শিরোনাম
শনিবার, ১৯ মার্চ, ২০১৬ ০০:০০ টা

শাহজালালে কাল থেকে নিরাপত্তার দায়িত্বে ব্রিটিশ কোম্পানি

নিজস্ব প্রতিবেদক

আগামীকাল থেকে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নিরাপত্তার দায়িত্ব পাচ্ছে ব্রিটিশ কোম্পানি। তবে সমঝোতা সইয়ের মাধ্যমে এ দায়িত্ব পেলেও ব্রিটিশ ওই কোম্পানি কাজ শুরু করবে আগামী ২৬ মার্চ থেকে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র এ তথ্য দিয়ে আরও বলছে, যুক্তরাজ্যের ‘রেডলাইন অ্যান্ড কন্ট্রোল রিস্কস’ নামে নিরাপত্তা কোম্পানির সঙ্গে রবিবার সমঝোতা সই হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এর আগে আজ বিমানমন্ত্রীর নেতৃত্বে সরকারের উচ্চপর্যায়ের স্টিয়ারিং কমিটির বৈঠকে এই প্রস্তাবনা উত্থাপন করা হবে। কমিটি চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত  দেওয়ার পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে এর অনুমোদন নেওয়া হবে। সূত্র জানায়, প্রতিষ্ঠানটি বিমানবন্দরের নিরাপত্তা ব্যবস্থাপনায় তদারকি, স্ক্রিনিং ব্যবস্থা পরিচালনা এবং জনবল প্রশিক্ষণে যুক্ত থাকবে। বেবিচকের পক্ষ থেকেও সে ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া রয়েছে। আর এর মধ্য দিয়েই বিমানবন্দরের নিরাপত্তার দেখভালের দায়িত্ব চলে যাচ্ছে বিদেশি কোম্পানির হাতে। বিমান মন্ত্রণালয় ও বেবিচক সূত্রে জানা গেছে, সমঝোতা স্মারক সই হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ব্রিটিশ কোম্পানি রেডলাইন তার জনবল ঢাকায় নিয়ে আসবে। শাহজালাল বিমানবন্দরের পাশে কাওলায় তাদের আবাসন ব্যবস্থা করা হয়েছে। বিমানবন্দরের বাইরে তারা সার্বক্ষণিক নিরাপত্তা দেবে। সংশ্লিষ্টরা বলছে, ঢাকা থেকে সরাসরি পণ্য পরিবহনে সাময়িক নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার ও বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ঢাকা-লন্ডন রুটকে ঝুঁকিমুক্ত রাখতে সরকার শাহজালালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এমন পদক্ষেপ নিয়েছে। তবে যুক্তরাজ্যের পরামর্শ মেনে নিয়ে ব্রিটিশ প্রতিষ্ঠানকে একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য কাজ দেওয়া এবং ওই প্রতিষ্ঠানের কাজে নজরদারি থাকা জরুরি বলে মনে করছেন আন্তর্জাতিক বিমান চলাচলের নিরাপত্তার সঙ্গে যুক্ত বিশেষজ্ঞরা। সূত্র জানায়, রেডলাইন ও রেস্ট্রাটা নামে দুটি ব্রিটিশ কোম্পানির প্রস্তাবনা নিয়ে বিমান মন্ত্রণালয় ও বেবিচক পর্যালোচনা করে এবং কোম্পানি দুটির প্রতিনিধির সঙ্গে আলোচনা শেষে রেডলাইনকে এগিয়ে রাখা হয়েছে। রেডলাইন বিমানন্দরের নিরাপত্তার পরামর্শক হিসেবে নিয়োগ পেতে পারে। রেডলাইন যেসব প্রস্তাবনা দিয়েছে তার সঙ্গে একমত হয়েছেন বেবিচকের সিনিয়র কর্মকর্তারা। ব্রিটিশ কোম্পানিটি প্রথমে ৬ মাসের পরিকল্পনা নিয়ে কাজ শুরু করলেও পরে ১২ মাসের জন্য চুক্তির মেয়াদ বাড়ানো হতে পারে। বেবিচকের পক্ষ থেকে এই প্রস্তাবনা চূড়ান্ত করা হয়েছে, যা আজ বিমানমন্ত্রীর নেতৃত্বে সরকারের উচ্চপর্যায়ের স্টিয়ারিং কমিটির বৈঠকে উত্থাপন করা হবে। কমিটি চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেওয়ার পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে অনুমোদন নেওয়া হবে এবং পরদিন রবিবার ব্রিটিশ কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি সই করা হবে। একই সঙ্গে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ একটি কারিগরি প্রকল্প প্রস্তাবনা (টিপিপি) প্রণয়ন চূড়ান্ত করছে, যার মাধ্যমে ব্রিটিশ কোম্পানিকে নিয়োগ দেওয়া হবে। বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন গত বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের বলেন, বিদেশি পরামর্শক প্রতিষ্ঠান নিয়োগ দেওয়া হলেও মূল নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা থাকবে বাংলাদেশের কাছে। এ ক্ষেত্রে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না। বিমানবন্দরের কার্যক্রম এবং নিরাপত্তার বিষয়ে ভবিষ্যতে যাতে কেউ প্রশ্ন তুলতে না পারে, সেদিকে লক্ষ্য রেখেই আমরা কাজ করে যাচ্ছি। প্রসঙ্গত, গত ৮ মার্চ নিরাপত্তার ঘাটতির অজুহাতে ঢাকা থেকে সরাসরি কার্গো বিমান চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি করে যুক্তরাজ্য। একই দিন যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেওয়া এক চিঠিতে জানিয়েছেন, ৩১ মার্চ দুদেশের সম্মত কর্মপরিকল্পনা অনুযায়ী নিরাপত্তা জোরদারের কাজ শুরু না হলে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের যুক্তরাজ্যগামী সরাসরি ফ্লাইট নিষেধাজ্ঞায় পড়তে পারে। যুক্তরাজ্যের কঠোর পদক্ষেপের পর নড়েচড়ে বসে বাংলাদেশ সরকার।

সর্বশেষ খবর