বৃহস্পতিবার, ১৭ মার্চ, ২০১৬ ০০:০০ টা

মেয়েকে তুলে নেওয়ার সময় বাধা, বাবা খুন

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি

মেয়েকে তুলে নেওয়ার সময় বাধা, বাবা খুন

মনীন্দ্র অধিকারী

নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় মেয়েকে অপহরণকারীদের হাত থেকে বাঁচাতে গিয়ে ছুরিকাঘাতে নিহত হয়েছেন মনীন্দ্র অধিকারী (৫০) নামের এক ব্যক্তি। ওই ঘটনায় অপহরণকারীদের হামলায় আহত হয়েছেন নিহতের স্ত্রী প্রজাপতি রানী। গতকাল ভোর ৪টায় ফতুল্লার রঘুনাথপুর এলাকায় ওই ঘটনা ঘটে। স্থানীয়রা গণপিটুনি দিয়ে ৭ জনকে পুলিশে সোপর্দ করেছে। আটক করা হয়েছে অপহরণ কাজে ব্যবহূত ২টি মাইক্রোবাস। উদ্ধার করা হয়েছে ২টি ছোরা। গ্রেফতাররা হলো— ঢাকার শ্যামপুর হাইস্কুল রোডের কবির হোসেনের ছেলে হূদয়, বাড্ডার কোকাকোলার মোড় এলাকার যোশেফ টুডুর ছেলে এ্যালভার্ট সুশান্ত টুডু, গেণ্ডারিয়ার নুরুল হক মল্লিকের ছেলে নজরুল ইসলাম ও মনিরুল ইসলাম (৩৪), কেরানীগঞ্জের নূরুল হকের ছেলে মো. জাহিদ (২০), শ্যামপুর গ্লাস ফ্যাক্টরি এলাকার শাহালমের ছেলে মো. জুয়েল (২৫), একই এলাকার তোতা মিয়ার ছেলে বাবু (২০) এবং শ্যামপুরের জুরাইন এলাকার হায়দার শেখের ছেলে তানভীর শেখ (২০)। এ ছাড়া এজাহারে ঘটনার মূল হোতা শ্যামপুরের আবুল হোসেনের ছেলে তুহিন (২১) এবং একই এলাকার সবুজ (২১) কে আসামি করা হয়েছে। মনীন্দ্রের মেয়ে ঝর্ণা রানী বলেন, তিনি ফতুল্লার হাজী পাণ্ডে আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্রী। গত কালীপূজার সময় তুহিনের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। কালীপূজায় তুহিনের কাছ থেকে সাউন্ড সিস্টেম ভাড়া করা হয়েছিল। ওই সময় তুহিন ঝর্ণার কাছ থেকে তার ফোন নম্বর নেয়। পরে ফোন করে তুহিন নানা ভয়ভীতি দেখিয়ে তার সঙ্গে ঝর্ণাকে ঘুরতে যেতে বাধ্য করে। এর মধ্যে সে তুহিনের সঙ্গে সোনারগাঁ জাদুঘরে, শ্যামপুর ইকোপার্কে এবং সর্বশেষ ফতুল্লার পাগলায় অবস্থিত মেরী এন্ডারসনে ঘুরতে যায়। সর্বশেষ মেরী এন্ডারসনে ঘুরতে গিয়ে ঝর্ণা সম্পর্ক করা সম্ভব নয় বলে জানায়। এরপর ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে মোবাইল ফোন বন্ধ রাখেন। এদিকে ঝর্ণার বাবা ভারতের এক ছেলের সঙ্গে তার বিয়ের বিষয়টি পাকা করছেন এমন সংবাদ পায় তুহিন। এ খবর পেয়ে বুধবার ভোর রাত ৪টায় ২টি মাইক্রোবাস যোগে এসে ঝর্ণাদের বাড়িতে হানা দেয়। তুহিন ও তার সহযোগীরা ঝর্ণাকে জোর করে তুলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে তাতে বাধা দেন মনীন্দ্র অধিকারী ও মা প্রজাপতি রানী। ওই সময় তুহিন মনীন্দ্র অধিকারীকে ছুরিকাঘাত করে। এক পর্যায়ে স্থানীয়রা ঝর্ণাদের বাড়িতে গিয়ে তুহিনসহ সাতজনকে গণপিটুনি দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করে। গুরুতর আহতাবস্থায় মনীন্দ্রকে নারায়ণগঞ্জ তিনশ’ শয্যা হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। ফতুল্লা মডেল থানার ওসি (তদন্ত) আবদুর রাজ্জাক ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, স্কুলছাত্রী ঝর্ণাকে অপহরণ চেষ্টার অভিযোগে স্থানীয়রা সাতজনকে পিটুনি দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করেছেন। এ ছাড়া ঢাকা থেকে আরও একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

সর্বশেষ খবর