সোমবার, ৪ জানুয়ারি, ২০১৬ ০০:০০ টা
সিপিডির গবেষণা

রাজস্ব ঘাটতি হবে ৪০ হাজার কোটি টাকা

নিজস্ব প্রতিবেদক

চলতি অর্থবছরে ৪০ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব ঘাটতির আশঙ্কা রয়েছে। মাত্রাতিরিক্ত লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ, আমদানি বাজারে আমদানি করা পণ্যের দাম কম, সরকারি বিভিন্ন প্রণোদনা (ইনসেনটিভ) ঘোষণায় রাজস্ব আদায় কম এবং ট্যাক্স আইনের বাস্তবায়ন না হওয়ায় এ রাজস্ব ঘাটতি হতে পারে। দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি মূল্যায়ন করে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) স্টেট অব দ্য ইকোনমি শীর্ষক প্রতিবেদনে এ তথ্য উল্লেখ করেছে। গবেষণায় সিপিডি বলেছে, দেশের অভ্যন্তরে বিগত পাঁচ মাস রাজনৈতিক পরিস্থিতি শান্তিপূর্ণ থাকলেও ব্যক্তি খাতে বিনিয়োগ পরিস্থিতির উন্নতি হয়নি। এমন কী বিনিয়োগে আস্থার পরিবেশ ফেরেনি। এ সময়ে আন্তর্জাতিক বাজারে দ্রব্যমূল্য সহনীয় পর্যায়ে ছিল, দেশের অভ্যন্তরে সুদের হার, মূল্যস্ফীতি কমেছে, টাকার বিনিময় স্থিতিশীল ছিল। এরপরেও দেশে বিনিয়োগ নিবন্ধনের হার কমেছে, সরাসরি বৈদেশিক বিনিয়োগে ধীরগতি লক্ষ্য করা গেছে, পুঁজিবাজারে আইপিও কমে গেছে, রাজস্ব আদায় পরিস্থিতিও দুর্বল। পাশাপাশি সিপিডির পক্ষ থেকে দেশে জঙ্গিবাদ দমনে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে। জঙ্গিবাদ দমন না করতে পারলে বি?নিয়োগ টানা ক?ঠিন হবে বলেও মনে করে সিপডি। গতকাল রাজধানীর ব্র্যাক সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে এ প্রতিবেদন প্রকাশ করে সিপিডি। বিনিয়োগ বাড়াতে প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার বাড়ানোর তাগিদ দিয়েছে বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সিপিডি। মূল প্রতিবেদনটি উপস্থাপন করেন সিপিডির ফেলো তৌফিকুল ইসলাম খান। বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন সিপিডির সম্মানীয় ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য, নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক মুস্তাফিজুর রহমান, গবেষণা পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন, অতিরিক্ত গবেষণা পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম। ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, গত পাঁচ মাসে অর্থনীতিতে উদ্বেগ না থাকলেও অস্থিরতা আছে। মূলত আর্থিক খাতে কাঙ্ক্ষিত সংস্কার না থাকায় এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। ব্যাংকিং খাতে প্রচ্ছন্ন বাংলাদেশের ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণমূলক বিভিন্ন পদক্ষেপের কারণে এ সংকট দৃম্যমান হচ্ছে না। তবে প্রকাশ্যেই ব্যাংকগুলোর তহবিল তসরুফ করা হচ্ছে। ব্যাংক ঋণের বড় একটা অংশ যাচ্ছে পরিচালকদের প্রতিষ্ঠানে। রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়েও তহবিল তসরুফের ঘটনা দেখা যাচ্ছে। রাজনৈতিক পরিবেশ বর্তমানে ভালো। কিন্তু এর থেকেও জরুরি বিষয় হলো জঙ্গিবাদ দমন। কে কাকে মেরে ফেলছে তার হদিস নেই, এতে উদ্বেগ বাড়ছে। আগামী ছয় মাসে এটি নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। আর্থিক বিবেচনায়ও এটি জরুরি। বিনিয়োগে পরিবেশ দীর্ঘদিনের একটি বাধা উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিদেশি বিনিয়োগের দ্বার খোলা যেতে পারে। তবে সেটি এই দুর্বলতা থেকে নয়। এক প্রশ্নের জবাবে খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, কিছু ক্ষেত্রে বিদেশে বিনিয়োগের সুযোগ রয়েছে। দেশের ব্যবসায়ী উদ্যোক্তাদের সক্ষমতা বাড়ছে। তাই তারা বিদেশে বিনিয়োগ করতে চায়। এখন সরকারের উচিত প্রয়োজনে একটি নীতি বা আইন করা। যাতে ব্যবসায়ীরা সীমিত আকারে এই সুযোগ পেতে পারে। মূল প্রতিবেদনে বলা হয়, আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে তেলের দাম ১০ শতাংশ কমালে মোট দেশজ উত্পাদন (জিডিপি) দশমিক তিন শতাংশ বাড়বে। একই সঙ্গে মূল্যস্ফীতি শূন্য দশমিক ২ শতাংশ কমে আসবে।

সর্বশেষ খবর