শিরোনাম
বুধবার, ১৭ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ ০০:০০ টা

স্বাভাবিক হয়নি থাই ভিসা প্রক্রিয়া, লাগবে আরও এক সপ্তাহ

কূটনৈতিক প্রতিবেদক

থাই ভিসা প্রক্রিয়া স্বাভাবিক হতে আরও এক সপ্তাহ লাগবে বলে মনে করছেন ঢাকাস্থ থাইল্যান্ড দূতাবাস। তবে নতুন ভিসা পদ্ধতিতে আগের মতো চার-পাঁচ দিনে ভিসাসহ পাসপোর্ট পাওয়া যাবে না। থাই ভিসার  ভোগান্তির বিষয়ে গতকাল দূতাবাস থেকে এ তথ্য জানানো হয়েছে। দূতাবাসের কনস্যুলার সেকশন থেকে ই-মেইলে জানানো হয়, ‘বিশ্বব্যাপী থাই ভিসার পদ্ধতিগত পরিবর্তন এসেছে। তবে ভিসাপ্রার্থীদের ভোগান্তি লাঘবে সম্ভব সব চেষ্টাই করে যাচ্ছে থাই ইমিগ্রেশন। চেষ্টা করা হচ্ছে ভিসা-ব্যবস্থায় দ্রুততা ফিরিয়ে আনার।’ এক সপ্তাহের মধ্যে সবকিছু স্বাভাবিক হয়ে যাওয়ার আশাবাদ ব্যক্ত করে এতে বলা হয়, ‘আগে যেখানে চার-পাঁচ কর্মদিবসের মধ্যে ভিসাসহ পাসপোর্ট দিয়ে দেওয়া হতো, এখন এর চেয়ে কিছুটা সময় বেশি লাগতে পারে।’ ট্রাভেল এজেন্টদের তথ্যমতে, দুই মাস ধরে প্রায় বন্ধ রয়েছে থাইল্যান্ডের ভিসা। হাতে গোনা কয়েকজনকে ভিসা দেওয়া হয়েছে। ফলে প্রায় ২৫ হাজার পাসপোর্ট জমা পড়ে আছে দূতাবাসে। এগুলোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানাতে পারছে না কেউ। দূতাবাসে যোগাযোগ করলে বলা হচ্ছে ভিএফএসে যোগাযোগ করতে। আবার ভিএফএস কোনো সদুত্তর না দিয়ে শুধু ই-মেইল করতে বলে দায় সারছে। আবার সারা বিশ্বের থাই দূতাবাসগুলোর ওয়েবসাইট সচল থাকলেও শুধু বাংলাদেশের থাই দূতাবাসের ওয়েবসাইটের ঠিকানায় প্রবেশ করলে কোনো পেইজ আসছে না। এরই মধ্যে ২১ জানুয়ারি চিকিৎসার জন্য থাইল্যান্ডে যেতে ভিসার আবেদন করেছিলেন ব্যাংকার মনিরুল হক দম্পতি। ভিসাসহ পাসপোর্ট ফেরত দেওয়ার কথা ছিল ২৫ জানুয়ারি। সে হিসেবেই নিয়েছিলেন সব প্রস্তুতি। কিন্তু ২৬ দিন পার হলেও ভিসা পাওয়া যায়নি। এমনকি পাসপোর্ট ফেরত পাওয়ার জন্য দূতাবাস, ভিএফএসে বিভিন্নভাবে বারবার যোগাযোগ করা হলেও কেউ কোনো জবাব দেননি। হতাশায় আরও অসুস্থ হয়ে পড়েছেন এই দম্পতি। গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনকে মনিরুল হক বলেন, ‘কোথাও কোনো জবাব পাচ্ছি না। এটা কেমন ধরনের ভোগান্তি! তারা ভিসা না দিলে পাসপোর্ট ফেরত দিক। আমরা অন্য কোথাও চিকিৎসা করাব। তাদের জন্য কেন আমাদের চিকিৎসা আটকে থাকবে? এখন কোথায় যাব, কী করব কিছুই বুঝতে পারছি না।’ অন্যদিকে ব্যবসায়ী মফিজুল হক আরও দুই দেশের ভিসাসহ পাসপোর্ট জমা দিয়েছিলেন থাই ভিসার জন্য। তারও পাসপোর্টের কোনো খবর নেই। অথচ শেষ হওয়ার পথে অন্য ভিসার মেয়াদ। ভিসার আবেদন করা গৃহিণী নাজনীন ইসলাম বলেছেন, ‘বলা হচ্ছে নতুন ভিসা কর্মকর্তার কারণে এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। কিন্তু তার দায় আমরা নেব কেন! যদি এমনই হবে তাহলে আমাদের আগেই বলতে পারত। আমরা ভিসার আবেদন করতাম না। আমাদের অনিশ্চিত পরিস্থিতিতে ফেলার অধিকার তাদের কে দিয়েছে। বলা হচ্ছে কাগজপত্র পরীক্ষা করা হচ্ছে। আমাদের পাসপোর্ট বইয়ে বড় বড় দেশের ভিসা আছে। এমন তো নয় যে থাইল্যান্ডের ভিসার জন্য আমরা যোগ্য নই।’

কূটনৈতিক সূত্র জানিয়েছে, থাইল্যান্ডে বাংলাদেশ দূতাবাসের পক্ষ থেকেও সেখানকার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এ নিয়ে যোগাযোগ করা হয়েছে। ভিসাপ্রার্থীদের ভোগান্তির বিষয়টি দ্রুত সমাধানের আশ্বাস দিয়েছে সেখানকার পররাষ্ট্র দপ্তর। সূত্রমতে, বর্তমানে থাইল্যান্ড দূতাবাসে কোনো রাষ্ট্রদূত নেই। মিশনপ্রধানের দায়িত্ব পালন করছেন একজন জুনিয়র কূটনীতিক। আবার প্রতিদিন জমা হওয়া পাঁচ শতাধিক পাসপোর্ট যাচাই-বাছাই করছেন সেগুলো থাইল্যান্ডে পাঠাচ্ছেন মাত্র দুজন কর্মকর্তা। নতুন পদ্ধতিতে ব্যাংকক থেকে যাচাই-বাছাই শেষে ভিসার অনুমোদন দেওয়া হচ্ছে। ফলে ঢাকায় কর্মরতদের ভিসার সিদ্ধান্তের বিষয়ে কোনো হাত থাকছে না।

সর্বশেষ খবর