়ন প্রতিরোধ সংক্রান্ত সচেতনতামূলক কার্যক্রম আঞ্চলিকভাবে গ্রহণের ব্যাপারেও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর