বৃহস্পতিবার, ২৫ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ ০০:০০ টা
ইউপি নির্বাচন

সংঘর্ষ গুলি আহত অর্ধশতাধিক

নিজস্ব প্রতিবেদক

ভোলায় ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনকে কেন্দ্র করে চেয়ারম্যান প্রার্থীদের মধ্যে সংঘাত সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ছে। গত তিন দিনে চার ইউনিয়নে পৃথক সংঘর্ষে তিন চেয়ারম্যান প্রার্থীসহ অন্তত অর্ধশত আহত  হয়েছেন। অপর দিকে পুলিশের হাতে আটক হয়েছেন দুই চেয়ারম্যান প্রার্থী। এসব ঘটনায় ভোলায় সড়ক অবরোধ, বিক্ষোভ মিছিল, আদালত পাড়ায় অবস্থানসহ ব্যাপক উত্তেজনা চলছে। অন্যদিকে বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে বিএনপি মনোনীত এক চেয়ারম্যান প্রার্থীর বাড়িতে গুলির ঘটনা ঘটেছে। অপর এক প্রার্থীর বাড়ির কাছে ককটেল বিস্ফোরণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। ভোলা প্রতিনিধি জানান, সদর উপজেলার উত্তর দিঘলদী ইউনিয়নে গত মঙ্গলবার রাতে নির্বাচনী অফিস ভাঙচুরের ঘটনাকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান প্রার্থী মনসুর আলম ও বিএনপির চেয়ারম্যান প্রার্থী রাইসুল আলমের মধ্যে কয়েক দফা সংঘর্ষ হয়। এতে মনসুর আলম গুরুতর আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন। সংঘর্ষে কামাল উদ্দিন নামের একজন গুলিবিদ্ধসহ অন্তত ১৩ আওয়ামী লীগ কর্মী আহত হয়েছে। আওয়ামী লীগের হামলায় বিএনপির ৮টি নির্বচানী অফিস ভাঙচুর করার অভিযোগও পাওয়া গেছে। হামলায় ১৫ নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন। চেয়ারম্যান মনসুরের ওপর হামলার প্রতিবাদ ও বিচার দাবিতে তার সমর্থকরা গতকাল সকাল ৮টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত ভোলা-চরফ্যাশন সড়ক অবরোধ করে রাখে। পরে পুলিশ সুপারের আশ্বাস পেয়ে অবরোধ তুলে নেওয়া হয়। সোমবার রাতে ভোলা সদর উপজেলার ধনিয়া ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বঞ্চিত স্বতন্ত্র প্রার্থী অ্যাডভোকেট সোয়েব হোসেন মামুনের লোকজনের হামলায় আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান প্রার্থী এমদাদ হোসেন কবির গুরুতর আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এ সময় ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি সাইফুল ইসলাম, তছির মেম্বারসহ অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় চেয়ারম্যান প্রার্থী অ্যাডভোকেট মামুন গ্রেফতার হয়ে হাজতে রয়েছেন। গণসংযোগকালে লালমোহনের রমাগঞ্জ ইউনিয়নে প্রতিপক্ষ চেয়ারম্যান প্রার্থীর লোকজনের হামলায় বিএনপির চেয়ারম্যান প্রার্থী কবিরুজ্জামান আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। সদর উপজেলার বাপ্তা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান প্রার্থী চাঁদাবাজি মামলার ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি কামাল উদ্দিন চকেটকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। চকেটকে জেল হাজতে প্রেরণের প্রতিবাদে গত দুই দিন ধরে হাজার হাজার নারী-পুরুষ শহরে বিক্ষোভ মিছিল করে। একপর্যায়ে তারা আদালত এলাকায় অবস্থান নিয়ে দুপুর পর্যন্ত বিক্ষোভ করে। পরে তার জামিন হওয়ার সংবাদ পেয়ে আনন্দ মিছিল করে এলাকায় ফিরে যায়। মোরেলগঞ্জ প্রতিনিধি জানান, বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে বিএনপি মনোনীত এক চেয়ারম্যান প্রার্থীর বাড়িতে গুলি ও অপর এক প্রার্থীর বাড়ির কাছে ককটেল বিস্ফোরণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। মঙ্গলবার রাত ৯টার দিকে তেলিগাতী ও হোগলাপাশা ইউনিয়নে এ ঘটনা ঘটে। এ ছাড়াও বিভিন্ন ইউনিয়নে বিএনপি মনোনীত প্রার্থীদের প্রার্থিতা প্রত্যাহারের জন্য চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে। তেলিগাতী ইউনিয়নে বিএনপি মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী মো. আলমগীর হোসেন চৌধুরী অভিযোগ করেন যে, মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে দুর্বৃত্তরা তার বাড়ি লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। এ সময় তিনি বাড়িতে ছিলেন না। দুর্বৃত্তরা তাকে না পেয়ে ফাঁকা গুলি ছুড়ে আতঙ্ক ছড়ায়। হোগলাপাশা ইউনিয়নে বিএনপি মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী সাবেক চেয়ারম্যান মফিজুল হক অভিযোগ করেন যে, মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে ৩০-৪০ জনের একদল যুবক আওয়ামী লীগ প্রার্থীর পক্ষে ‘নৌকার’ স্লোগান দেয়। একপর্যায়ে মিছিলকারীরা মফিজুল হকের বাড়ির কাছাকাছি গিয়ে পরপর দুটি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়। এ ঘটনায় এলাকায় আতঙ্ক বিরাজ করছে। এ ছাড়া বারইখালী ইউনিয়নে বিএনপি মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী এফ এম শামীম আহসান অভিযোগ করেন যে, আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীর ভাই তাকে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে এলাকা ছেড়ে না গেলে প্রাণনাশের হুমকি দিয়েছেন। নিশানবাড়িয়া ইউনিয়নেও আওয়ামী লীগ প্রার্থীর কর্মীরা বিএনপি মনোনীত প্রার্থী লোকমান হোসেন হাওলাদারকে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের জন্য হুমকি দিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

সর্বশেষ খবর