শিরোনাম
রবিবার, ৭ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ ০০:০০ টা
বিশেষজ্ঞ মত

আইন মানতে হবে প্রণেতাদেরও

নিজস্ব প্রতিবেদক

নাগরিকরা আইন মানছেন কি না তা নির্ভর করে তাদের ওপর সঠিকভাবে প্রয়োগ হচ্ছে কি না এর ওপর। সর্বদলীয়ভাবে, সর্বস্থানে, সর্বক্ষণ আইন প্রয়োগ করার ব্যবস্থা থাকতে  হবে। নগরের নিয়মকানুন সঠিকভাবে মেনে চলার ব্যাপারে সচেতনতা থাকলেই নাগরিকরা নিজ দায়িত্ব পালনে উৎসাহিত হবেন। আর নাগরিকদের দায়িত্ব পালনে উৎসাহিত করার দায়িত্ব সরকারের। একজন নাগরিকের ক্ষেত্রে যে আইন প্রযোজ্য, প্রণয়নকারীদের ক্ষেত্রেও একইভাবে প্রযোজ্য হতে হবে তা। নগর পরিকল্পনাবিদ ও বিশেষজ্ঞরা বাংলাদেশ প্রতিদিনের কাছে ব্যক্ত করেছেন এমন মন্তব্য। নগর-বিশেষজ্ঞ ও স্থপতি মোবাশ্বের হোসেন বলেন, ‘শুধু ঢাকাকে ঘিরে কোনো কিছু চিন্তা করা ঠিক নয়। পুরো বাংলাদেশের উন্নয়নের কথা ভেবে আমাদের কাজ করতে হবে।’ তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সামনের সিগন্যাল অমান্য করে আমরা যানবাহনের চলাচল দেখি। দেখা যায় যে ট্রাফিক সিগন্যালে লাল বাতি জ্বললেও ট্রাফিক পুলিশ অনেক গাড়ি ছেড়ে দেয়। অথচ এই স্থান থেকে ১০০ গজ দূরের জাহাঙ্গীর গেটের সামনে সব নাগরিক আইন মেনে চলেন। ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট এলাকায় আমরা দেখেছি সেনাসদস্য থেকে শুরু করে সাধারণ নাগরিক সবাই আইন মেনে চলেন। কারণ সেখানে আইনের যথাযথ প্রয়োগ হয়। এ জন্য নাগরিকদের মানতে বাধ্য করতে আইনের সঠিক প্রয়োগ করতে হবে। দেশের বিভিন্ন জেলার মানুষ বিদেশে কাজ করতে গিয়ে সে দেশের আইনকানুন মেনে চলেন। কারণ সেখানে তাদের আইন মানতে বাধ্য করা হয়। একইভাবে আমাদের নাগরিকদের যদি বিভিন্ন নিয়ম মেনে চলার জন্য বাধ্য করা যায়, তবে তারা এক-দুই মাসের মধ্যেই সচেতন হয়ে উঠবেন। আইন প্রয়োগে নাগরিকরা যখন সচেতন হবেন, তখনই তারা নিয়মকানুন পালনের রীতি শিখতে শুরু করবেন। এ বিষয়ে আগ্রহীও হবেন তারা।’ সচেতনতা সম্পর্কে নগর পরিকল্পনাবিদ অধ্যাপক নজরুল ইসলাম বলেন, শহরের উন্নয়নে সরকারের পাশাপাশি নাগরিকদেরও দায়িত্ব আছে। তিনি বলেন, নগরের নিয়মকানুন মেনে চলার ব্যাপারে নাগরিকরা যে একেবারেই অসচেতন তা বলা যাবে না। অনেকেই নিয়মকানুন সম্পর্কে জানেন কিন্তু তা পালনে উৎসাহিত নন। কারণ এ নিয়মগুলো অমান্য করলে যে তাদের শাস্তি দেওয়া হবে না, তারা তা দেখে আসছেন। এ জন্য সরকারকে দায়িত্ব নিতে হবে। সচেতনতা বৃদ্ধিতে বিভিন্ন কর্মসূচি পরিচালনা করতে হবে। বিশেষ করে গণমাধ্যম ও নগরীর বিলবোর্ডে নাগরিক দায়িত্ব পালন সম্পর্কিত প্রচারণা, বিভিন্ন এলাকার চৌরাস্তার মোড়ে মাইক দিয়ে নাগিরকদের সচেতন করার মতো কর্মসূচি গ্রহণ করা যেতে পারে। নিয়ন সাইনের মাধ্যমে সচেতনতামূলক বাণী প্রচার করার পদক্ষেপও নিতে পারে সরকার। এ ছাড়া পারিবারিক, প্রাতিষ্ঠানিক ও সামাজিকভাবে এ সম্পর্কে নাগরিকদের সচেতন করতে হবে। তিনি বলেন, ‘আইনপ্রণেতারা আইন ভাঙছেন বলেই নাগরিকরা নিজ দায়িত্ব সম্পর্কে সচেতন হচ্ছেন না। ফলে সচেতন অনেক নাগরিকও ইচ্ছাকৃতভাবে আইন ভাঙছেন। আইন প্রণয়ন এবং তা নাগরিকদের মানতে বাধ্য করার দায়িত্ব সরকারের। একজন নাগরিকের ক্ষেত্রে যে আইন প্রযোজ্য, তা সরকারের কর্ণধারদের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য হতে হবে।’

সর্বশেষ খবর