বুধবার, ২৩ মার্চ, ২০১৬ ০০:০০ টা

পরিবর্তন দরকার ব্যাটিং অর্ডারে

খালেদ মাসুদ পাইলটের কলাম

পরিবর্তন দরকার ব্যাটিং অর্ডারে

তাসকিন আহমেদের নিষেধাজ্ঞা বেশ জোর ধাক্কা দিয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলকে। মানসিকভাবেও বিপর্যস্ত করেছে। অস্ট্রেলিয়ার চেয়ে শক্তির বিচারে পিছিয়ে থাকলেও মাশরাফিদের লড়াই করার মানসিকতা দেখা যায়নি। সোজা বললে, বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের আমার টিম হয়ে লড়তে দেখিনি। জেতার জন্য যে প্রবল মানসিকতা থাকা দরকার ছিল, সেটা দেখা যায়নি মাশরাফিদের মধ্যে। অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে লড়াই করে হারায় অনেকেই বাহ্বা দিতে পারেন মাশরাফিদের। অনেকেই বলতে পারেন বাজে দিন গেছে ক্রিকেটারদের। গত এক বছর ধরে যে মাপের ক্রিকেট খেলছেন, তাতে বাজে দিন বলাই যায়! আমি কিন্তু বাজে দিন বলব না। আমি বলব ক্রিকেটাররাই বাজে দিন তৈরি করেছেন। বাজে ফিল্ডিং, ব্যাটিং অর্ডারে গলদ নিয়ে কি জেতা যায়? বাংলাদেশের ইদানীংকার সাফল্য তামিম ইকবাল, সাব্বির রহমান ও মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের ওপর নির্ভরশীল। অসুস্থতার জন্য তামিম খেলতে পারেননি। তার জায়গায় মোহাম্মদ মিথুনকে খেলানোর বিষয়টি খারাপ হয়নি। তাই বলে মাহমুদুল্লাহকে ৬ নম্বরে ব্যাটিং করানো? টিম ম্যানেজমেন্টের এই হাস্যকর সিদ্ধান্ত আমাকে অবাক করেছে। আরও অবাক হয়েছি মাহমুদুল্লাহর আগে শুভাগত হোমকে ব্যাটিং করতে দেখে। মাহমুদুল্লাহ নিজেকে বারবার প্রমাণ করেছেন। ২৯ বলে ৪৯ রানের অপরাজিত ইনিংস তার প্রমাণ। আমি শুভাগতকে খারাপ ব্যাটসম্যান বলব না। কিন্তু চারদিনের ম্যাচ খেলে উড়ে যাওয়ার পর তাকে নামিয়ে দেওয়াটা আমাকে অবাক করেছে। মুশফিককেও ওপরে ব্যাট করানো উচিত। মাশরাফির দল পরিচালনাটা আমার ভালো লাগেনি। সোমবার ম্যাচে শেষ ৫ ওভারে তিনি ব্যাটিং করলে ভালো হতো। সে অন্য যে কারোর চেয়ে আক্রমণাত্মক ব্যাটিং করেন, এটা প্রমাণিত। মুশফিক ৭ নম্বরে ব্যাট করে ১১ বলে ১৫ রান করেন। সেখানে মাশরাফি নামলে রান আরও বেশি হতো। শুধু ব্যাটিং নয়, মাশরাফির বোলিং নিয়েও আমার প্রশ্ন রয়েছে। আগের দিন আমি বলেছিলাম, অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে মাশরাফিকে আরও দায়িত্ব নিতে হবে। কিন্তু তাকে মাত্র এক ওভার বোলিং করতে দেখে বিস্মিত হয়েছি। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে মাশরাফির নেতৃত্ব ভালো না লাগলেও আমি বলব না, মাশরাফি ভালো অধিনায়ক নন। নিঃসন্দেহে মাশরাফি অনেক ভালো অধিনায়ক। ফিল্ডিং নিয়ে বলব, ক্রিকেটারদের মধ্যে ভালো করার একাগ্রতা ছিল না। ক্যাচ মিস হতেই পারে। কিন্তু দৃষ্টিকটূ ছিল সেসব। মিথুন যে ক্যাচটি মিস করেন, এই লেবেলে এর কোনো ব্যাখ্যা নেই। ওয়াটসনের ক্যাচ মিসের পরই ম্যাচ থেকে ছিটকে পড়ে বাংলাদেশ। আল আমিনের ক্যাচ মিসকে আমি যতটা দোষ দিব, তারচেয়ে বেশি দোষ দিব তাকে সেখানে দাঁড়ান করানোয়। খেয়াল করলে দেখবেন, সব দলের সেরা ফিল্ডাররা কাভারে দাঁড়ায়। অথচ আমাদের দাঁড়িয়েছিলেন আল আমিন। তারপরও আমি মনে করি তার ক্যাচটি ধরা উচিত ছিল। পাকিস্তান ও অস্ট্রেলিয়ার কাছে হেরে দৃশ্যত বাংলাদেশের টি-২০ বিশ্বকাপ শেষ বলাই যায়। ভারত ও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে দুটি ম্যাচে পরিকল্পিত ক্রিকেট খেলা উচিত। ভারত অনেক শক্তিশালী প্রতিপক্ষ। দলটি ফর্মেও রয়েছে। এই দলটির বিপক্ষে জিততে ব্যাটিং, বোলিং ও ফিল্ডিং-তিন বিভাগেই সর্বোচ্চ ভালোটা করতে হবে। ব্যাটিং অর্ডারে পরিবর্তন আনা উচিত। তামিম-সৌম্য ওপেন করার পর ওয়ান ডাউনে সাব্বির এবং এরপর সাকিব, মাহমুদুল্লাহর ব্যাটিং অর্ডার থাকা উচিত। তবে মুশফিককে চারে ব্যাটিং করালে ভালো হবে। মাহমুদুল্লাহ সেরা ব্যাটসম্যান, তাকে প্রয়োজনে চারেও ব্যাটিং করাতে পারে, যদি বল কম থাকে। আরেকটি বিষয় ভারতকে সমীহ করলেও মনে সাহস রাখতে হবে মাশরাফিদের। তাহলেই ভালো করা সম্ভব।

সর্বশেষ খবর