বৃহস্পতিবার, ২৫ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ ০০:০০ টা
বিশেষজ্ঞ অভিমত

এখন সেবা গৌণ রাজনীতিই মুখ্য

চিকিৎসাকে পেশা হিসেবে অক্ষুণ্ন রেখেও রাজনীতির চর্চা করা যায়। তবে সেক্ষেত্রে পেশাজীবীদের নিজ নিজ পেশায় সেবা দেওয়াটা হওয়া উচিত মুখ্য আর রাজনীতি হওয়া উচিত গৌণ। পেশাজীবীদের সংগঠন থাকতেই পারে। কিন্তু দল-মতের ঊর্ধ্বে উঠে এ সংগঠনকে কাজ করতে হবে। কিন্তু এখন তার উল্টো হচ্ছে। সেবা হয়ে গেছে গৌণ। রাজনীতি হয়ে গেছে মুখ্য। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ডা. প্রাণ গোপাল দত্ত এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, পেশাজীবীদের নিজ নিজ পেশায় সেবা দেওয়াটা হওয়া উচিত মুখ্য আর রাজনীতি হওয়া উচিত গৌণ। তিনি বলেন, জনকল্যাণের জন্যই রাজনীতি। এর মাধ্যমে জনগণের সর্বোত্তম সেবা করা যায়। তার মতে, চিকিৎসাকে পেশা হিসেবে অক্ষুণ্ন রেখেও রাজনীতির চর্চা করা যায়। প্রাণ গোপাল আরও বলেন, ভারতে বিধান রায় একাধিকবার পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করার পরও চিকিৎসক হিসেবে নিজের দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করেছেন। তিনি প্রতিদিন সকালে ২৫ জন এবং রাতে ২৫ জন করে রোগী দেখতেন। টানা ১৪ বছর মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব পালনকারী বিধান রায় ছিলেন লোকসভার সদস্য। দিল্লি অ্যাসেম্বলি থেকে তাকে নেহরু সকাল ৯টায় ছুটি দিয়ে দিতেন যাতে করে তিনি ১২টা পর্যন্ত রোগী দেখার সুযোগ পান। কাজেই এটি সম্ভব। চেষ্টা করলেই পারা যায়। চিকিৎসক হওয়ার আগে আমাকে যখন ভাইভায় প্রশ্ন করা হয়, আপনি কী করবেন। সেই প্রশ্নের উত্তরে আমি বলেছিলাম, আমি জনগণের সেবা ও দাতব্য করব। আমি তা এখনো করে যাচ্ছি। প্রতি শুক্র ও মঙ্গলবার আমি সাধারণের সেবা করতে ঢাকার বাইরে চলে যাই। আমি মনে করি এটি সম্পূর্ণভাবে চিকিৎসকদের মন-মানসিকতার ওপর নির্ভর করে। তবে আশার কথা, সাধারণরা এখনো চিকিৎসকদের সেবা পাচ্ছেন। আশঙ্কা করছি প্রাইভেট মেডিকেল কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় থেকে যে শিক্ষার্থীরা লাখ লাখ টাকা খরচ করে চিকিৎসক হিসেবে বের হবেন তারা আদৌ সাধারণের সেবা করবেন কিনা। তবে সেবা করার বিষয়টি সম্পূর্ণই একজনের ইচ্ছার ওপর নির্ভর করে। আমি যখন উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করি তখন রাজনীতির ঊর্ধ্বে চলে যাই। এমনকি যতক্ষণ আমি এই পেশায় আছি ততক্ষণ আমি রাজনীতি এড়িয়ে চলব। সমস্যা তখনই হবে যখন একজনকে মন্ত্রিত্ব দেওয়া হবে কিন্তু তিনি চিকিৎসক হওয়ার পরও তার প্র্যাকটিস করবেন না।

সর্বশেষ খবর