বুধবার, ২ মার্চ, ২০১৬ ০০:০০ টা

বিমানবন্দরে কার্গো নিয়ে তুলকালাম

উৎকণ্ঠা গোয়েন্দাদের প্রশ্নের মুখে জাতীয় নিরাপত্তা

রুকনুজ্জামান অঞ্জন

বিমানবন্দরে কার্গো ব্যবস্থাপনা নিয়ে তুলকালাম পরিস্থিতি বিরাজ করছে। বর্তমানে যে প্রক্রিয়ায় আমদানি-রপ্তানি কার্গো হ্যান্ডলিং করা হচ্ছে, সেটি জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকিস্বরূপ বলে মনে করছেন খোদ বিমানের সঙ্গে যুক্ত সংশ্লিষ্টরা। শুধু তা-ই নয়, সম্প্রতি বিমানবন্দরে পরিত্যক্ত কনসাইনমেন্টে বিস্ফোরকদ্রব্য পাওয়ার মতো ভয়াবহ ঘটনাও ঘটেছে বলে জানা গেছে। এ পরিস্থিতিতে সম্প্রতি হযরত শাহজালাল বিমানবন্দরের কার্গো ব্যবস্থাপনা নিয়ে বিশেষ সভা করেছে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে ২ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত ওই সভায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বিস্ফোরকদ্রব্য পাওয়ার বিষয়টি প্রকাশ করেন কাস্টমস ইন্টেলিজেন্সের মহাপরিচালক। সভার কার্যবিবরণী থেকে জানা যায়, কার্গো ব্যবস্থাপনায় বিশৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা হুমকি নিয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) পক্ষ থেকে উদ্বেগ প্রকাশ করেন এর সদস্য ফরিদ উদ্দিন। তিনি জানান, তারা নভেম্বরে বিমানবন্দরে মালামাল ডেলিভারি-সংক্রান্ত কার্যক্রম পরিদর্শনকালে অন্তত ১৫ থেকে ২০টি কনসাইনমেন্ট গোডাউনে পড়ে থাকতে দেখেন। এই কনসাইনমেন্টগুলোর ডেলিভারি গ্রহণের তারিখ ও সময় উল্লেখ ছিল না। এমনকি সেখানে কর্মরতরাও সেটি জানাতে পারেননি। বিষয়টি তুলে ধরে এনবিআর সদস্য বলেন, সময়মতো মালামাল ডেলিভারি দিতে না পারলে তাতে ব্যক্তির পাশাপাশি সরকারেরও রাজস্ব ক্ষতি হয়। শুধু তা-ই নয়, বিষয়টি জাতীয় নিরাপত্তার জন্যও হুমকিস্বরূপ বলে উল্লেখ করেন তিনি। এ পরিপ্রেক্ষিতে কাস্টমস ইন্টেলিজেন্সের মহাপরিচালক সভায় জানান, কিছুদিন আগে বিমানবন্দরে পরিত্যক্ত কনসাইনমেন্টে বিস্ফোরকদ্রব্য পাওয়া গেছে। বিষয়টি অত্যন্ত স্পর্শকাতর এবং জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকিস্বরূপ বলে মনে করছেন তারা। কার্গো অব্যবস্থাপনা ও নিরাপত্তা হুমকির বিষয়টি স্বীকার করে ওই সভায় বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের এমডি ও সিইও (ভারপ্রাপ্ত) এম এম আসাদুজ্জামান বলেন, হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে উপযুক্ত স্থানের অভাবে মালামাল কার্গো গোডাউনের উল্টো পাশে রাখতে হয়। ফলে নিরাপত্তা বিঘ্নিত হয়। তবে বিমানবন্দরে সেমি অটোমেশন কার্যক্রম সম্পন্ন হলে মালামাল সুষ্ঠুভাবে সংরক্ষণ ও বিতরণ কার্যক্রম সম্পন্ন করা সম্ভব হবে বলে জানান তিনি। এদিকে স্থান-স্বল্পতার অজুহাত দিয়ে বিমান কর্তৃপক্ষের এ ধরনের অব্যবস্থাপনার বিষয়টি ভালোভাবে দেখছে না সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়। ওই সভায় বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো ব্যবস্থাপনার আমূল সংস্কার করে এটিকে ঢেলে সাজানোর নির্দেশ দিয়েছেন। এ ছাড়া কার্গো/মালামাল ডেলিভারির ব্যাপারে কোনো অভিযোগ পাওয়া গেলে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষকে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে জবাব দিতে হবে বলে জানিয়ে দিয়েছেন সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিব খোরশেদ আলম চৌধুরী।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর