শিরোনাম
শনিবার, ১৯ মার্চ, ২০১৬ ০০:০০ টা

জোহাকে নিয়ে যত রহস্য

নিজস্ব প্রতিবেদক

জোহাকে নিয়ে যত রহস্য

তথ্যপ্রযুক্তিবিদ তানভীর হাসান জোহার নিখোঁজ হওয়া নিয়ে রহস্য ঘনীভূত হয়েছে। বিভিন্ন সময় আইসিটি মন্ত্রণালয়সহ বিভিন্ন আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সঙ্গে জোহা কাজ করলেও এখন কেউই আনুষ্ঠানিকভাবে তার দায় নিতে চাইছে না। এ ঘটনা নিয়ে রীতিমতো গোলক-ধাঁধায় পড়েছেন আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যরাও।

জোহার পরিবারেও গভীর উৎকণ্ঠার সৃষ্টি  হয়েছে। একমাত্র ছেলের চিন্তায় গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েছেন তার মা মাকসুদা হাসান। চাঞ্চল্যকর এ ঘটনায় পুলিশও কোনো সাধারণ ডায়েরি (জিডি) না নেওয়ায় তাদের উদ্বেগের মাত্রা আরও বেড়ে গেছে। ঢাকা মহানগর পুলিশের উপকমিশনার (মিডিয়া) মারুফ হাসান সরদার বলেন, ‘ঘটনাস্থল চিহ্নিত করার পরই এ ঘটনায় জিডি নেবে থানা পুলিশ। তবে আমরা যতদূর জানতে পেরেছি ঘটনাটি ভাসানটেক থানা এলাকায়ই ঘটেছিল। ওই থানায় তারা যাননি। জোহাকে উদ্ধারের বিষয়ে আমরা কাজ করছি।’ এদিকে স্বামী জোহার সন্ধান চেয়ে তার স্ত্রী ডা. কামরুন নাহার বলেন, ‘বুধবার থেকে একটি মুহূর্তের জন্যও শান্তিতে নেই। আমার শাশুড়ি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। একমাত্র ছেলের চিন্তায় নাওয়া-খাওয়া ছেড়ে দিয়েছেন। জোহা সব সময় সত্য ও ন্যায়ের পক্ষে থেকে দেশের জন্য কাজ করেছেন। প্রশাসনের পক্ষ থেকে তার কাছে তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ে যখনই কোনো সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে, তখনই তিনি তাদের সার্বিকভাবে সহযোগিতা করেছেন।’ জোহা যাতে নিরাপদে ঘরে ফিরতে পারেন, সে জন্য তিনি প্রশাসনের সার্বিক সহযোগিতা কামনা করেন। আক্ষেপ করে তিনি আরও বলেন, ‘এতদিন আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর সঙ্গে কাজ করলেও এখন জোহার ব্যাপারে তাদের নীরবতা আমাদের হতাশ করছে। সত্যিই এটা কখনো কল্পনা করিনি।’ ডা. কামরুন নাহার জানান, বুধবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে জোহার সঙ্গে মোবাইল ফোনে তার সর্বশেষ কথা হয়। জোহা তাকে জানিয়েছিলেন, সিএনজিচালিত অটোরিকশা করে এক বন্ধুকে সঙ্গে নিয়ে বাসায় ফিরছেন। ওই সময় তিনি ক্যান্টনমেন্টের পাশের কচুক্ষেত এলাকায় তাদের অবস্থান বলেও জানান। জোহার সঙ্গে থাকা বন্ধুর নাম ইয়ামির আহমেদ। রাত দেড়টার দিকে ওই বন্ধু তাদের ফোনে জানান, জোহা অপহূত হয়েছেন। এর পরই তারা জোহার অপহূত হওয়ার বিষয়টি অবহিত করে সাধারণ ডায়েরি করতে কলাবাগান থানায় যান। কিন্তু থানা কর্তৃপক্ষ তাদের জানায়, যেহেতু তিনি সর্বশেষ কচুক্ষেত এলাকা থেকে কথা বলেছেন, এ জন্য কাফরুল থানায় সাধারণ ডায়েরি করতে হবে। বৃহস্পতিবার সকালে জোহার চাচা মাহবুবুল আলম সাধারণ ডায়েরি করতে কাফরুল থানায় যান। কাফরুল থানা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে তাদের জানায়, এটি ক্যান্টনমেন্ট থানা এলাকায় পড়েছে। সেখান থেকে ক্যান্টনমেন্ট থানায় যোগাযোগ করা হলে তারা জানান, ঘটনাস্থল ভাসানটেক থানায় পড়েছে। পরে ওই থানায়ও যোগাযোগ করেন মাহবুবুল আলম। সেখান থেকেও বলা হয় ঘটনাস্থল তাদের এলাকায় পড়েনি। প্রসঙ্গত, নিখোঁজ হওয়ার আগেই ‘জোহা ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের কেউ নন’ বলে মন্ত্রণালয় থেকে একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছিল। যদিও জোহা ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের ‘সাইবার নিরাপত্তা বিভাগ’ নামক প্রকল্পের পরিচালক (অপারেশন) ছিলেন। প্রকল্পটি দুই মাস ধরে বন্ধ আছে। তবে সম্প্রতি ৮ কোটি ১০ লাখ ডলার চুরির ঘটনার তদন্তে বাংলাদেশ ব্যাংকে অনুষ্ঠিত একটি বৈঠকে জোহার বক্তব্যের পরই তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হচ্ছে বলে দাবি করেছিলেন জোহা।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর