শিরোনাম
বুধবার, ২০ জানুয়ারি, ২০১৬ ০০:০০ টা

বঙ্গবন্ধুর আত্মজীবনীর সেই আহমেদ আলী

মহিউদ্দিন মোল্লা, কুমিল্লা

বঙ্গবন্ধুর আত্মজীবনীর সেই আহমেদ আলী

বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ সহচর প্রবীণ আওয়ামী লীগ নেতা অ্যাডভোকেট আহমেদ আলী। সময় কাটান বই পড়ে, লেখালেখি করে এবং রাজনৈতিক জীবনের সোনালি অতীতের স্মৃতিচারণা করে। একসময় তার বাসা ছিল বৃহত্তর কুমিল্লার আওয়ামী রাজনীতির প্রাণকেন্দ্র। বঙ্গবন্ধু দেশের পূর্ব- দক্ষিণাঞ্চলে এলে তার বাসায় উঠতেন। ‘বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ গ্রন্থে তার কথা গুরুত্বের সঙ্গে উল্লেখ করেছেন বঙ্গবন্ধু। এখন তার বাসায় আগের মতো কোলাহল নেই। তার সময় কাটে অনেকটা নিঃসঙ্গ। কুমিল্লার রাজনীতি এবং আইনজীবী অঙ্গনের অনেকে তার শিষ্য। সৌজন্যতা করে কেউ কেউ মাঝে মাঝে তাকে দেখতে আসেন। এ নিয়ে তার অবশ্য তেমন আক্ষেপও নেই। বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট অ্যাডভোকেট আহমেদ আলী বর্তমানে নিজের লেখা ‘স্বাধীনতা উত্তর আওয়ামী লীগের রাজনীতি ও বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্ব’ গ্রন্থের পাণ্ডুলিপি সম্পাদনা করছেন। ইতিমধ্যে তার ‘আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠার ইতিকথা’ এবং ‘সুরসম্রাট ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁর জীবন ও সাধনা’ নামের দুটি গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে। কুমিল্লা নগরীর বাগিচাগাঁওয়ের বাসার দোতলার দক্ষিণ-পূর্ব কোণের কক্ষে থাকেন অ্যাডভোকেট আহমেদ আলী। দক্ষিণের জানালা খুলে দেখেন বড় দিঘি আর সবুজ গাছপালা। মাঝে মাঝে জানালার পাশে কয়েকটা নাম না জানা পাখিও ডেকে যায়। অ্যাডভোকেট আহমেদ আলীর চার ছেলে ও পাঁচ মেয়ে, সবাই নিজেদের নিয়ে ব্যস্ত। তাদের মধ্যে মাসুদ সালাউদ্দিন ও নিশাত সালাউদ্দিন প্রতিষ্ঠিত আইনজীবী। অ্যাডভোকেট আহমেদ আলীর সঙ্গে দেখা হলে বার বার বাংলাদেশের মানুষের গুণাবলি ও মাটির গুণের কথা উল্লেখ করেন। বিছানায় শুয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশের সোনালি আঁশের পয়সায় লন্ডন, কলকাতা ও করাচি নগরী গড়ে উঠেছে। এ দেশের অতিসাধারণ কৃষকও উচ্চ ফলন শীল ধানের জাতের আবিষ্কারক। মাটির ওপরে ফসল, নিচে আছে গ্যাস। একসময় পরাধীন ৭ কোটি মানুষের খাবার মিলত না, এখন স্বাধীন ১৬ কোটি মানুষের খাবারের প্রয়োজন মিটিয়ে উদ্বৃত্ত থাকছে। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর বঞ্চনা, শোষণ ও লুটপাটে আমরা পিছিয়ে গেছি। যোগ্য নেতৃত্ব পেলে বাংলাদেশ অনেক আগে মধ্য আয়ের দেশে পরিণত হতো। গণতন্ত্রের বিষয়ে তিনি বলেন, গণতন্ত্র মুখের কথা নয়, এটা হচ্ছে মানসিকতার বিষয়। গণতন্ত্রের মাঝে কোনো প্রতিহিংসার স্থান নেই। কিন্তু একদল এম এ হান্নান বিমানবন্দরের নাম পাল্টে করেছে শাহ আমানত, আরেক দল জিয়া আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নাম বদলে করেছে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। তারা প্রতিহিংসায় দুজন সাধকের নামও ব্যবহার করেছেন। এটা গর্হিত কাজ। এ জন্য সবার সহনশীলতা বাড়াতে হবে। তিনি আরও বলেন, চাকর যখন মনিবকে নিয়ন্ত্রণ শুরু করে তখন পরিবারে শান্তি থাকে না, সরকারের সফলতাকে কাজে লাগাতে হলে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে হবে। দৃশ্যমান অর্থনৈতিক উন্নয়নের সঙ্গে অদৃশ্যমান নীতি-নৈতিকতা নিয়েও কাজ করতে হবে। দেশকে আমলাতন্ত্র ও পুলিশতন্ত্র থেকে রক্ষা করতে হবে।

সর্বশেষ খবর