বুধবার, ৩০ ডিসেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা

আওয়ামী লীগ দিল নালিশ, বিএনপি চাইল শক্ত কমিশন

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রচার শেষে পৌর ভোটের আগে নির্বাচন কমিশনে গিয়ে একে অন্যের বিরুদ্ধে নালিশ জানিয়ে এসেছে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি। গতকাল বিএনপির প্রতিনিধি দল যাওয়ার পর বিকালে আওয়ামী লীগের প্রতিনিধি দলের সদস্যরা সিইসি কাজী রকিবউদ্দীন আহমদের সঙ্গে দেখা করেন।

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ অভিযোগ করেছেন, বিএনপির ‘মিথ্যাচারের’ ওপর ভিত্তি করে ইসি ক্ষমতাসীনদের সঙ্গে ‘বিমাতাসুলভ’ আচরণ করছে। অন্যদিকে ভোটের ফল পাল্টে যাওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করে ইসিকে শক্ত হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান। আইন সংশোধনের পর আজ একযোগে বাংলাদেশের ২৩৪ পৌরসভায় যে ভোট হচ্ছে, তাতে ২০০৮ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সাত বছর পর নৌকা ও ধানের শীষের লড়াই হচ্ছে। স্থানীয় সরকারের এ ভোট নিয়ে বড় দুই রাজনৈতিক দলই পাল্টাপাল্টি অভিযোগ করে আসছে। ভোটের হাওয়ায় বিভিন্ন স্থানে দুই দলের সংঘাত-সংঘর্ষও হয়েছে। বিভিন্ন স্থানে নির্বাচনী সংঘাতের জন্য বিএনপি দায়ী করেছে আওয়ামী লীগের অন্তঃকোন্দলকে। অন্যদিকে আওয়ামী লীগ বলে এসেছে, বিএনপি তাদের অন্তঃকোন্দল সরকারের ওপর চাপাচ্ছে। সিইসির সঙ্গে দেখা করে ক্ষমতাসীন দলের নেতা হানিফ সাংবাদিকদের বলেন, নির্বাচন কমিশন বিএনপির প্রতি সদয় আচরণ করতে গিয়ে আমাদের ওপর বিমাতাসুলভ আচরণ করছে। বিএনপি ইসিতে মিথ্যাচার করে যে অভিযোগ করছে, তার ওপর ভিত্তি করে নির্বাচন কমিশন যে যে ব্যবস্থা নিয়েছে, তাতে আমাদের ওপর অন্যায় করা হয়েছে। ইসি ক্ষমতাসীন দলের বিরুদ্ধে কী ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছে— তার ব্যাখ্যায় তিনি বলেন, বিএনপি কয়েক জায়গায় তাদের অন্তঃকোন্দলকে সরকারের ঘাড়ে চাপিয়ে দিয়েছে, ইসি এর ওপর ভিত্তি করে ব্যবস্থা নিচ্ছে। ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড’ নেই বলে বিএনপির অভিযোগের পাল্টায় ক্ষমতাসীন দলের এই নেতা বলেন, বরং তারাই প্রচারের সমান সুযোগ পাননি। বিএনপির সাবেক প্রধানমন্ত্রী-মন্ত্রী, উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নিচ্ছেন। কিন্তু আচরণবিধির কারণে আমরা পারিনি। এটা কোনো লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড হতে পারে না। সংসদ নির্বাচন বর্জনকারী বিএনপি পৌর ভোটে শেষ পর্যন্ত থাকবে কিনা, তা নিয়ে সংশয়ও প্রকাশ করেন আওয়ামী লীগ নেতা হানিফ। নির্বাচন সুষ্ঠু না হওয়ার কোনো আশঙ্কা দেখছেন কিনা— প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, সুষ্ঠু না হওয়ার কোনো কারণ নেই। অবশ্যই নির্বাচন সুষ্ঠু হবে। বিএনপি বরাবরই অভিযোগ করে আসছে, সরকারের ‘আজ্ঞাবহ’ ইসি তাদের সব অভিযোগ এড়িয়ে যাচ্ছে। সিইসির সঙ্গে দেখা করে বেরিয়ে মঈন খান সাংবাদিকদের বলেন, সত্যিকার অর্থে যারা ভোট দিচ্ছেন, সেই ভোটারদের মতামতে যদি ফলাফল হয়, তাহলে তা আমরা মেনে নেব এবং স্বাগত জানাব। তবে তা হবে কিনা, সে নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেন সাবেক এই মন্ত্রী। তিনি বলেন, কমিশনকে বলেছি, ভোটাররা যেন নিঃসংকোচে তাদের খুশিমতো ভোট দিতে পারেন, ফলাফল যেন সেই ভিত্তিতে হয় এবং ফলাফল শিট যাতে কোনো নির্দেশে নির্ধারিত না হয়। নির্বাচনে ভোটার কত শতাংশ ভোট দিল, সে সংখ্যাটি যেন বজায় থাকে। সেটি যেন বাড়ানো-কমানোর কোনো প্রচেষ্টা না করা হয়। বিএনপি এ নির্বাচনের প্রচারে সমান সুযোগ পায়নি বলেও দাবি করেন মঈন খান। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিএনপির তিনজন নিহত এবং তিনশ’র বেশি আহত এবং কয়েক হাজার কর্মী বন্দী রয়েছেন দাবি করে তিনি বলেন, বিভিন্ন জায়গায় আমাদের প্রার্থীদেরও হুমকি-ধমকি দেওয়া হচ্ছে। নির্বাচনী সহিংসতার জন্য ক্ষমতাসীনদেরই দায়ী করেন বিএনপি নেতা। এ পর্যন্ত যত সহিংসতা হয়েছে, এর মধ্যে কিছু আওয়ামী লীগের নিজেদের অন্তর্দ্বন্দ্বে হয়ে থাকতে পারে।

সর্বশেষ খবর